পবিত্র কোরআনের সূরা মুমিনুনের সফল মুমিনের বেশ কয়েকটি গুণ বর্ণনা করা হয়েছে। এই গুণগুলো অর্জন করতে পারলে একজন মানুষ সফল এবং এই সফলতার বিনিময়ে তিনি চিরস্থায়ী জান্নাত লাভ করবেন বলে সুসংবাদ দেওয়া হয়েছে। এইগুলো হলো—
১. নামাজে আন্তরিকভাবে বিনীত হওয়া।
২. অহেতুক বিষয় থেকে বিরত থাকা।
৩. ঠিকমতো জাকাত আদায় করা।
৪. নিজের লজ্জাস্থানের হেফাজত করা।
৫. আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করা।
৬. নিজের নামাজের পরিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ করা।
এখানে কোরআনের বর্ণনায় মুমিনের সেই গুণগুলো তুলে ধরা হলো—
قَدۡ اَفۡلَحَ الۡمُؤۡمِنُوۡنَ ۙ ١ الَّذِیۡنَ ہُمۡ فِیۡ صَلَاتِہِمۡ خٰشِعُوۡنَ ۙ ٢ وَالَّذِیۡنَ ہُمۡ عَنِ اللَّغۡوِ مُعۡرِضُوۡنَ ۙ ٣ وَالَّذِیۡنَ ہُمۡ لِلزَّکٰوۃِ فٰعِلُوۡنَ ۙ ٤ وَالَّذِیۡنَ ہُمۡ لِفُرُوۡجِہِمۡ حٰفِظُوۡنَ ۙ ٥ اِلَّا عَلٰۤی اَزۡوَاجِہِمۡ اَوۡ مَا مَلَکَتۡ اَیۡمَانُہُمۡ فَاِنَّہُمۡ غَیۡرُ مَلُوۡمِیۡنَ ۚ ٦ فَمَنِ ابۡتَغٰی وَرَآءَ ذٰلِکَ فَاُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡعٰدُوۡنَ ۚ ٧ وَالَّذِیۡنَ ہُمۡ لِاَمٰنٰتِہِمۡ وَعَہۡدِہِمۡ رٰعُوۡنَ ۙ ٨ وَالَّذِیۡنَ ہُمۡ عَلٰی صَلَوٰتِہِمۡ یُحَافِظُوۡنَ ۘ ٩ اُولٰٓئِکَ ہُمُ الۡوٰرِثُوۡنَ ۙ ١۰ الَّذِیۡنَ یَرِثُوۡنَ الۡفِرۡدَوۡسَ ؕ ہُمۡ فِیۡہَا خٰلِدُوۡنَ ١١
নিশ্চয়ই সফলতা অর্জন করেছে মুমিনগণ। যারা তাদের নামাযে আন্তরিকভাবে বিনীত। যারা অহেতুক বিষয় থেকে বিরত থাকে। যারা জাকাত সম্পাদানকারী। যারা নিজ লজ্জাস্থান সংরক্ষণ করে। নিজেদের স্ত্রী ও তাদের মালিকানাধীন দাসীদের ছাড়া অন্য সকলের থেকে, কেননা এতে তারা নিন্দনীয় হবে না। তবে কেউ এ ছাড়া অন্য কিছু কামনা করলে তারাই হবে সীমালঙ্ঘনকারী।
এবং যারা তাদের আমানত ও প্রতিশ্রুতি রক্ষা করে। এবং যারা নিজেদের নামাযের পরিপূর্ণ রক্ষণাবেক্ষণ করে। এরাই হল সেই ওয়ারিশ, যারা জান্নাতুল ফিরদাউসের মীরাস লাভ করবে। তারা তাতে সর্বদা থাকবে। (সূরা আল মুমিনুন, আয়াত : ১-১১)
কেউ উপরে বর্ণিত গুণে গুণান্বিত হলে তাকে এই সূরার ১১ নম্বর আয়াতে জান্নাতুল-ফেরদাউসের অধিকারী বা ওয়ারিশ বলা হয়েছে। ওয়ারিশ বলার মধ্যে ইঙ্গিত আছে যে, মৃত ব্যক্তির সম্পত্তি যেমন ওয়ারিশদের মালিকানায় আসা অমোঘ ও অনিবাৰ্য, তেমনি এসব গুণে গুণান্বিত ব্যক্তিদের জান্নাত প্রবেশও সুনিশ্চিত।
আর সফলকাম ব্যক্তিদের গুণাবলী পুরোপুরি উল্লেখ করার পর এই বাক্যে আরও ইঙ্গিত আছে যে, পূর্ণাঙ্গ সাফল্য ও প্রকৃত সাফল্যের স্থান জান্নাতই।
মুজাহিদ রহ. বলেন, প্রত্যেক বান্দার জন্য দু’টি স্থান রয়েছে। একটি স্থান জান্নাতে, অপর স্থানটি জাহান্নামে। মুমিনের ঘরটি জান্নাতে নির্মিত হয়, আর জাহান্নামে তার ঘরটি ভেঙে দেয়া হয়। পক্ষান্তরে কাফেরের জন্য জান্নাতে যে ঘরটি সেটা ভেঙে দেয়া হয়, আর তার জন্য জাহান্নামের ঘরটি তৈরী করা হয়।
কোন কোন মনীষী বলেন, মুমিনরা জান্নাতে কাফেরদের স্থানসমূহেরও মালিক হবে। তারা আনুগত্যের মাধ্যমে এ অতিরিক্ত পুরস্কার লাভ করবে।
খুলনা গেজেট/এএজে