খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (কুয়েট) সংগঠিত সংঘর্ষের ঘটনায় শুক্রবার (২১ ফেব্রুয়ারি) কুয়েট শিক্ষক সমিতি একটি বিবৃতি প্রদান করেছেন।
সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মোঃ সাইদুর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. মোঃ ফারুক হোসেন স্বাক্ষরিত সংবাদ মাধ্যমের কাছে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়, ১৮ ফেব্রুয়ারি খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) ক্যাম্পাসে বহিরাগত সন্ত্রাসী কর্তৃক ধারালো অস্ত্র নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের নির্মমভাবে আহত করার ঘটনায় শিক্ষক সমিতি তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করছে। একই সাথে কিছু শিক্ষার্থী কর্তৃক ভাইস- চ্যান্সেলরসহ কয়েকজন শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করা ও শিক্ষকবৃন্দের সাথে অশোভন আচরণ করার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
বিবৃতিতে শিক্ষক সমিতি উল্লেখ করেন, দায়িত্ব পালনের অবহেলা বা ব্যর্থতার অভিযোগে একজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করা কোন পরিস্থিতিতেই শিক্ষকবৃন্দ মেনে নেবে না। এহেন ঘৃন্য আচরণ কুয়েটের সাধারণ শিক্ষার্থীদের সংঘটিত হওয়া কোনভাবেই সম্ভব নয় এবং এর নেপথ্যে কুচক্রী, স্বার্থান্বেষী মহল তথা বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের চক্রান্ত জড়িত রয়েছে। ক্যাম্পাসে উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহযোগিতা চাওয়ার পরও যথাসময়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সহযোগিতা না করার তীব্র নিন্দা ও ক্ষোভ প্রকাশ করা হয়।
সেই সাথে শিক্ষক শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সকলের নিরাপত্তা জনিত আশঙ্কার কথা ব্যক্ত করে কুয়েট শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কাছে এহেন অসহযোগিতার বিষয়ে অস্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করেন।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক সমিতি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সকলের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে বিষয়টি অবহিত করে প্রয়োজনীয় সাহায্যের দাবি জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক সমিতি আরো উল্লেখ করেন, জুলাই অভ্যুত্থানের পর বিগত ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে ক্যাম্পাসে সৃষ্ট অরাজকতা কাটিয়ে উঠতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের সাথে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকবৃন্দ যখন একযোগে কাজ করছে তখন এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সুযোগ নিয়ে ফ্যাসিস্টের দোসররা উস্কানিমূলক কাজ করে যাচ্ছে।
“রাজনীতি মুক্ত কুয়েট ক্যাম্পাস” সংক্রান্ত কুয়েট আইন-২০০৩ এবং সিন্ডিকেট কর্তৃক গৃহীত সিদ্ধান্ত লঙ্ঘনকারীদের অনতিবিলম্বে শাস্তির আওতায় আনার জোর দাবি জানানো হয়। এছাড়া শিক্ষার্থীদের আহত করা, ভাইস-চ্যান্সেল, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলরসহ কয়েকজন শিক্ষককে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করা তথা সাম্প্রতিক সকল ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত দোষীদের অবিলম্বে খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদানের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে জোর দাবি জানান।
বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষক সমিতি আরো উল্লেখ করেন, রাষ্ট্রীয় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর অসহযোগিতার কারণে সৃষ্ট পরিস্থিতির দায়ভার পুরোপুরি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উপর চাপানো এবং এর প্রতিক্রিয়ায় সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দের সহিত ও শিক্ষার্থীদের অসৌজন্য মূলক আচরণ ও মব জাস্টিসের মাধ্যমে ভাইস-চ্যান্সেলর, প্রো-ভাইস চ্যান্সেলর ও ছাত্রকল্যাণ পরিচালকের পদত্যাগে বাধ্য করার অপচেষ্টা ক্যাম্পাসের শিক্ষার স্বাভাবিক পরিবেশ ব্যাহত করবে বলে শিক্ষক সমিতি মনে করেন।
খুলনা গেজেট/লিপু/ হিমালয়