নেপালের সুরিয়া এয়ারলাইন্সের কাঠমান্ডু থেকে পোখারাগামী একটি বিমান ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভেঙে পড়েছে। ১৮ জন যাত্রী প্রাণ হারিয়েছে। বেঁচে গেছেন মাত্র একজন পাইলট।
নেপালের সিভিল এভিয়েশনের একজন কর্মকর্তা জ্ঞ্যানেন্দ্র ভুল বিবিসি নেপালিকে বলছেন বিমানটিতে দুজন ক্রু এবং ১৭ জন যাত্রী ছিলেন। বিমানটি ত্রিভুবন বিমানবন্দরের উত্তর দিকের অংশে বিধ্বস্ত হয়েছে।
বিমানটি ‘বার্ষিক মেনটেন্স কর্মসূচি’র কাজ নিয়ে কাঠমান্ডু থেকে পোখারা যাচ্ছিল।
রয়টার্স বার্তা সংস্থা সংবাদমাধ্যম ও কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে জানিয়েছে যে সুরিয়া এয়ারলাইন্সের ছোট একটি বিমান উড্ডয়নের সময় রানওয়েতে স্কিড করলে বিমানটিতে আগুন লেগে যায়।
নেপাল পুলিশের মুখপাত্র দান বাহাদুর কার্কি বিবিসিকে বলেছেন ১৮ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। একজন পাইলটকে শুধু জীবিত উদ্ধার করা গেছে।
“যে পাইলটকে উদ্ধার করা হয়েছে তিনি চোখে এবং কপালে আঘাত পেয়েছেন,” জানিয়েছেন মি. কার্কি।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তা প্রধান অর্জুন চাঁদ ঠাকুরিকে উদ্ধৃত করে রয়টার্স জানাচ্ছে বিমানের যাত্রী ১৭জন প্রকৌশলী কিছু তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে পোখারা যাচ্ছিলেন।
টেলিভিশনের ফুটেজে দমকল বাহিনীর কর্মীদের আগুন নেভাতে দেখা গেছে। ঘটনাস্থল থেকে ঘন কালো ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশে উঠতে দেখা গেছে।
“বিমানটি স্কিড করে কাঠমান্ডু বিমানবন্দরের রানওয়েচ্যুত হয়ে পাশের একটি মাঠে গিয়ে পড়লে বিমানটিতে আগুন ধরে যায় ও বিমানটি বিধ্বস্ত হয়,” রয়টার্সকে বলেছেন মি. ঠাকুরি।
অ্যাম্বুলেন্স এবং দমকলবাহিনী দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছয় এবং উদ্ধারকাজে নেপাল সেনাবাহিনীর সদস্যদের মোতায়েন করা হয়।
বিবিসির নেপালি বিভাগ কাঠমান্ডু ভ্যালির পুলিশ কর্মকর্তা দিনেশ রাজ মৈনালিকে উদ্ধৃত করে জানাচ্ছে বিমান দুর্ঘটনার খবর তারা পান সকাল ১১টা ১৫ নাগাদ।
অগ্নিদগ্ধ বিমানের ধ্বংসাবশেষ থেকে উদ্ধার করা পাইলটকে চিকিৎসার জন্য কাঠমান্ডু মেডিকেল কলেজে নেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মি. মৈনালি।
সুরিয়া এয়ারলাইন্স মূলত নেপালের অভ্যন্তরীন সেক্টরে বিমান পরিষেবা দিয়ে থাকে।
নেপালে বিমান দুর্ঘটনার রেকর্ড
নেপালে বিমান দুর্ঘটনার রেকর্ড ভাল নয়।
ইউএস বাংলা এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান ২০১৮ সালের মার্চে নেপাল থেকে বাংলাদেশ যাওয়ার সময় ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ভেঙে পড়লে ৫১ জন যাত্রী প্রাণ হারান।
রয়টার্সের খবর অনুযায়ী ২০০০ সাল থেকে নেপালে বিমান দুর্ঘটনায় প্রায় ৩৫০ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন।
এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দুর্ঘটনাটি ছিল ১৯৯২ সালে যখন পাকিস্তান ইন্টারন্যাশানাল এয়ারলাইন্সের একটি এয়ারবাস কাঠমান্ডুতে অবতরণের সময় একটি পাহাড়ে বিধ্বস্ত হয়। ঐ দুর্ঘটনায় প্রাণ হারায় ১৬৭ জন যাত্রী।
সর্বসম্প্রতি ২০২৩এর জানুয়ারিতে ইয়েতি এয়ারলাইন্সের একটি যাত্রীবাহী বিমান বিধ্বস্ত হয়ে ৭২ জন প্রাণ হারান। ইয়েতি এয়ারলাইন্সের বিমানটি কাঠমান্ডু থেকে পোখারায় যাওয়ার পর অবতরণের সময় বিধ্বস্ত হয়। সেই সময় বিমানটিতে আগুন ধরে যায়।
এটিআর ৭২ মডেলের দুই ইঞ্জিনের বিমানটিতে মোট ৬৮ জন যাত্রী ছিলেন, যাদের ১৫ জনই ছিলেন বিদেশি নাগরিক। বাকি চারজন ছিলেন বিমানটির কর্মী।
খুলনা গেজেট/এএজে