শুরুর তিন ম্যাচের তিনটিতেই হার, অবশেষে নিজেদের চতুর্থ ম্যাচে গত শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) ঢাকা ক্যাপিটালসকে হারিয়ে প্রথম জয়ের দেখা পায় সিলেট স্ট্রাইকার্স। রোববার (১২ জানুয়ারি) নিজেদের পঞ্চম ম্যাচে খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষেও দারুণ এক জয় তুলে নেয় সিলেট। টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে রনি তালুকদার ও জাকির হাসানের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ১৮২ রান তুলে তারা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে ১৭৪ রানেই থামে খুলনার ইনিংস। আর তাতেই ৮ রানের জয় পায় সিলেট।
শুরুর তিন ম্যাচে হেরে পয়েন্ট টেবিলে খুব একটা ভালো অবস্থানে ছিল না সিলেট স্ট্রাইকার্স। তবে সবশেষ দুই ম্যাচের দুটিতেই জয় তুলে নিয়েছে তারা। পাঁচ ম্যাচে দুই জয়ে তাদের পয়েন্ট এখন চার।
১৮৩ রানের জয়ের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা দেখেশুনেই করেছিলেন দুই ওপেনার উইলিয়াম বোসিস্টো ও মোহাম্মদ নাঈম। কিন্তু চতুর্থ ওভারের প্রথম বলেই নাঈমকে বোল্ড করেন নাহিদুল ইসলাম। দলীয় ১৭ রানেই প্রথম উইকেট হারায় খুলনা।
এ দিন উইকেটে থিতু হতে পারেননি বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ইমরুল কায়েস। ৩ বলে ২ রান করেই সাজঘরে ফেরেন তিনি। পঞ্চম ওভারের প্রথম বলেই তানজিম হাসানকে উড়িয়ে মারতে গিয়ে পয়েন্টে রনি তালুকদারের হাতে ধরা পড়েন ইমরুল।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে রাসুলিকে নিয়ে এগোনোর চেষ্টা করেন উইলিয়াম বোসিস্টো। কিন্তু দারউইস রাসুলিকে থামান রিস টপলি। আউট হওয়ার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৮ বলে ১৫ রান।
অধিনায়ক মেহেদী হাসান মিরাজও এ দিন সুবিধা করতে পারেননি। পাঁচ নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমে ১৪ বল খেলে ১৫ রান করেই আউট হন তিনি। ওপেনার উইলিয়াম বোসিস্টো অবশ্য এক প্রান্ত আগলে রেখে এগোচ্ছিলেন, তবে রিস টপলি তাকে থামিয়ে দেন। ৪০ বলে ৪৩ রান করে অ্যারন জোন্সের ক্যাচ হয়ে ফেরেন তিনি।
শেষদিকে চেষ্টা করেছেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। তবে তিনিও পারেননি, ১৮ বলে ৩৩ রান করে তানজিম সাকিবের বলে গালিতে জাকির হাসানের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। ৫ বলে ৪ রান করা জিয়াউর রহমান কাটা পড়েন রানআউটে।
শেষ পর্যন্ত চেষ্টা করেও দলকে জেতাতে পারেননি মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন ও আবু হায়দার রনি। শেষ ওভারে ১৬ বলে ২৮ রান করে রানআউট হয়ে প্যাভিলিয়নে ফেরেন অঙ্কন। নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেট হারিয়ে খুলনা টাইগার্সের ইনিংস থামে ১৭৪ রানে। আর তাতেই ৮ রানের জয় পায় সিলেট। সিলেটের হয়ে তানজিম সাকিব, রিস টপলি ও রুয়েল মিয়া নেন দুটি করে উইকেট। নাহিদুল ইসলাম নিয়েছেন এক উইকেট।
এর আগে সিলেট আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে টসে হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে শুরুতেই উইকেট হারায় সিলেট। স্কোরবোর্ডে ৭ রান যোগ হতেই ওপেনার রাকিম কর্নওয়ালকে হারায় তারা। ৫ বলে ৪ রান করা এই ওপেনারকে বোল্ড আউট করে সাজঘরে ফেরান আবু হায়দার রনি।
দলীয় ১৫ রানের মাথায় আরও একটি উইকেট হারায় সিলেট। এবার জর্জ মুনসেকে বোল্ড করেন নাসুম আহমেদ। ফেরার আগে তার ব্যাট থেকে আসে ৭ বলে ২ রান। এরপর দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার রনি তালুকদার। তার সঙ্গে যোগ দেন জাকির হাসান। দুজনে মিলে ৬২ বলে ১০৬ রানের জুটি গড়েন।
দলীয় ১২১ রানের মাথায় তৃতীয় উইকেট হারায় সিলেট। ৪৪ বলে ৫৬ রান করা রনিকে জিয়াউর রহমানের ক্যাচ বানান আবু হায়দার। রনি তালুকদার ফিরলেও থামেননি জাকির হাসান। এক প্রান্ত আগলে রেখে প্রতিপক্ষের বোলারদের একাই শাসন করেছেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪৬ বলে ৭৫ রানে অপরাজিত থাকেন জাকির হাসান।
মাঝে অ্যরন জোন্স ব্যাটিংয়ে নেমে ঝোড়ো শুরুর আভাস দিয়েছিলেন ঠিকই। তবে ৬ বলের বেশি তিনি টিকতে পারেননি। আর এই ৬ বলেই ছক্কা হাঁকিয়েছেন তিনটি। ২০ রান করা এই ব্যাটারকে সাজঘরে ফেরায় জিয়াউর রহমান। উইকেটের পেছন থেকে দারুণ একটি ক্যাচ লুফে নেন মাহিদুল ইসলাম অঙ্কন। কিন্তু জাকের আলী অনিক এ দিন ছিলেন ফ্লপ। গোল্ডেন ডাক মেরে সাজঘরে ফেরেন তিনি। খুলনা টাইগার্সের হয়ে আবু হায়দার ও জিয়াউর রহমান নেন দুটি করে উইকেট। এছাড়া নাসুম আহমেদ নিয়েছেন ১ উইকেট।
খুলনা গেজেট/এএজে