বাংলাদেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পটপরিবর্তনে পেছনে থাকার অভিযোগ অস্বীকার করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এ ধরনের অভিযোগকে অবিশ্বাস্য বলে অভিহিত করেছেন দেশটির জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান। তিনি দাবি করেছেন, বাংলাদেশের ঘটনাবলীর পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো ভূমিকা ছিল বলে ভারতের শীর্ষ কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন না।
শুক্রবার (১০ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে গত কয়েকমাস ধরে আওয়ামীলীগ সরকার পতনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের ভূমিকাকে দায়ী করে খবর প্রচার করা হয়। যেখানে দাবি করা হয়, বাইডেন প্রশাসন বাংলাদেশের উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতিতে হস্তক্ষেপ করেছে। আর এতে ঢাকায় নয়াদিল্লির দীর্ঘদিনের মিত্র শেখ হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে।
ভারত সফররত জ্যাক সুলিভান বলেছেন, ‘বাংলাদেশে গণঅভ্যুত্থান ও সরকার পতনের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল বলে যে অভিযোগ, তা অযৌক্তিক। ভারতও এ ধরনের অভিযোগ বিশ্বাস করে না।’
শুক্রবার সকালে হোয়াইট হাউজের রুজভেল্ট রুমে একটি নির্বাচিত সাংবাদিকদের দলের সঙ্গে কথা বলতে গিয়ে সুলিভান, যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্ককে বাইডেন প্রশাসনের একটি বিশেষ অর্জন হিসেবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলেন, উভয় পক্ষের মধ্যে বিশ্বাসের উন্নতি এবং একে অপরের মধ্যে কৌশলগত বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট (পররাষ্ট্র দপ্তর) ও ডিপ স্টেট (সমান্তরাল রাষ্ট্র), একদল অনুসন্ধানী সাংবাদিক এবং বিরোধীদলীয় নেতা রাহুল গান্ধী মিলে ভারতকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে। গত ডিসেম্বরের শুরুতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) পক্ষ থেকে এমন অভিযোগ করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসরত খালিস্তানপন্থী শিখ নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুনকে হত্যােষ্টা ভারতকে অভিযুক্ত, শিল্পপতি গৌতম আদানির বিরুদ্ধে অভিযোগ, বাংলাদেশের ক্ষমতার পরিবর্তন এসবের পেছনের ঘটনা হিসেবে সামনে আনা হয়।
সুলিভান জবাবে বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ডিপ স্টেটের নেতৃত্ব দিচ্ছে এমন ধারণা আমি বিনয়ের সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করছি। বাংলাদেশে সরকার উৎখাতের পেছনে যুক্তরাষ্ট্রের হাত ছিল এমন অভিযোগও অযেৌক্তিক। আমি ভারতের উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে আমি এটুকু বুঝেছি, তারাও এ ধরনের অভিযোগ বিশ্বাস করেন না।’
তবে তিনি এটা স্বীকার করে বলেন, ‘একজন ভারতীয় কর্মকর্তার বিরুদ্ধে একজন মার্কিন নাগরিককে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ উঠেছে। স্বীকার করতে অসুবিধা নেই যে এ ধরনের অভিযোগ ওঠার পর যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের সম্পর্ক কিছুটা শিথিল হয়েছে।’
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন আসার পর ভারতে মার্কিন বিনিয়োগ এবং সহযোগিতার প্রচেষ্টা ব্যাহত হতে পারে এমন উদ্বেগ রয়েছে নয়াদিল্লির। তবে সুলিভানের বিশ্বাস, মেক ইন ইন্ডিয়াএবং মেড ইন আমেরিকা একে অপরের পরিপূরক।
এ নিয়ে সুলিভান বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র ও ভারত যে কৌশলগত বিনিয়োগ করেছিল, তাতে পরিবর্তন এসেছে। আগামীতে ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন ক্ষমতায় এলেও প্রতিরক্ষা বিষয়ক দুই দেশের সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে বলে বিশ্বাস করি।’
খুলনা গেজেট/এনএম