প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও কর্মচারীদের শতভাগ উপস্থিতি নিশ্চিত ও তদারকির লক্ষ্যে ২০১৯ সালের বায়োমেট্রিক হাজিরা সিস্টেম (ডিজিটাল হাজিরা মেশিন) চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।এরই ধারাবাহিকতায় তেরখাদা উপজেলার ছয়টি ইউনিয়নের ১০২ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ৭৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনা হয়। তবে মেশিনটি কেনার ৫ বছর পেরিয়ে গেলেও বর্তমানে ব্যবহৃত হচ্ছে না। এরইমধ্যে ৮ টি নষ্ট হয়ে গেছে। এতে মেশিনটি যে উদ্দেশে কেনা হয়েছে তা পূরণ হচ্ছে না। নষ্ট হতে চলেছে লক্ষ লক্ষ টাকার সরঞ্জাম।
তেরখাদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার ৬ ইউনিয়নে ১০২ টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এর মধ্যে ৭৭ টি বিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ অর্থবছরে স্লিপের ফান্ড থেকে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনা হয়। যার বরাদ্দ রাখা হয়েছিল ১৫ হাজার টাকা। কেনা মেশিনগুলোর মধ্যে সচল রয়েছে নষ্ট ৮ টি। যেসব স্কুলে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনা হয়েছে তার মধ্যে কোথাও স্থাপন করা হয়েছে আবার বেশিরভাগই বাক্সবন্দি করে রাখা হয়েছে। মেশিন কেনার পর দীর্ঘদিন থেকে বন্ধ থাকায় অধিকাংশ অচল হয়ে পড়েছে। মেশিনটি কেনার পর কিছু বিদ্যালয়ে প্রায় এক বছর শিক্ষকরা নিজেদের মতো করে হাজিরা দিলেও করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ হয়ে যায়। কিন্তু আজও চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ ডিজিটাল হাজিরা মেশিনের সঙ্গে ইন্টারনেট বা ডাটা সংযোগ থাকবে। ফলে অফিসে বসে উপজেলা বা জেলার কর্মকর্তারা শিক্ষকদের নির্দিষ্ট সময়ে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া যেকোনো সময় পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন। কিন্তু যে উদ্দেশে মেশিন কেনা হয়েছিল চালু না হওয়ায় তা ব্যাহত হচ্ছে।
উপজেলার ইখড়ি কাটেংগা মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ কামারুজ্জামান বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন চালু ছিল, কিন্তু করোনা ভাইরাসের কারনে দীর্ঘদিন বিদ্যালয় বন্ধ থাকায় যান্ত্রিক ত্রুটির কারনে বর্তমানে মেশিনটি ব্যবহৃত হচ্ছে না।
উপজেলার আটলিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এস এম নূর আশফাকুজ্জামান বলেন, স্লি বরাদ্দের ১৪ হাজার টাকা দিয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনা হয়েছিল। এরপর কোম্পানির পক্ষ থেকে বিদ্যালয়ে লাগিয়ে দেওয়া হলেও চালু করা হয়নি। বর্তমানে মেশিনটি অকেজো অবস্থায় পড়ে আছে।
উপজেলার আড়ফাংগাশিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শেখ আবু সাইদ বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন চালু আছে, টিপ ছাপের মাধ্যমে হাজিরা দিই।
তেরখাদা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এম এম মতিয়ার রহমান বলেন, এ উপজেলায় ৭৭ টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনা হয়, আমি যোগদানের আগে মেশিনগুলো কেনা হয়েছে। তবে চালু করা হয়নি।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মারুফা বেগম নেলী বলেন, আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানলাম, উপজেলা পরিষদের আগামী মাসিক সভায় এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারী আলোচনা করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
খুলনা গেজেট/কেডি