পাসপোর্ট হাতে পেয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। গতকাল মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) দুপুরে তার পাসপোর্ট নবায়নের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন হয়। পরে চিকিৎসাধীন বিএনপি চেয়ারপারসনের পক্ষে তার প্রতিনিধির কাছে নবায়নকৃত মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট (এমআরপি) হস্তান্তর করা হয়। খালেদা জিয়াকে সাধারণ নাগরিকদের ব্যবহৃত সবুজ রঙের পাসপোর্ট দেয়া হয়েছে।
এর আগে ২০২১ সালের জুনে চিকিৎসার জন্য খালেদা জিয়ার বিদেশ যাওয়ার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হলে তার পাসপোর্ট নবায়নের উদ্যোগ নেয়া হয়। তড়িঘড়ি পুরনো পাসপোর্ট নবায়ন করে ডেলিভারির জন্য রেডি করে পাসপোর্ট অধিদপ্তর। কিন্তু অজ্ঞাত কারণে শেষ পর্যন্ত সরকারের তরফ থেকে খালেদা জিয়ার হাতে পাসপোর্ট না দেয়ার নির্দেশনা আসে। এমনকি পরে তার নবায়নকৃত পাসপোর্ট বাতিলও করা হয়।
ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম খান বলেন, খালেদা জিয়ার নবায়নকৃত পাসপোর্ট তার প্রতিনিধির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। এ বিষয়ে উচ্চ পর্যায় থেকে নির্দেশনা আসে। মূলত এর পরপরই দ্রুততম সময়ে পাসপোর্ট প্রিন্টিংয়ের উদ্যোগ নেয়া হয়। মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) বিকেলে তার পাসপোর্ট হস্তান্তর করা হয়।
গতকাল মঙ্গলবার (৬ আগস্ট) চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হয়। বঙ্গভবনের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে তিন বাহিনী প্রধান, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাদের সঙ্গে বৈঠকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে খালেদা জিয়াকে মুক্তি দেয়া হয়েছে।
এর আগে গত সোমবার (৫ আগস্ট) বঙ্গভবনে তিন বাহিনীর প্রধানদের উপস্থিতিতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা ও নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন রাষ্ট্রপতি। বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়াকে অবিলম্বে মুক্তির সিদ্ধান্ত হয়।
প্রসঙ্গত, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের এক দফা কর্মসূচি ঘিরে রোববার ঢাকাসহ সারাদেশে সরকার সমর্থিত নেতাকর্মী ও পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষে শতাধিক নিহতের খবর পাওয়া গেছে। এর মধ্যে সিরাজগঞ্জের এনায়েতপুর থানায় ১৩ জন ছাড়াও কুমিল্লার ইলিয়টগঞ্জে পৃথক হামলায় হাইওয়ে থানার এক পুলিশসহ মোট ১৪ জন পুলিশ সদস্য নিহত হয়েছেন।
সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোটাপ্রথা সংস্কারের দাবিতে গত জুলাইয়ের প্রথম থেকে আন্দোলন করে আসছিলেন বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা। এ অবস্থায় গত ১৫ জুলাই রাজধানী ঢাকাসহ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর দফায় দফায় হামলা চালায় ছাত্রলীগ। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন বন্ধে গুলি চালায় পুলিশ।
শিক্ষার্থীদের ওপর পুলিশ ও আওয়ামী লীগ এবং দলটির সহযোগী অঙ্গ সংগঠনের হামলায় কয়েক শতাধিক শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়। এ অবস্থায় শিক্ষার্থী ও সাধারণ মানুষের বিক্ষোভ ও আন্দোলনের মুখে ক্ষমতা ছেড়ে দেশ ছাড়েন শেখ হাসিনা। পরে দেশের দায়িত্ব সেনাবাহিনী বুঝে নেয়।
খুলনা গেজেট/এনএম