খুলনা, বাংলাদেশ | ২০ মাঘ, ১৪৩১ | ৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  কুয়েট ছাত্রলীগের সাবেক সম্পাদক সেজানসহ ১০ ছাত্রকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আজীবন বহিষ্কার
  ময়মনসিংহে নিখোঁজের এক সপ্তাহ পর শিশুর বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার
  মাদারীপুরে এক্সপ্রেসওয়েতে বাসচাপায় পিকআপচালক ও হেলপার নিহত
দুই যুবকের আদালতে স্বীকারোক্তি

হাত-পা বেঁধে স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের পর হত্যা, লাশ হাতিরঝিলে

গেজেট ডেস্ক

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পরিচয়। এরপর প্রেমের ফাঁদ। তারপর রাজধানীর দক্ষিণখান থেকে কিশোরীকে মহাখালীতে এনে হাত-পা ও মুখ বেঁধে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। পরে রাতের আঁধারে লাশ ফেলে দেওয়া হয় হাতিরঝিলে। ঘটনার ১৬ দিন পর রোববার ওই কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এর আগে এ ঘটনায় দুই যুবককে গ্রেপ্তার করে দক্ষিণখান থানা পুলিশ। রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে তারা হত্যাকাণ্ডের বিষয়ে মুখ খুলে। পরে রোববার সন্ধ্যায় আদালতে ১৬৪ ধারায় লোমহর্ষক স্বীকারোক্তি দিয়েছে। এদিকে এ ঘটনার বিস্তারিত জানাতে আজ বেলা ১১টায় মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিং করবে পুলিশ।

দক্ষিণখান থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ তাইফুর রহমান মির্জা রাতে জানান, অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ওই কিশোরী ১৬ জানুয়ারি মা-বাবার কাছে কেনাকাটার কথা বলে বাসার বাইরে যায়। এরপর সে আর বাসায় ফিরেনি। সম্ভাব্য বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করেও তার হদিস পাওয়া যায়নি। পরে ১৯ জানুয়ারি ওই কিশোরীর বাবা দক্ষিণখান থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে ২৭ জানুয়ারি একটি মামলা করেন তিনি। এরপর কিশোরীটির মোবাইল ফোন নম্বরের সূত্র ধরে ৩০ জানুয়ারি রবিন নামের এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয় গাজীপুর থেকে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে রাব্বি মৃধা নামের আরও এক যুবককে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের দুদিনের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ধর্ষণ ও হত্যার কথা স্বীকার করে। পরে রোববার আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে রবিন ও রাব্বি মৃধা।

রবিন জানিয়েছে কিশোরীটিকে ‘ফাঁদে ফেলে’ সেদিন দুপুরে মহাখালীর একটি বাসায় নিয়ে যায়। এরপর তার হাত-পা ও মুখ বেঁধে পাঁচজন মিলে ধর্ষণ করে। একপর্যায়ে কিশোরীটি অচেতন হয়ে পড়ে। পরে কিশোরীটিকে হত্যা করে লাশ গুমের পরিকল্পনা করে তারা। লাশ বস্তাবন্দি করে মধ্যরাতে মহাখালী থেকে রিকশায় হাতিরঝিলে পুলিশ প্লাজার সামনের সেতুতে নিয়ে নিচে ফেলে দেয়।

ওসি বলেন, গ্রেপ্তার রাব্বি ও রবিনের দেওয়া তথ্যের সূত্র ধরে খুবই গোপনীয়তার সঙ্গে রোববার হাতিরঝিল থেকে ওই কিশোরীর লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপর ময়নাতদন্তের জন্য সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠানো হয়েছে। রোববার সন্ধ্যায় তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

তিনি আরও বলেন, তদন্তের শুরুতে আমরা কিশোরীর ফোনকলের বিস্তারিত জোগাড় করি। সেখানে একটি সন্দেহজনক নম্বর পাই। সেটিই ছিল রবিনের মোবাইল নম্বর। এই ফোনের কললিস্ট পর্যালোচনায় দেখা যায় রবিনের সঙ্গে ওইদিনই প্রথম কথা হয় তার। মোবাইল ফোনের সূত্র ধরে মহাখালীর একটি বাসার সন্ধানও পাওয়া যায়।

ডিএমপির সহকারী কমিশনার (দক্ষিণখান জোন) মো. নাসিম এ-গুলশান জানান, আসামিদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, রবিন পেশায় একজন গাড়িচালক। রাব্বি মৃধাও নির্দিষ্ট কিছু করে না। অভিযুক্ত অন্য তিনজনও রবিনের পূর্বপরিচিত।

কিশোরীর বাবা রাতে বলেন, আমার যে মেয়েটি স্কুলে যেত, বন্ধুদের সঙ্গে খেলাধুলা করত, আজ সে লাশ হয়েছে। যারা আমার মেয়েকে নৃশংসভাবে হত্যা করেছে। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

তিনি জানান, ময়নাতদন্ত শেষে রাতেই কিশোরীর দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!