গাজায় ফিলিস্তিনি প্রতিরোধ আন্দোলন হামাসের সঙ্গে লড়াইয়ে চার ইসরাইলি সেনা নিহত হয়েছেন। এছাড়া আহত হয়েছেন আরও ছয় ইসরাইলি সেনা।
শনিবার (১১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে টাইমস অব ইসরাইল।
ইসরাইলি প্রতিরক্ষা বাহিনী (আইডিএফ) জানিয়েছে, হামাসের বিরুদ্ধে স্থল অভিযানে নিহত ইসরাইলি সেনাদের সংখ্যা এখন ৪০২-এ পৌঁছেছে।
নিহত চার সেনা হলেন, সার্জেন্ট মেজর (রিজার্ভ) আলেকজান্ডার ফেডোরেঙ্কো (৩৭), স্টাফ সার্জেন্ট দানিলা দিয়াকভ (২১), সার্জেন্ট ইয়াহাভ মায়ান (১৯) এবং সার্জেন্ট এলিয়াভ আস্তুকার (১৯)। আহত ছয়জনের মধ্যে দুজনের অবস্থা গুরুতর বলে জানানো হয়েছে।
প্রাথমিক তদন্তে আইডিএফ জানিয়েছে, উত্তর গাজার বেইত হানুনে টহল সেনারদের ওপর বিস্ফোরক যন্ত্রের মাধ্যমে লক্ষ্যবস্তু করা হয়। হামাসের বন্দুকধারীরা সেখানে আগে সক্রিয় ছিল এবং ওই সময় ইসরাইলি সেনাদের ওপর গুলি চালায়।
গত অক্টোবর থেকে গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি হামলার নতুন কেন্দ্রবিন্দু উত্তর প্রান্তে। যেখানে হামাসের বিরুদ্ধে আইডিএফ সম্প্রতি তাদের অভিযান আরও তীব্র করেছে। জাবালিয়া ও বেইত লাহিয়া এলাকার পর ইসরাইলি সেনারা বর্তমানে বেইত হানুন এলাকায় অভিযান চালাচ্ছে।
ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সামাজিকমাধ্যম এক্সে নিহত সেনাদের শ্রদ্ধা জানিয়ে লিখেছেন, তারা (সেনারা) উত্তর গাজা উপত্যকার যুদ্ধে আমাদের অস্তিত্ব ও নিরাপত্তার জন্য মাতৃভূমি রক্ষা করতে গিয়ে জীবন দিয়েছেন। তাদের বীরত্ব এবং সাহসিকতা চিরদিন আমাদের হৃদয়ে অঙ্কিত থাকবে।
এর আগে গত বুধবার হামাসের সঙ্গে লড়াইয়ে উত্তর গাজায় তিনজন ইসরাইলি সেনা নিহত হন। বেইত হানুনে অভিযান চলাকালে সেনাদের ট্যাংকের ওপর বিস্ফোরক যন্ত্র ব্যবহার করে হামলা চালায় হামাস। সবমিলিয়ে মাত্র একসপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় দফায় প্রাণহানি দেখল ইসরাইল।
হামাস পরিচালিত গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত সংঘর্ষে গাজা উপত্যকায় ৪৬,০০০ এর বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় ১ লাখ ১০ হাজার আহত হয়েছে। তবে মেডিকেল জার্নাল ল্যানসেটের গবেষণা বলছে, গাজায় নিহতের সংখ্যা কমিয়ে দেখানো হয়েছে। প্রকৃত সংখ্যা বর্তমান সংখ্যার চেয়ে অন্তত ৪০ শতাংশ বেশি।
ইসরাইল বলেছে, তারা নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১৮,০০০ হামাস যোদ্ধা এবং ৭ অক্টোবর ইসরাইলের ভেতরে আরও ১,০০০ যোদ্ধাকে হত্যা করেছে।
ইসরাইলের দাবি, তারা বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা কমাতে চেষ্টা করছে এবং হামাস গাজার বেসামরিক নাগরিকদের মানবঢাল হিসেবে ব্যবহার করে, ঘরবাড়ি, হাসপাতাল, স্কুল এবং মসজিদের মতো বেসামরিক এলাকায় যুদ্ধ করছে।
সাম্প্রতিক সময়ে গাজায় যুদ্ধবিরতি এবং জিম্মি মুক্তির জন্য আলোচনার গতি বেড়েছে বলে জানিয়েছে বিভিন্ন সূত্র। গত শনিবার নেতানিয়াহু জানান, অগ্রগতি অর্জনের লক্ষ্যে শীর্ষস্থানীয় আলোচকদের কাতারে পাঠানো হচ্ছে।
খুলনা গেজেট/এনএম