খুলনা, বাংলাদেশ | ৮ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৩ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনবে বিএনপি : তারেক রহমান

গেজেট ডেস্ক

বিএনপি আগামীতে সরকার গঠন করলে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিতে সংবিধানে নির্বাচনকালীন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনবে বলে অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তৃণমূল নেতাকর্মীদের সঙ্গে ধারাবাহিক মতবিনিময়ের অংশ হিসেবে গতকাল সোমবার খুলনা বিভাগের মতবিনিময় সভায় দেওয়া ভার্চুয়াল বক্তব্যে এই অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন তিনি।

তারেক রহমান বলেন, বাংলাদেশের মালিকানা এ দেশের মানুষের, আর স্বাধীনভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে জনপ্রতিনিধি নির্বাচন তার ন্যায্য গণতান্ত্রিক অধিকার। দেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে ১৯৯৬ সালে বিএনপি জনগণের ভোটাধিকার নির্বিঘ্ন করতে দলীয় সরকারের পরিবর্তে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে সংযুক্ত করেছিল। কিন্তু ক্ষমতা কুক্ষিগত করতে জনগণকে ভোটাধিকারবঞ্চিত করার লক্ষ্যে স্বৈরাচারী হাসিনা সরকার সেটা সংবিধান থেকে মুছে দিয়ে তিনটি জাতীয় নির্বাচনে জনগণকে ভোটাধিকারবঞ্চিত রেখেছে। আমরা জনগণের ভোটাধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা সংবিধানে আবারও সংযুক্ত করতে চাই।

তিনি বলেন, বিএনপি দেশের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা পূরণের লক্ষ্য নিয়ে রাজনীতি করে। মানুষের নিরাপত্তা, বাক-স্বাধীনতা, শান্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করার অধিকার, তরুণ ও যুবকের কর্মসংস্থান, নারীর মর্যাদা ও নিরাপত্তা, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-গোষ্ঠী-সমতল-পাহাড়ি নির্বিশেষে সবার জন্য সমান রাষ্ট্রীয় অধিকার নিশ্চিত করা, দেশে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠিত করা, বিচার, আইন ও নির্বাহী বিভাগের মধ্যে ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, সবার জন্য স্বাস্থ্য সুবিধা নিশ্চিত করা, কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তি এবং সর্বোপরি দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিশ্চিত করাই বিএনপির রাজনীতির অগ্রাধিকার।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবেগের সঙ্গে বলেন, যে বাড়িতে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাস করেছেন, যে বাড়ির প্রতিটি ইঞ্চিতে তার ও তার ভাইয়ের শৈশব-কৈশোরের স্মৃতি জড়িয়ে আছে, যে বাড়ি তার মায়ের সংসারের সূচনা আর বৈধব্যের বেদনার সাক্ষী, সেই বাড়ি থেকে খালেদা জিয়াকে কতটা অসম্মানজনক ও অন্যায়ভাবে উচ্ছেদ করা হয়েছে, সেটা দেশবাসী দেখেছে। বিনা চিকিৎসায় তার একমাত্র ভাইকে (আরাফাত রহমান কোকো) নিদারুণ অবহেলায় মৃত্যুবরণ করতে হয়েছে। ঠিক তেমনিভাবে দলের তৃণমূলের লাখ লাখ নেতাকর্মীকে মামলা-হামলায় জর্জরিত হয়ে, পরিবার-পরিজন বিসর্জন দিয়ে, ব্যবসা-চাকরি হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করতে হয়েছে, হয় কারাগারে নয়তো আত্মগোপনে। আর অগণিত নেতাকর্মী অকাতরে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেন দেশকে ভালোবেসে, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন নিয়ে।

তৃণমূলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে তারেক রহমান বলেন, তারা যেমন অতীতের মতো প্রতিহিংসায় বিশ্বাস করেন না, তেমনি তিনি এবং দলের প্রধান খালেদা জিয়াও জানেন যে, দেশের মানুষও গত সতেরো বছর বাংলাদেশ নামে এক বৃহত্তর কারাগারে বন্দি জীবনযাপন করেছেন। সুতরাং আজ হিংসা নয়, বরং দেশের মানুষের প্রত্যাশা পূরণের মাধ্যমে অতীতের সব অন্যায়ের জবাব দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।

তিনি বলেন, বছরের পর বছর ধরে আন্দোলন-সংগ্রাম, ত্যাগ-বঞ্চনা সহ্য করে বিএনপি আজ জনগণের যে আস্থা আর ভালোবাসা অর্জন করেছে, দলের কিছু বিপথগামীর হঠকারিতায় মানুষের সেই আস্থা আর প্রত্যাশার জায়গা ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সেটা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না, তিনি যেই হোন না কেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান সমবেতদের উদ্দেশে বলেন, আপনারা দলের ভাবমূর্তি বিনষ্টকারীদের চিহ্নিত করুন, প্রতিরোধ করুন। দল তাদের শুধু বহিষ্কারের অঙ্গীকারই নয়, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ারও নির্দেশ দিচ্ছে।

তিনি দলের তৃণমূলের ওপর তার অগাধ আস্থা পুনর্ব্যক্ত করে

এক-এগারোর দৃষ্টান্ত দিয়ে বলেন, দলের সকল সংকটকালে তৃণমূলই ছিল বিএনপির শক্তি। এরা শত প্রলোভন আর নির্যাতন উপেক্ষা করে ইস্পাতকঠিন ঐক্য দিয়ে দলকে ধরে রেখেছে। তিনি বলেন, তৃণমূল সঙ্গে থাকলে দল যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে যেমন সক্ষম হবে, তেমনি তার পক্ষেও অনেক সহজ হবে দল পরিচালনা।

তারেক রহমান জনগণের প্রত্যাশা পূরণ আর আগামীর আধুনিক বাংলাদেশ গড়তে রাষ্ট্রকাঠামো সংস্কারের ৩১ দফা কর্মসূচির মূল বিষয়গুলো তুলে ধরে এই বার্তা দেশের প্রান্তিক সব মানুষের কাছে পৌঁছানোর নির্দেশ দেন। তিনি দৃশ্যমান প্রতিপক্ষ আওয়ামী লীগের পাশাপাশি অসংখ্য অদৃশ্য প্রতিপক্ষের মোকাবিলায় সজাগ ও ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, স্বৈরাচারের পতন শুধুমাত্র প্রাথমিক বিজয়, সামনে রয়েছে প্রকৃত পরীক্ষা। ফলে আত্মতুষ্টি আর সব শিথিলতা কাটিয়ে আগামীর পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে বাংলাদেশের আপামর জনগণের দলের প্রতি সমর্থন আর ভালোবাসার প্রতিদান দিতে হবে।




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!