নিখোঁজের ৮ বছরেও সন্ধান মেলেনি গৃহবধু মনোয়ারা খাতুনের। স্ত্রীর সন্ধানে পথে পথে ঘুরছেন পাগলপ্রায় স্বামী। যখন কোন স্থানে লাশ উদ্ধারের খবর পান তখনই ঘটনাস্থলে ছুটে যান তিনি। এভাবে একে একে ৮ বছর কেটে গেছে তবুও মেলেনি প্রিয়তমা স্ত্রীর সন্ধান। বসতভিটার জমির লোভে মনোয়ারাকে হত্যা করা হতে পারে এমন ধারণা করছেন স্ত্রীহারা অসহায় স্বামী। মনোয়ারা খাতুন ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডু উপজেলার দখলপুর গ্রামের মৃত পুটি মন্ডলের মেয়ে ও একই গ্রামের দিনমজুর মন্টু মিয়ার স্ত্রী।
স্বামী মন্টু মিয়া জানান, ২০১২ সালের ৭ মার্চ থেকে নিখোঁজ রয়েছেন তার স্ত্রী। দীর্ঘ ৮ বছর ধরে তাকে খুঁজে পাচ্ছেন না। এ ঘটনায় তিনি ২০১২ সালের ১৫ মার্চ হরিণাকুন্ডু থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেন যার নং ৪৭৫। তিনি অভিযোগ করেন, স্ত্রী নিখোঁজ হওয়ার পর থেকেই পার্বতিপুর মৌজার দখলপুর গ্রামে স্ত্রীর নামে থাকা বসতভিটার ৪ শতক জমি তার চাচাতো ভাইয়েরা দখল করার চেষ্টা করতে থাকে। বছরের পর বছর নিখোঁজ থাকার কারণে এক সময় স্ত্রীর চাচাতো ভাই ইবাদ আলী, মঙ্গল মন্ডল ও শহিদ ওই চার শতক জমিসহ বাড়িঘর জোরপুর্বক দখল করে নিয়েছে। এক সময় ওই বাড়িতেই স্বামী স্ত্রী হিসেবে সুখে শান্তিতে বসবাস করতেন তারা। স্ত্রীর অবর্তমানে ওই জমি ও বাড়িঘর স্বামী হিসেবে দেখভালের দায়িত্ব বর্তায় মন্টুর ওপর।
গ্রামবাসি জানায়, মন্টুর শ্বাশুড়ি জয়গুন নেছা আমৃত্যু পর্যন্ত ওই বাড়িতে ছিলেন। বৃদ্ধ বয়সে মন্টু মিয়াই তাকে সেবা করেছেন। অথচ শ্বাশুড়ির মুত্যু আর স্ত্রীর নিখোঁজের পর তাদের নামের ওই চার শতক জমির বৈধ কাগজপত্র থাকার পরেও ওই বাড়িতে যেতে দিচ্ছে না স্ত্রী মনোয়ারা খাতুনের ওই চাচাতো ভাইয়েরা।
বাড়ি ও জমিতে গেলে চাচাতো শ্যালক ইবাদ আলী, মঙ্গল মন্ডল ও শহিদ তাকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন বলেও জানান নিখোঁজের স্বামী মন্টু মিয়া।
তিনি আরও জানান, পেশায় তিনি একজন দিনমজুর। স্যালো ইঞ্জিনচালিত যানবাহন চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন। এর আগে প্রতিবেশি সাত্তার তার শ্বাশুড়ির ৪৬ শতক মুল্যবান জমি দেড়শ টাকার স্ট্যাম্পে একটি বন্ধকী চুক্তিনামা দেখিয়ে দখলের চেষ্টা করেন।
এসব অভিযোগ অস্বীকার করে মনোয়ারা খাতুনের চাচাতো ভাই মঙ্গলের ছেলে আলম বলেন, তার ফুফু খালা বাড়িতে বেড়ানোর কথা বলে পরিবারের সবার সামনে বাড়ি বের হয়ে আর ফিরে আসেননি। ফুফা মন্টু মিয়াও বাড়িতে আসেন না।
এ বিষয়ে হরিণাকুন্ডু থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লা বলেন, নিখোঁজ নারীর স্বামী বা পরিবারের কেউ কখনও থানায় যোগাযোগ বা মামলা করেনি। জিডির বিষয়টি খোঁজ নিয়ে এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
খুলনা গেজেট/এনএম