খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ পৌষ, ১৪৩১ | ২৮ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে এক জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ১০৪
  বগুড়ায় ট্রাকচাপায় বাবা-মেয়েসহ নিহত ৩
  আগামী বিজয় দিবসের আগে জুলাই গণহত্যার বিচার সম্পন্ন করা হবে : আসিফ নজরুল

থাম‌ছে না শাকবাড়িয়া নদী থেকে বালু উত্তোলন, হুমকিতে বেঁড়িবাঁধ ও ফসলি জমি

তরিকুল ইসলাম

খুলনা জেলার কয়রা উপ‌জেলার নদী ও খাল থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন ব্যাপক হারে বে‌ড়ে‌ছে। সুন্দরবন সংলগ্ন এ উপজেলায় শাকবাড়িয়া নদী থেকে নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হ‌চ্ছে। সরকারি কোন বালুমহাল না থাকলেও এমবি মা বাবার দোয়া নামের একটি কার্গো জাহাজ নদীতে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করছে। যার ফলে হুমকির মধ্যে পড়েছে নদী রক্ষা বাঁধ ও ফসলি জমি।

প্রশাসনের নাকের ডগায় ৪-৫টি স্থানে ড্রেজার মেশিন বসিয়ে বালু উত্তোলন করা হলেও যেন দেখার কেউ নেই। ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন নদী তীরবর্তী এলাকাবাসী। পরিবেশগত বিপর্যয়ের পাশাপাশি স্থানীয় জনগণের জীবিকা ও নিরাপত্তাকেও হুমকির মুখে ফেলেছে।

খোঁজ নিয়ে যানা গেছে, উপজেলার কয়রা ও বেদকাশী ইউনিয়নের ৪নং কয়রা, ৬নং কয়রা কেওড়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র এলাকা, কাটকাটা, হরিহরপুর, নামক স্থানে নদীতে কোনো চর না থাকলেও ড্রেজার মেশিন বসিয়ে রাতের আঁধারে দেদারসে বালু উত্তোলন ও বিক্রয় করা হচ্ছে। পরে সেই বালু আবার বস্তায় (জিও ব্যাগ) ভরে নদীতে বিভিন্ন স্থানে ফেলাসহ অনেক স্থাপনায় ভরাটের কাজে ফেলা হচ্ছে। খনন করে বালু উত্তোলনের বিষয়ে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও ইজারাদাররা তা কো ভাবেই মানছেন না।

কেওড়াকাটা পর্যটন এলাকাসহ বাঁধের কাছ থেকে বালু খনন করার কারণে ঝুঁকির মধ্যে পড়েছে এলাকার নদী রক্ষা বাঁধ।

শাকবাড়িয়া নদী তীরবর্তী স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, কেওড়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র এলাকা সংলগ্ন শাকবাড়িয়া নদী থেকে অবৈধ বালু তোলা হচ্ছে যেটা পর্যটন এলাকার জন্য প্রভাব পড়বে। তবে ভাঙন কবলিত এসব স্থান থেকে বালু উত্তলন বন্ধে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। কিন্তু এসব পদক্ষেপ যথেষ্ট কার্যকর হচ্ছে না। কারণ অবৈধ বালু তোলার পেছনে রয়েছে একটি শক্তিশালী চক্র। এই চক্রের মধ্যে রয়েছেন স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি, রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তাসহ অনেকে। তাঁরা অবৈধ বালু তোলার মাধ্যমে অর্থনৈতিকভাবে লাভবান হচ্ছেন আর ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ মানুষ।

স্থানীয় প্রশাসন মাঝেমধ্যে ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান চালালেও অবৈধ এ কার্যক্রম বন্ধ হচ্ছে না। এ অবস্থায় নদী তীরের বেড়িবাঁধ ও আবাদি জমিগুলো ভাঙনের কবলে পড়ছে। জড়িতরা প্রভাবশালী হওয়া কৃষকরা পড়েছেন বেকায়দায়।

উল্লেখ্য সুন্দরবনসংলগ্ন নদ-নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তলনের বিষয়ে বিভিন্ন গনমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়।

প্রতিবেদনটি উপজেলা সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিট্রেট আদালতের নজরে আসায় আমলে নিয়ে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেয় পিবিআইকে। পরে পিবিআই তদন্তপূর্বক হারুন গাজীসহ ৬জনকে অভিযুক্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের পর তা আমলে নিয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আদালত সমন জারির আদেশ করেছেন ।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে এমবি মা বাবার দোয়া কার্গো- ড্রেজার মালিক মো. হারুনার রশিদ বলেন, কেওড়াকাটা পর্যটন কে‌ন্দ্রের পাশ থে‌কে কোন বালু উত্তোলন করা হ‌চ্ছে না। ত‌বে পার্শ্ববর্তী কাটকাটা থে‌কে বালু উত্তোলন ক‌রে খ‌লিলকে দেয়া হ‌চ্ছে। শাকবা‌ড়িয়া নদীর কাটকাটা থে‌কে বালু উত্তোলন করার অনুম‌তি র‌য়ে‌ছে ব‌লে জানান তি‌নি।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস বলেন, নদী থেকে বালু উত্তলনের কোন পার্মিশন নাই। পুনরায় কেউ বালু উঠা‌চ্ছে কিনা জানা নেই। তবে এক্ষু‌ণি খোঁজ নি‌য়ে ব্যবস্থা নি‌চ্ছি।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!