খুলনার নিরালা মুসলমানপাড়া বাসা থেকে ২০১০ সালের ১১ আগস্ট গাজী মো. মেহেদী হাসান ফিরোজ মোটরসাইকেলযোগে বাগেরহাটে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসা থেকে বের হন। সঙ্গে ছিলেন তার বন্ধু মো. আফজাল হোসেন। মাঝখানে কেটে গেছে ১৪ বছর। নিখোঁজ গাজী ফিরোজ কিংবা তার বন্ধুর আজও কোন খবর পাওয়া যায়নি। ফিরোজ গাজীর সন্ধানে তখন অনেক খোঁজাখুঁজি করেছে তার পরিবার। কিন্তু কোন সন্ধান মেলেনি। নিখোঁজ ফিরোজ গাজীকে ফিরে পাওয়ার আশায় আজও বুক বেঁধে আছে তার পরিবার।
ফিরোজ গাজীর বাড়ি দিঘলিয়া উপজেলার সেনহাটী ইউনিয়নের চন্দনীমহল গ্রামে। তিনি ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম গাজী সিরাজুল ইসলামের ছেলে।
নিখোঁজ ফিরোজ গাজীকে ফিরে পেতে রবিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১ টায় সাংবাদ সম্মেলন করেছে তার ভুক্তভোগী পরিবার। সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন ফিরোজ গাজীর ছোট ভাই দিঘলিয়া উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক গাজী মনিরুল ইসলাম।
লিখিত বক্তব্যে গাজী মনিরুল ইসলাম উল্লেখ করেন, ২০১০ সালের ১১ আগস্ট বেলা সাড়ে ৪ টার দিকে আমার বড় ভাই গাজী মো. মেহেদী হাসান ফিরোজ ও তার বন্ধু মো. আবজাল হোসেনকে নিয়ে খুলনার নিরালা মুসলমান পাড়া বাসা থেকে বের হয়। উদ্দেশ্য বাগেরহাট যাবেন। কিন্তু অধিক রাত অবধি তার খোঁজ না পেয়ে আমরা বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করি। কিন্তু তার বা তার বন্ধুর কোন সন্ধান না পেয়ে আমরা র্যাব-৬ খুলনা কার্যালয়ে যোগাযোগ করি। তখন তারা আমার ভাইয়ের বর্ণনা শুনে বলেন এইরকম দুইজন গ্রেপ্তারকৃত লোক আমাদের হেফাজতে আছে। আমি একটু পরে আপনাকে জানাচ্ছি বলে অফিসের ভিতরে চলে যান। প্রায় দুই ঘণ্টা পরে এসে তিনি বলেন ওনারা আমাদের হেফাজতে নেই। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছিল তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। অবশেষে খুলনা সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করি।
লিখিত বক্তব্য তিনি আরো উল্লেখ করেন, আমরা ডিবি অফিস, র্যাব অফিস এবং বিভিন্ন হাসপাতাল আমাদের সাধ্যমত ভাইকে অনুসন্ধান করি। কিন্তু অধ্যাবধি তার কোন সন্ধান পায় নাই। ছাত্র জনতার বিপ্লবের পর আওয়ামীলীগ সরকার যখন ক্ষমতাচ্যুত হয় আমরা বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পারি গুম হয়ে যাওয়া ব্যক্তির অনেকেই আয়না ঘর থেকে জীবিত অথবা মৃত সন্ধান পাওয়া গেছে। সে কারণে আমরা আশান্বিত হয়ে আমার হারিয়ে যাওয়া ভাইকে আপনাদের লেখনীর মাধ্যমে এবং প্রশাসনের সহযোগিতায় তাকে ফিরে পেতে চায়।
সাংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিখোঁজ ফিরোজের আরেক ভাই বিএনপি নেতা গাজী এনামুল হাসান মাসুম।
খুলনা গেজেট/এএজে