যুক্তরাষ্ট্র থেকে বৃহস্পতিবার গভীর রাতে ঢাকায় ফিরে এসেছেন সাকিব আল হাসান। এই সাকিবের হাতে আইসিসির নিষেধাজ্ঞার অদৃশ্য বাঁধন নেই। এই সাকিব মুক্ত, গত ২৯ অক্টোবর আইসিসির দেওয়া এক বছরের নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্ত হয়েছেন। একটা মুক্তির আনন্দ তার চোখেমুখে ছড়িয়ে ছিল। ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের অ্যারাইভাল লাউঞ্জে সাংবাদিকদের প্রায় সব প্রশ্নেরই জবাব দিলেন। দীর্ঘ ভ্রমণক্লান্তি সত্ত্বেও তিনি আন্তরিক। আগের রাতে ইউটিউব ভিডিওতে যেসব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন, অনেক প্রশ্ন প্রায় একইরকম, তবুও মুখে হাসি রেখেই উত্তর দিয়ে গেলেন।
প্রথম প্রশ্নটা ফিটনেস নিয়ে। পরিবার ছেড়ে বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা অলরাউন্ডার দেশে ফিরেছেন ১৫ নভেম্বর থেকে শুরু হতে যাওয়া (সম্ভাব্য) পাঁচ দলের কর্পোরেট লিগে খেলবেন বলে। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড সভাপতি নাজমুল হাসান অনেক আগেই বলেছেন, তিনি এই টুর্নামেন্টে সাকিবকে খেলতে দেখতে চান। তবে বিসিবির প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীনের শর্ত, ফিটনেস পরীক্ষা দিয়েই সাকিবকে খেলতে হবে। সাকিব সেই শর্ত মেনেই চলবেন। তবে তার আশঙ্কা, একমাস আগে যে ফিটনেস ছিল, সেটি এখন নেই। গত সেপ্টেম্বরের প্রথম দিকে দেশে ফিরে সম্ভাব্য শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য বিকেএসপিতে অনুশীলন করেছিলেন প্রায় চার সপ্তাহ, তখন শারীরিক ফিটনেস ফিরে পেয়েছিলেন অনেকটাই। কিন্তু আইসোলেশনের ব্যাপ্তি নিয়ে টানাপোড়েনে শ্রীলঙ্কা সফরটি না হওয়ায় শেষ পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে ফিরে যেতে হয় গত মাসের প্রথমে। যুক্তরাষ্ট্রেই তার স্ত্রী আছেন তাদের দুই সন্তানকে নিয়ে। গত এপ্রিল মাসে সেখানে জন্ম হয়েছে দ্বিতীয় মেয়ে ইররাম হাসানের।
ফিটনেস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েই সামনের টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টটা পুরোপুরি খেলতে চান সাকিব। বলেছেন, আগামী জানুয়ারিতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বাংলাদেশ সফরে আসার কথা। ওই সফরের জন্য এই টুর্নামেন্টটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। টুর্নামেন্টের পুরোটা খেলতে পারলে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজের জন্য পুরো ফিটনেস ফিরে পাবেন বলেই আশা আছে। তবে নিজেকে আগের মতো জায়গায় নিয়ে যেতে তাড়াহুড়ো করতে চান না।
নিষেধাজ্ঞার সময়টাতে সারাদেশের মানুষের যে ভালোবাসা ও সমর্থন পেয়েছেন সাকিব, তাতে তিনি আপ্লুত। সেই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে চান ক্রিকেটে সমহিমায় ফিরে। আবারও বলেছেন, ‘আমি দেশের মানুষের ভালোভাসার প্রতিদান দিতে চাই।আগামী দিনগুলোতেও আপনাদের সবার সমর্থন চাই আমি।’ ভক্তরা ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানাতে ভোলেননি আইসিসির ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ে শীর্ষস্থান ফিরে পাওয়া অলরাউন্ডারকে। শুভেচ্ছা বিনিময় পর্বটা হয়েছে করোনাবিধি মেনেই।
এক জুয়াড়ির অনৈতিক প্রস্তাব পেয়েও তা আইসিসির দুর্নীতি দমন ইউনিটকে জানাতে ব্যর্থ হওয়ায় সাকিব গত বছরের ২৮ অক্টোবর ক্রিকেটে নিষিদ্ধ হন। আইসিসি মূল নিষেধাজ্ঞা ছিল দুই বছরের। তবে দোষ স্বীকার করে নেওয়ায় ও তদন্তে সহযোগিতা করায় আইসিসি তাকে এক বছরের স্থগিত সাজা দিয়ে এক বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে।
খুলনা গেজেট/এএমআর