বাংলাদেশের প্রথম সংবিধানে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিদের অপসারণের ক্ষমতা রাখা হয় সংসদের হাতে। কিন্তু ১৯৭৫ সালে সংবিধানের চতুর্থ সংশোধনীতে বিচারক অপসারণের ক্ষমতা দেয়া হয় রাষ্ট্রপতিকে। এরপর আবারও সংশোধনী। পঞ্চম সংশোধনীতে বিচারক অপসারণে নিষ্পত্তির ভার দিতে গঠন করা হয় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিল।
পঞ্চম থেকে পঞ্চদশ সংশোধনী পর্যন্ত বিচারপতি অপসারণ নিয়ে কোন নড়াচড়া হয়ে না। তবে ২০১৪ সালে ষোড়শ সংশোধনীতে বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতাপ্রাপ্ত হয় জাতীয় সংসদ। তৎকালীন প্রধান বিচারপতির এস কে সিনহার তৎপরতায় হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করা হয়। আওয়ামী লীগ সরকার এর রিভিউতে যায়। এখনও সে অবস্থাতেই আছে। ফলে কার্যত কোন বিচারপতির বিরুদ্ধে অভিযোগ এলে তা কিভাবে নিষ্পত্তি হবে তা পড়ে যায় ধোঁয়াশায়।
গত বুধবার দলান্ধ ও দুর্নীতিবাজ বিচারপতিদের অপসারণে সুপ্রিম কোর্টে বৈষম্যবিরোধী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে নজিরবিহীন আন্দোলন হয়। যদিও এর আগেই প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদ সিদ্ধান্ত নেন ১২ বিচারপতিকে ছুটিতে পাঠানোর। তবে তা না মানতে পেরে মোট ৩০ বিচারপতি অপসারণের দাবী করে ছাত্ররা। সেদিনই সিদ্ধান্ত হয় ২০ অক্টোবর চূড়ান্ত শুনানি হবে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনীর বৈধতার রিভিউ শুনানি।
অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল অনিক আর হক রোববার কি হতে যাচ্ছে সে বিষয়ে তিনি বলেন, কার্যতালিকার ১নম্বর বিষয় হিসেবে এটি থাকবে। আশা করছি যে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে সেটি এই মামলার মধ্যে দিয়ে কেটে যাবে। ফলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া সহজ হবে।
সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী শিশির মনির মনিরে মতে, বিচারপতি অপসারণের ক্ষমতা সংসদ নয় সুপ্রিম জুডিশিয়াল কাউন্সিলের হাতে থাকা উচিৎ।
রোববার ষোড়শ সংশোধনীর রিভিউ চূড়ান্ত নিষ্পত্তি হলে বিচারপতিদের অপসারণের জন্য এতদিন ধরে চলে আসা বিতর্কের চূড়ান্ত আইনি সমাধান হবে।
খুলনা গেজেট/এএজে