বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী বলেছেন, বেগম খালেদা জিয়া মুক্তি পেলে দেশের গণতন্ত্র মুক্তি পাবে। জনগণ মুক্তি পাবে। সরকার উপর্যুপরি মামলা ও সাজা দিয়ে খালেদা জিয়াকে বন্দি করে রেখেছে। তিনি আওয়ামী লীগ নেত্রীর প্রতিহিংসার শিকার। তারা খালেদা জিয়াকে জিম্মি করে ক্ষমতা দখল করে আছে। খালেদা জিয়া অসুস্থ ও মুমূর্ষু অবস্থায় আছেন। তাকে স্লো পয়জনিং দিয়ে হত্যার চেষ্টা করা হচ্ছে। এর দায়ভার বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকেই বহন করতে হবে।
সোমবার (০১জুলাই) বিকাল ৪টায় বিএনপির চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তির দাবিতে কেন্দ্রীয় কর্মসুচির অংশ হিসেবে কেডি ঘোষ রোডস্থ বিএনপি কার্যালয়ের সামনে খুলনা মহানগর ও জেলা বিএনপির সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি আগামীতে আন্দোলনের জন্য নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ থাকার আহবান জানিয়ে বলেন, আন্দোলনের জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি গ্রহণ করতে হবে। ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মধ্য দিয়েই দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে হবে। খালেদা জিয়া মুক্ত থাকলে দেশের বুকের ওপর দিয়ে রেললাইনের অবৈধ চুক্তি হতো না। দেশে দুর্নীতি-দুঃশাসন হতো না। স্বৈরশাসন হতো না। তিনি মুক্ত থাকলে সার্বজনীন নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণের সরকার ক্ষমতায় থাকতো। ১৯৭২ সালে ভারতের সাথে স্বাক্ষরিত ২৫ বছরের গোলামী চুক্তির কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি আরো বলেন ৫২ বছর পর সে ধারাবাহিকতায় গত ২২ জুন ভারতের সাথে সমঝোতার আড়ালে যেসব চুক্তি করা হলো তা বাংলাদেশকে আজীবনের জন্য ভারতের গোলামে পরিণত করবে। এর ফলে বাংলাদেশের জাতীয় নিরাপত্তা বিপন্ন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এসব চুক্তি-স্মারকের মাধ্যমে আমাদের দেশের প্রতিরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিকে ভারতের জাতীয় প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার অংশে পরিণত করা হয়েছে, যা খুবই বিপজ্জনক এবং দেশের স্বাধীনতার প্রতি হুমকি। এটি শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান ও জোটনিরপেক্ষ নীতির পরিপন্থী। এসব সমঝোতা চুক্তির মাধ্যমে শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আঞ্চলিক ভূ-রাজনীতিতে নিরাপত্তা কৌশলগত ‘বাফার স্টেট’ হিসেবে ভারতকে ব্যবহারের সুযোগ করে দিতে চান। এর ফলে বাংলাদেশ নিশ্চিতভাবে আঞ্চলিক ভূরাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার জটিলতার মধ্যে জড়িয়ে পড়বে। এ্যানী বলেন, আন্দোলনের মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা ছাড়া আর কোনো বিকল্প পথ আমাদের সামনে নেই।
বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক বিএনপি (ভারপ্রাপ্ত) অনিন্দ্য ইসলাম অমিত। এ অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছেন। আপনাদের ত্যাগ দেশের গণতান্ত্রিক ইতিহাসে স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে। কিন্তু এটা এখন পর্যন্ত পর্যাপ্ত নয়। আমাদের রাজপথে তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ভয়ে মারা যাওয়ার চাইতে সাহস করে প্রতিরোধ গড়ে তোলাই হচ্ছে একমাত্র কাজ।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, আজকে অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে লুটপাট করে বিদেশে টাকা পাচার করে দিয়েছে। সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান আজকে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। অবিশ্বাস্য লাগে যখন দেখি পুলিশ বাহিনীর প্রধান হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক, এনবিআরের কর্মকর্তা কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক। সব এখন বেরিয়ে আসছে। কিন্তু আরও যারা বড় বড় রাঘব-বোয়াল, যারা এই চুরির হোতা তাদেরকে এখনো ধরা হচ্ছে না।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল বলেন, আজকে অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দিয়েছে। ব্যাংকগুলোকে লুটপাট করে বিদেশে টাকা পাচার করে দিয়েছে। সাবেক সেনাবাহিনীর প্রধান আজকে দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত। অবিশ্বাস্য লাগে যখন দেখি পুলিশ বাহিনীর প্রধান হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক, এনবিআরের কর্মকর্তা কয়েক হাজার কোটি টাকার মালিক। সব এখন বেরিয়ে আসছে। কিন্তু আরও যারা বড় বড় রাঘব-বোয়াল, যারা এই চুরির হোতা তাদেরকে এখনো ধরা হচ্ছে না।
সমাবেশে বিশেষ বক্তা ছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির গবেষনা বিষয়ক সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহ সাংগঠনিক সম্পাদক জয়ন্ত কুমার কুন্ডু, সহ ত্রান ও পূনর্বাসন বিষয়ক সম্পাদক নেওয়াজ হালিমা আরলি, সহ তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক আমিরুজ্জামান শিমুল। খুলনা মহানগর বিএনপির আহবায়ক এড. শফিকুল আলম মনার সভাপতিত্বে এবং মহানগর বিএনপির সদস্য সচিব শফিকুল আলম তুহিনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন খুলনা জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আমির এজাজ খান, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব মনিরুল হাসান বাপ্পী, আবু হোসেন বাবু, বেগম রেহানা ঈসা, কে এম হুমায়ুন করীর, ডাঃ আব্দুল মজিদ, যুবদলের নাজমুল হুদা চৌধুরী সাগর, শামীম কবির, স্বেচ্ছাসেবক দলের একরামুল হক হেলাল, তৈয়েবুর রহমান, জাসাসের নুর ইসলাম বাচ্চু, শহিদুল ইসলাম, মহিলা দলের এলিজা খানম এলিজা, তসলিমা খাতুন ছন্দা, শ্রমিকদলের শফিকুল ইসলাম শফি, খান ইসমাইল হোসেন, কৃষকদলের আক্তারুজ্জামান সজিব তালুকদার, মোল্লা কবির হোসেন, ছাত্রদলের ইশতিয়াক আহমেদ ইস্তি, আব্দুল মান্নান মিস্ত্রি প্রমূখ। হাফেজ মাওলানা জাহিদুল ইসলামের পবিত্র কোরআন তেলওয়াতের মাধ্যমে সমাবেশের কার্যক্রওম শুরু হয়।
সমাবেশ শুরুর আগে বিভিন্ন থানা, উপজেলা, ওয়ার্ড বিএনপি অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা মিছিল সহকারে সমাবেশ স্থলে উপস্থিত হয়। এসময় তারা সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বিকাল ৪ টার মধ্যে কেডি ঘোষ রোড, হেলাতালা, স্যার ইকবাল রোড, ক্লে রোড কানায় কানায় পুর্ন হয়ে যায়।
খুলনা গেজেট /কেডি