বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক হামলা নিয়ে ভারতের মূলধারার কিছু গণমাধ্যম ও দায়িত্বশীলরা অপতথ্য ছড়াচ্ছেন। এক সপ্তাহ পর্যবেক্ষণ করে গতকাল শনিবার একটি প্রতিবেদনে এ তথ্য জানায় রিউমর স্ক্যানার। তথ্য যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানটি এক্সের (সাবেক টুইটার) ৫০টি অ্যাকাউন্ট খুঁজে বের করেছে, যেখানে সাম্প্রদায়িক রূপ দিয়ে অপতথ্য প্রচার করা হয়েছে। ‘বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতার পট পরিবর্তনকে কেন্দ্র করে এক্সে সাম্প্রদায়িক অপতথ্যের ভয়াবহতা’ শিরোনামের প্রতিবেদনটিতে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়।
রিউমর স্ক্যানার বলেছে, এসব অ্যাকাউন্টে অন্তত একটি পোস্টে সাম্প্রদায়িক অপতথ্য ও ভুল তথ্য প্রচার করা হয়েছে। অ্যাকাউন্টগুলোয় ৫ থেকে ১৩ আগস্টের মধ্যে প্রচারিত পোস্টগুলো ১ কোটি ৫৪ লাখের বেশিবার দেখা হয়েছে। অপতথ্য ছড়ানো এসব অ্যাকাউন্টধারীর ৭২ শতাংশই ভারতে থাকেন।
এক হিন্দু ব্যক্তি তাঁর নিখোঁজ ছেলের সন্ধান দাবিতে মানববন্ধন করছেন– এমন দাবি করে একটি ভিডিও ভারতের মূলধারার গণমাধ্যম এশিয়ান নিউজ ইন্টারন্যাশনাল (এএনআই), এনডিটিভি, মিরর নাউয়ের এক্স অ্যাকাউন্টে প্রচার করা হয়। তবে রিউমর স্ক্যানার যাচাই করে দেখেছে, ওই ব্যক্তি মুসলমান। তাঁর নাম বাবুল হাওলাদার। তিনি ২০১৩ সাল থেকে নিখোঁজ থাকা তাঁর ছেলের সন্ধান দাবিতে এই মানববন্ধনে অংশ নিয়েছিলেন।
রিউমর স্ক্যানার বলছে, তারা যে ৫০টি এক্স অ্যাকাউন্টের একটি করে পোস্টকে এই গবেষণায় নমুনা হিসেবে গ্রহণ করেছে, তার মধ্যে ১৩টি পোস্টেই ভিন্ন ঘটনাকে সাম্প্রদায়িক রূপ দেওয়া হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ঘটেছে মুসলিম ব্যক্তিকে হিন্দু দাবিতে প্রচারের ঘটনা। এমন ১৮টি ঘটনার প্রমাণ পেয়েছে রিউমর স্ক্যানার, যা ধরন অনুযায়ী সর্বোচ্চ।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। এর পর আওয়ামী লীগের কার্যালয় ও নেতাকর্মীর ওপর হামলা এবং তাদের বাড়ি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। হামলা হয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপরও। তবে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর যে হামলার ঘটনাগুলো ঘটেছে, তা অনেক বাড়িয়ে প্রচার করা হচ্ছে। সে ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে অপতথ্য।
ভারতের ফ্যাক্টচেকার ইয়ুশা রহমান রিউমর স্ক্যানারকে বলেছেন, অপতথ্যগুলো প্রচার করছে মূলত ভারতের ধর্মীয় উগ্রবাদীরা।
খুলনা গেজেট/এইচ