গাজায় যুদ্ধবিরতির শর্ত মানছে না ইসরাইল- এমন অভিযোগের ভিত্তিতে জিম্মি মুক্তি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। সংগঠনটির সশস্ত্র শাখার মুখপাত্র আবু ওবাইদা এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করায় ইসরাইলি জিম্মিদের পরবর্তী নির্ধারিত মুক্তি স্থগিত করা হবে। এ খবর দিয়েছে অনলাইন বিবিসি।
এতে বলা হয়, ইসরাইলে কারাবন্দি ফিলিস্তিনিদের বিনিময়ে আগামী শনিবার আরও তিন জিম্মির মুক্তি দেয়ার কথা রয়েছে। যা স্থগিত করার কথা জানালো হামাস।
ইসরাইলকে গাজার উত্তরে বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনিদের প্রত্যাবর্তনে বিলম্ব, মানুষের ওপর নির্বিচারে গুলি চালানো এবং সম্মত মানবিক সহায়তা প্রদানে ব্যর্থতার অভিযোগ করেছে হামাস। তাদের দাবি এর মাধ্যমে স্পষ্টত ইসরাইল যুদ্ধবিরতির চুক্তি লঙ্ঘন করছে।
এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ। জিম্মি মুক্তি স্থগিতের সিদ্ধান্ত যুদ্ধবিরতির সুস্পষ্ট লঙ্ঘন বলে অভিহিত করেছেন তিনি।
এদিকে ইসরাইলের প্রধান মিত্র মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি মনে করেন গাজায় আটক ‘সকল’ জিম্মিকে আগামী শনিবারের মধ্যে মুক্তি না দিলে যুদ্ধবিরতি বাতিল করা উচিত। শনিবার দুপুর ১২টার মধ্যে জিম্মিদের মুক্তি দেয়ার কথা বলেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, আমি বলবো শনিবার ১২টার মধ্যে তাদের (জিম্মি) ফেরত দেয়া উচিত… সবাইকে, অল্প অল্প করে নয়। দুই, এক, তিন, চার করে নয়। এই দাবি একান্তই ট্রাম্পের নিজের বলে উল্লেখ করেছেন তিনি। ইসরাইল চাইলে এই প্রস্তাব অমান্য করতে পারে বলেও উল্লেখ করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ৭৩ জনকে জিম্মি করে গাজায় নিয়ে আসে হামাস। এছাড়া এক দশক আগে আরও তিন জনকে জিম্মি করা হয়েছে, যারা এখনও গাজায় আটক রয়েছেন। যদি সকল জিম্মি মুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করা না হয় তাহলে গাজায় ‘জাহান্নামের’ ক্রোধ নেমে আসবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ট্রাম্প। এর মাধ্যমে কি গাজায় ইসরাইলের প্রতিশোধ নেয়ার বিষয়ে ইঙ্গিত দিচ্ছেন, তা জানতে চাইলে ট্রাম্প বলেন- আপনি জানতে পারবেন এবং তারাও জানতে পারবে। হামাস বুঝতে পারবে আমি কী বলতে চাইছি।
এদিকে ট্রাম্পের এই হুঁশিয়ারির পর ইসরাইল ডিফেন্স ফোর্সের সদস্যদের সর্বোচ্চ স্তরের সতর্কতা নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইসরায়েল কাৎজ বলেন, গাজার যেকোনো সম্ভাব্য পরিস্থিতি জন্য প্রতিরক্ষা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। কোনোভাবেই ৭ অক্টোবরের পুনরাবৃত্তি সহ্য করা হবে না বলেও হুঁশিয়ারি দেন কাৎজ। তবে ইসরাইল যদি যুদ্ধবিরতির বাধ্যবাধকতা পালন করে তাহলে শনিবার জিম্মি বিনিময়ের দরজা খোলা থাকবে।
খুলনা গেজেট/এনএম