খুলনা, বাংলাদেশ | ১৩ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  প্রয়োজনীয় সংস্কার শেষে নির্বাচনি রোডম্যাপ দেয়ার আহবান বিএনপির: মির্জা ফখরুল
  চলমান ইস্যুতে সবাইকে শান্ত থাকার আহবান প্রধান উপদেষ্টার: প্রেস সচিব
  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ৪ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৮
বাঁধ নিয়ে উৎকন্ঠা

‘ঝড় আসবে তাই আতঙ্কে আছি, ঘুম হবে না সারারাত’

জি এম রিয়াজুল আকবর, কয়রা

ঝড় আসবে তাই আমরা আতঙ্কে আছি। আমাদের বাড়ির সামনের এই বাঁধ ভেঙে গেলে পুরো গ্রাম প্লাবিত হয়ে যাবে। সারারাত আমাদের ঘুম হবে না। পরিবার নিয়ে খুব চিন্তায় আছি। খুলনা গেজেটকে এইভাবে বলছিলেন কয়রা নদীর পাড়ের মহেশ্বরীপুর গ্রামের মো. ইবাদুল শিকারী।

ঘূর্ণিঝড় দানা’র প্রভাবে কয়রা উপজেলায় বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর) সকাল থেকেই বৃষ্টি হচ্ছে। দুর্বল বেড়িবাঁধ নিয়ে সকলে আতঙ্ক আর উৎকণ্ঠায় রয়েছে।

ইবাদুল শিকারী আরও বলেন, বাড়ির পাশে নিরাপদ আশ্রয় কেন্দ্র নেই অনেক দূরে গিয়ে আশ্রয় কেন্দ্র থাকতে হয়। বাড়িতে কয়ডা ছাগল আছে এগুলো কোথায় রাখবো তাই নিয়ে ভাবতেছি।

কপোতাক্ষ নদীর পাড়ের দশালিয়া গ্রামের বাসিন্দা মো. নূরুজ্জামান বলেন, শুনতেছি আবার নাকি বড় একটা ঝড় আসবে, লোকজন দোকানে বলাবলি করিতেছি, খবরেও দেখাচ্ছে। সকাল থেকে বৃষ্টি হচ্ছে সূর্য দেখা পায়নি। ঝড় হলে আমাগে এলাকায় খুব বড় বিপদ হয়। আমাগে দশহালিয়া বাঁধ বার বার ভেঙে যায়। বৌ-বাচ্চা নিয়ে বাইরে পরের বাড়িতে থাকতে হয়। আগে কয়েকটা ঝড়ে আমাগে মেলা ক্ষয়-ক্ষতি হয়ছে। মানুষের কাছ থেকে সাহায্য নিয়ে তাই ঘরটা ঠিক করছি। ঝড়ের ঝামটে ঘরের মধ্যে থাকা যায় না। বিকেলে কয়টা শুকনো খাবার কিনে এনে রাখবো। রাতে কোথাও একটা ভালো জায়গায় থাকতে হবেনে। প্রতিবার ঝড় হলে আমার বাড়ি ভেঙে যায়। নদীর চরে বাস করি। খুব কষ্ট জীবন কাটাতে হয়।

উপজেলা সদরে ভ্যানচালক কালনা গ্রামের বাসিন্দা মো. ইদ্রিস মোল্লা বলেন, ঘূর্ণিঝড় দানার জন্য রাস্তাঘাটে তেমন কোন লোকজন বেরোচ্ছে না সকাল থেকে অল্প কয়টা টাকা আয় হয়েছে। এখন বাড়ি যাচ্ছি।

কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দীন বলেন, প্রতি বছর বরাদ্দ হয়, কিন্তু বাঁধ সঠিকভাবে মেরামত হয় না। ১৫৫ কিলোমিটার বাঁধ রয়েছে কয়রায়। এরমধ্যে সাড়ে ৮ কিলোমিটার বেড়িবাঁধ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ। এছাড়া অনেক স্থানে বাঁধ দূবল অবস্থায় রয়েছে। এই দূর্বল বাঁধ নিয়ে মানুষের যতো চিন্তা। তবুও মানুষ সতর্ক রয়েছে। কিছু হলে দ্রুত মেরামতের জন্য নারী-পুরুষ সবাই মিলে একত্রে বাঁধ মেরামতে কাজ করে।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় দানা মোকাবেলায় কয়রা উপজেলা ১১৬ টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

কয়রা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুলী বিশ্বাস বলেন, ঘূর্ণি ঝড় দানা মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। আমাদের কন্টোল রুম খোলা আছে, সাইক্লোন শেল্টার গুলো খুলে দেওয়া হয়েছে। সিপিপি সদস্যরা কাজ করছে। মানুষের সচেতন তার জন্য মাইকিং করা হয়েছে। বিশুদ্ধ খাবার পানি ও শুকনো খাবার মজুদ আছে। আমি বিভিন্ন জায়গার ভেড়ি বাধ পরিদর্শক করেছি। সেখানে অসুবিধা আছে। সেজায়গায় পানি উন্নয়ন বোর্ড কাজ করছে। উপজেলার সকল কর্মকর্তারা ষ্টেশনে আছেন।

খুলনা গেজেট/এমএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!