খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৫৮

ভেসে গেছে ডুমুরিয়ার ১২,৫৩০টি ঘের-পুকুর, ক্ষতি ৬০ কোটি টাকা

একরামুল হোসেন লিপু

ডুমুরিয়াকে বলা হয় মাছের স্বর্গরাজ্য। খুলনায় মাছের চাহিদার একটা বৃহৎ অংশ পূরণ হয় ডুমুরিয়ায় উৎপাদিত মাছ থেকে। এ উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের ২২৬ টি গ্রামেই মাছ চাষ হয়। ডুমুরিয়া উপজেলায় মাছ চাষের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে ২৮ হাজার ৫৭৪ মাছ চাষী। এলাকাটিতে গলদা ও বাগদা চিংড়ি এবং কার্প জাতীয় মাছ চাষ হয় প্রচুর পরিমাণ। ডুমুরিয়ার উৎপাদিত বাগদা ও গলদা চিংড়ি খুলনা অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও প্রচুর পরিমাণে রপ্তানি হয়। মাছ ও চিংড়ি উৎপাদনে ডুমুরিয়া উপজেলার অবস্থান খুলনা জেলার শীর্ষে।

উপজেলা মৎস্য অফিস সূত্রে জানা যায়, ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৮ হাজার ৩৪০ হেক্টর জমিতে ছোট বড় মিলিয়ে ২৬ হাজার ৫৭০ টি মাছের ঘের এবং ৫ হাজার ৬৩০ টি পুকুর রয়েছে। উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের এ সকল মাছের ঘের এবং পুকুর থেকে বছরে প্রায় ২৮ হাজার ৬৯০ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদিত হয়। এরমধ্যে ১৮ হাজার ২০০ মেট্রিক টন সাদা মাছ। বাকী ১০ হাজার ৪৯০ মেট্রিক টন চিংড়ি উৎপাদিত হয়। উৎপাদিত এসব মাছের বাজার মূল্য আনুমানিক ১৪ ‘শ ৭৩ কোটি ৮০লক্ষ টাকা।

এ বছর টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়নের ২২৬ টি গ্রামের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। সেই সাথে প্লাবিত হয়েছ হাজার হাজার মাছের ঘের, পুকুর, ধান ও ফসলের ক্ষেত।

উপজেলা সিনিয়র মৎস্য অফিসার মোঃ আবু বকর সিদ্দিক জানান, কয়েকদিনের টানা ভারী বর্ষণে ডুমুরিয়া উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়ন ব্যাপকভাবে প্লাবিত হয়েছে। ছোট বড় সব মিলিয়ে ১২ হাজার ৫৩০ টি ঘের এবং পুকুর পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব ঘের এবং পুকুর থেকে ৩ হাজার ৫৬০ মেট্রিক টন সাদা মাছ ভেসে গেছে। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৭ কোটি ১২ লক্ষ টাকা। চিংড়ি ভেসে গেছে ৪ হাজার ৬৭০ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য বাজার মূল্য ৪৬ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা। কাঁকড়া ভেসে গেছে সাড়ে ৭ মেট্রিক টন। যার আনুমানিক বাজার মূল্য ৭৫ লক্ষ টাকা। এছাড়াও ডুমুরিয়া উপজেলায় বন্যায় মৎস্য খাতের অবকাঠামোগত ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আনুমানিক ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ সাড়ে ৫ কোটি টাকা। তিনি বলেন, প্রথম ধাপে আমরা যে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করেছি সব মিলিয়ে আমাদের উপজেলায় মৎস্য খাতে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ আনুমানিক ৬০ কোটি ৭ লক্ষ টাকা হবে।

সিনিয়র মৎস্য অফিসার আরো বলেন, এর আগে ঘূর্ণিঝড় রেমালে ডুমুরিয়া উপজেলায় মৎস্য খাতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছিল। তখনও কয়েক হাজার মাছের ঘের পানিতে তলিয়েছিলো। ভেসে গিয়েছিল কয়েক কোটি টাকার সাদা এবং চিংড়ি মাছ। সব মিলিয়ে ঘূর্ণিঝড় রেমালে তখন ডুমুরিয়া উপজেলার মৎস্য খাতে ক্ষতি হয়েছিল প্রায় ৩০ কোটি টাকা।

তিনি বলেন, বন্যা পরবর্তী মৎস্য অধিদপ্তরের চাহিদা মোতাবেক প্রথম ধাপের ক্ষয়ক্ষতির তালিকা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যানদের নিকট হতে সংগ্রহ করে কর্তৃপক্ষের নিকট প্রেরণ করা হয়েছে। ২য় ধাপে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপনের কার্যক্রম চলমান রয়েছে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!