মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পুরাতন মাওয়া ফেরিঘাট থেকে স্বামীর বাড়ির উদ্দেশে ট্রলারে ওঠেন এক গৃহবধূ (২২)। পথিমধ্যে তিনি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হন। এ ঘটনায় করা মামলার ভিত্তিতে পদ্মা সেতু উত্তর থানা পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দির পর তাদের কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২০ ফেব্রুয়ারি) রাতে মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে।
গ্রেপ্তাররা হলেন—মো. জামাল মোল্লা (২৩), ইয়ামিন মুন্সী (১৯) ও জব্বার শেখ (১৮)।
পুলিশ জানায়, গত রোববার (১৭ ফেব্রুয়ারি) ভুক্তভোগী গৃহবধূ তার স্বামীসহ পদ্মা সেতু (উত্তর) থানায় হাজির হয়ে অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি জানান, চারজন যুবক তাকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেছে। অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে, প্রাথমিক তদন্তের পর মামলা নেয় এবং আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু করে।
পরদিন সোমবার পদ্মা নদীর তীর থেকে আসামি জামাল মোল্লাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে পরবর্তী অভিযানে ইয়ামিন ও জব্বারকেও আটক করা হয়।
মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মদ শামসুল আলম সরকার জানান, জিজ্ঞাসাবাদ ও আদালতে দেওয়া জবানবন্দিতে গ্রেপ্তার তিনজন অপরাধের দায় স্বীকার করেছে। তদন্তে উঠে এসেছে, ঘটনার দিন গৃহবধূ মাওয়া ফেরিঘাটে নৌকার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় আবু বকর সিদ্দিক ও জামাল মোল্লা তাকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে ট্রলারে তোলে। পরে ট্রলারে যোগ দেয় ইয়ামিন ও জব্বার। সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জনমানবহীন ডোমরাখালী চরে নিয়ে গিয়ে চারজন মিলে গৃহবধূকে ধর্ষণ করে।
এরপর রাত আনুমানিক ৯টার দিকে আসামিরা মাওয়া পুরাতন কোস্টগার্ড স্টেশনের কাছে ভুক্তভোগীকে নামিয়ে দিয়ে কাউকে কিছু না বলার হুমকি দিয়ে সরে যায়।
পুলিশ সুপার আরও জানান, মামলার অন্যতম আসামি আবু বকর সিদ্দিক এখনো পলাতক। গ্রেপ্তারকৃত তিনজন ফৌজদারি কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে। এ ঘটনায় ব্যবহৃত ট্রলার এবং আলামত হিসেবে একটি জিও ব্যাগ জব্দ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভুক্তভোগীর ডাক্তারি পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে এবং তার ব্যবহৃত পোশাকও সংগ্রহ করা হয়েছে।
মামলার তদন্ত কার্যক্রম চলছে এবং পলাতক আসামিকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
খুলনা গেজেট/এনএম