প্রথম ওয়ানডেতে হেরে ব্যাকফুটেই চলে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সিরিজ জয়ের দৌড়ে টিকে থাকতে আজ জয়ের কোনো বিকল্প ছিল না লাল-সবুজের জার্সিধারীদের সামনে। নিজেদের ডু অর ডাই ম্যাচে দারুণ কিছু করে দেখানোর সুযোগ ছিল। সুযোগ ছিল সমতায় ফেরার। কিন্তু নাহ! তেমন কিছুই ঘটল না। পারল না সফরকারী ছেলেরা। প্রথম ম্যাচে দেখানো ব্যাট-বলের ঝলকটুকুও দেখাতে পারল না দ্বিতীয় ম্যাচে। তাতে ফল যা হওয়ার তাই হলো। হারের সঙ্গে সিরিজ খোয়ানোর কষ্টও সঙ্গী হলো কোচ ফিল সিমন্সের শিষ্যদের। দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ২২৮ রানের টার্গেট ছুঁড়ে দিয়েও লাভ হলো না। মেহেদী হাসান মিরাজরা অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে। হার মেনেছে ৭ উইকেটে। এ হারে সিরিজও খুইয়েছে দেশের ছেলেরা। কেননা প্রথম ম্যাচেও হারের তেতো স্বাদ হজম করেছিল বাংলাদেশ। অতিথিদের টানা হারের খোলসবন্দি করে তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ ২-০ ব্যবধানে নিশ্চিত করল ক্যারিবীয়রা। এবং সেটা এক ম্যাচ হাতে রেখেই।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের অনুপ্রেরণা ছিল- ২০১৪ সালে সিরিজ জয়ের সুখস্মৃতি। ওইবার ঘরের মাঠে সর্বশেষ বাংলাদেশের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জিতেছিল ক্যারিবীয়রা। একদিনের সংস্করণে আরেকটি সিরিজ জয়ের লক্ষ্য পূরণ হলো কিনা তাদের এক দশক অপেক্ষা শেষে। মাঝে হোম ও অ্যাওয়ে মিলিয়ে চারটি সিরিজই ছিনিয়ে নিয়েছিল টাইগাররা। এবার আর তারুণ্য নির্ভর লাল-সবুজের দল সেই দাপট ধরে রাখতে পারল না।
সেন্ট কিটসের ওয়ার্নার পার্কে শাই হোপের দল মাত্র ৩৬.৫ ওভারেই বাংলাদেশের লক্ষ্য টপকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায়। তার মানে জয় ধরা দিয়েছে ৭৯ বল হাতে রেখে। স্বাগতিকদের হয়ে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ ৮২ রানের ইনিংস উপহার দেন ওপেনার ব্রেন্ডন কিং। অন্য উদ্বোধনী ব্যাটার এভিন লুইস ৪৯ আর কেসি কার্টি ৪৫ রান যোগ করেন দলীয় স্কোরে। বাংলাদেশের জার্সিতে একটি করে উইকেট নেন রিশাদ হোসেন, নাহিদ রানা ও আফিফ হোসেন।
বাসেটেরের ওয়ার্নার পার্কে নেমেছিল বাংলাদেশের উইকেট মিছিল। স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে সফরকারীদের শুরুটা যে খুব খারাপ ছিল, তা কিন্তু নয়। মঙ্গলবার শাই হোপের আমন্ত্রণে ব্যাটিংয়ে নামা লাল-সবুজ দলের প্রথম উইকেটের পতন ঘটে দলীয় ২৬ রানে। এরপর দলীয় ১১৫ রানে পড়ে আরও ছয়টি। তবে ত্রাণকর্তা হিসেবে দলকে টেনে তুলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার ৬২ রানে ইনিংসে ক্যারিবিয়ানদের ২২৮ রানের লক্ষ্য ছুঁড়ে দিতে সক্ষম হয়েছে বাংলাদেশ।
সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে তানজিদ হাসান একপ্রান্ত আগলে সপাটে ব্যাট চালালেও সৌম্য সরকার মোকাবিলা করতে পেরেছেন কেবল ৫ বল। জেডেন সিলসের বলে ক্যাচ তুলে সাজঘর মুখো হয়েছেন তিনি। সৌম্যর দেখানো পথে হাঁটেন লিটন দাস। রীতিমতো টেস্ট (১৯ বলে ৪ রান) খেলে আউট হয়েছেন এই উইকেটরক্ষক ব্যাটার। বাকিরা এলেন আর গেলেন। অধিনায়ক মেহেদী হাসান স্কোরবোর্ডে লেখাতে পারেন মাত্র একরান। তবে কিছুটা প্রচেষ্টা চালিয়ে গেছেন আফিফ হোসাইন। ২৯ বলে ২৪ রান করে আউট হয়েছেন এই স্পিন অলরাউন্ডার। জাকের আলী (৩) ও রিশাদ হোসাইন (০) ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন। তবে দলকে বিপদমুক্ত করার কাজ করে গেছেন মাহমুদউল্লাহ। অভিজ্ঞ অলরাউন্ডারকে সঙ্গ দিয়েছেন এবং নিজের ব্যাটিং সত্তা উপস্থাপনের সুযোগ কাজে লাগিয়েছেন পেসার তানজিম হাসান। দুজনের ৯২ রানের জুটি সফরকারীদের মান বাঁচানো ২২৭ রানের পুঁজি এনে দিয়েছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
বাংলাদেশ: ২২৭, ৪৫.৫ ওভার (মাহমুদউল্লাহ ৬২, তানজিদ ৪৬, তানজিম ৪৫, আফিফ ২৬, শরিফুল ১৫; সিলস ৪/২২, মোতি ২/৩৬, চেজ ১/১৮)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ২৩০/৩, ৩৬.৫ ওভার (কিং ৮২, লুইস ৪৯, কার্টি ৪৫, রাদারফোর্ড ২৪*; আফিফ ১/১২, রানা ১/৩৮)।
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৭ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: জেইডেন সিলস।
সিরিজ: তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২-০ ব্যবধানে এগিয়ে।
খুলনা গেজেট/এইচ