বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, দেশবাসী আজ এমন এক সময়ে ‘মহান বিজয় দিবস’ পালন করতে যাচ্ছে, যখন ছাত্র-জনতা ঐক্যবদ্ধভাবে দেশকে ফ্যাসিস্ট সরকারের কবল থেকে মুক্ত করেছে। রোববার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর আল ফারুক সোসাইটি মিলনায়তনে খুলনা মহানগরী জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে অনুষ্ঠিত মহান বিজয় দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ আহবান জানান।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা মহানগরী আমীর অধ্যাপক মাহফুজুর রহমানের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন কেন্দ্রীয় কমপরিষদ সদস্য ও খুলনা অঞ্চলের সহকারী পরিচালক মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও খুলনা জেলা আমীর মাওলানা এমরান হুসাইন, মহানগরী সেক্রেটারি এডভোকেট শেখ জাহাঙ্গীর হুসাইন হেলালের পরিচালনায় অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন খুলনা মহানগরী নায়েবে আমীর অধ্যাপক নজিবুর রহমান, খুলনা জেলা সেক্রেটারি মুন্সি মিজানুর রহমান, মহানগরী সহকারী সেক্রেটারি প্রিন্সিপাল শেখ জাহাঙ্গীর আলম প্রমুখ।
তিনি বলেন, দীর্ঘ সাড়ে ১৫ বছরের অপশাসন, জুলুম-নির্যাতন ও গুম-খুন থেকে দেশের মানুষ মুক্তি পেয়েছে, শান্তিতে-স্বস্তিতে থাকার প্রয়াস পাচ্ছে এবং দেশ ভঙ্গুর অর্থনীতি থেকে মুক্তি লাভের চেষ্টা করছে। এমতাবস্থায় পতিত স্বৈরাচারের দেশি-বিদেশি দোসরেরা আবার নানা কূটকৌশল ও ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে দেশকে অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। তিনি পতিত স্বৈরাচারের দেশবিরোধী সব চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবেলা করার জন্য দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান।
সেক্রেটারি জেনারেল আরও বলেন, বাংলাদেশ একটি স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্র। ভারত একটি বৃহৎ রাষ্ট্র। তারা আমাদের প্রতিবেশী। তারা আমাদের জাতীয় পতাকায় আগুন দিয়েছে। আগরতলায় সহকারী হাইকমিশনে হামলা করেছে। আপনারা শুধু পতাকায় আগুন দেননি, আপনারা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের হৃদয়ে আগুন দিয়েছেন। এটা আপনাদের জন্য ভালো হবে না। তিনি বলেন, সেই ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশের মানুষকে এমন নির্যাতন করেছে তা বলে বোঝানো যাবে না। তারা মানুষের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে মানুষকে ধরে নির্যাতন করেছে। তারা মানুষকে ধরে নিয়ে আয়নাঘরে বন্দি করে রেখেছিল। কত মানুষকে এভাবে ধরে নিয়ে গিয়েছিল তার হদিস নেই। এভাবে তারা নির্যাতনের স্টিমরোলার চালিয়ে দেশের মানুষকে পরাধীন করে রেখেছিল।
অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) ক্ষমতায় এসেই কোমর ভেঙে দিয়েছে, বিডিআর বিদ্রোহের নাম করে ৫৭ জন চৌকস সেনাবাহিনীর অফিসারকে হত্যা করেছিল। এরপর জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নেতাদের ধরে নিয়ে গিয়ে নাটক সাজিয়ে আইনের নামে অবিচার করে জুডিশিয়াল কিলিংয়ের মাধ্যমে একের পর এক ফাঁসি দিয়েছে এবং জেলখানায় নির্মমভাবে হত্যা করেছে ১১ জন নেতাকে। তিনি আরও বলেন, তারা (আওয়ামী লীগ) শাপলা চত্বরকে রক্তে রঞ্জিত করেছিল। এভাবে ভারতবিরোধী শক্তিকে নিঃশেষ করে বাংলাদেশে একটি রাম রাজত্ব কায়েম করার জন্য উদ্যোগ নিয়েছিল।
তিনি আরও বলেন, ১৯৬৫ সালে আমাদের সীমান্তে আপনারা (ভারত) পরাজিত হয়েছিলেন। সেই প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য আপনারা ১৯৭১ সালে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে পাকিস্তানের ওপর আঘাত করেছিলেন। আমরা বলতে চাই ১৯৬৫ সালের যে ঈমান সেই ঈমান এখনো বাংলাদেশের মানুষের অন্তরে জাগ্রত রয়েছে। অতএব হুমকি দিয়ে লাভ হবে না।
খুলনা গেজেট/ টিএ