খুলনা, বাংলাদেশ | ৭ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২২ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ২ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৪৫৮

অবশেষে ৫৩দিন পর খুলছে কুবি

গেজেট ডেস্ক

কুবি

উপাচার্য-শিক্ষক সমিতি দ্বন্দ্বে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ হওয়ার ৫৩দিন পর রবিবার (২৩ জুন) থেকে শ্রেণি কার্যক্রমে ফিরেছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (কুবি)। ক্যাম্পাসে ফিরতে পারায় শিক্ষার্থীরা ছিলেন বেশ উচ্ছ্বসিত। রবিবার সকাল থেকে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আসা শুরু করেন। নিয়মানুযায়ী চলতে দেখা যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহনও।

বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী আবদুল কাইউম জানান, ‘ক্লাসে ফিরেছি। এটাই আমাদের আনন্দ। আমরা সেশনজট ও বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি আর চাই না।’

আরিফুর রহমান নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ‘দীর্ঘ বন্ধের কারণে আমাদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। এবার আশা করি শিক্ষকরা ক্লাসে মনোযোগী হয়ে আমাদের ক্ষতি পুষিয়ে দিতে পারবেন।’

এর আগে ৩০ এপ্রিল ৯৩ তম সিন্ডিকেট সভায় উপাচার্যের সঙ্গে শিক্ষক সমিতির দ্বন্দ্ব ও শিক্ষক আন্দোলনে অস্থিরতার কারণে অনির্দিষ্টকালের জন্য কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) মো. আমিরুল হক চৌধুরী বলেন, ৫ জুন রাতে ৯৫তম জরুরি সিন্ডিকেট সভা শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ওই সভায় বলা হয় ৬ জুন থেকে ২০ জুন পর্যন্ত ঈদুল আজহা ও গ্রীষ্মকালীন ছুটি।

২১ ও ২২ জুন শুক্র-শনিবার। তাই ২৩ জুন থেকে ক্লাস শুরু হবে। অফিস খোলা হবে ৯ জুন থেকে। সেই সিদ্ধান্তে ৯ জুন থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক কার্যক্রম শুরু হয়।

এদিকে ২১ জুন শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক (ভারপ্রাপ্ত) ড. মাহমুদুল হাছান স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষকরা ক্লাসে ফিরবেন বলে জানানো হয়।

তবে সকল দাবি আদায়ের পূর্ব পর্যন্ত শিক্ষকরা দুপুর ১২ টা থেকে ২ টা পর্যন্ত দুই ঘণ্টার কর্মবিরতিও পালন করবেন।
এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আবু তাহের বলেন, ‘আমরা সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্ত মেনে সশরীরে ক্লাস নিচ্ছি। প্রয়োজনে শিক্ষার্থীদের স্বার্থে অনলাইনে অতিরিক্ত ক্লাস নিয়ে হলেও তাদের ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, ‘আমাদের সন্তানদের অনেক ক্ষতি হয়েছে। আর যেন ক্ষতি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। অনেকে বলছেন শনিবারও প্রয়োজনে ক্লাস চালিয়ে নেবেন। আমি চাইব দিনের পুরোসময়ও যাতে ঠিকঠাক মতো ক্লাস হয়।’ শিক্ষক সমিতির দাবির বিষয়ে তিনি বলেন, তাদের অনেক দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে।

এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি বিকাল ৪টায় উপাচার্যের দপ্তরে শিক্ষক সমিতির নবনির্বাচিত সদস্যদের সঙ্গে বিভিন্ন দাবি নিয়ে উপাচার্যের বাকবিতণ্ডা হয়। ওই সময় ছাত্রলীগের সাবেক নেতারা ও কর্মকর্তা সমিতির এক নেতা শিক্ষকদের হেনস্তা করেন বলে অভিযোগ তোলেন শিক্ষকরা।

এ ঘটনার প্রতিবাদে শিক্ষক সমিতি তিন দফা দাবি জানায়। পরবর্তী সময়ে দাবি আদায় না হলে ১৯ মার্চ থেকে ২৭ মার্চ পর্যন্ত ক্লাস বর্জন কর্মসূচি পালন করে শিক্ষক সমিতি। এরপর ঈদুল ফিতরের বন্ধ শেষে বিশ্ববিদ্যালয় খুললে তিন দিন ক্লাস হওয়ার পর আবারও আন্দোলন শুরু হয়। এক পর্যায়ে ২৮ এপ্রিল দুপুরে উপাচার্য, তার অনুসারী কিছু শিক্ষক ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষক সমিতির নেতারা ধাক্কাধাক্কি, কিলঘুষি ও হামলায় জড়িয়ে পড়েন।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে শিক্ষক সমিতি উপাচার্য ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতাসহ ২০ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও শিক্ষক সমিতির ছয়জনের নামে পাল্টা অভিযোগ দায়ের করেন। এমন পরিস্থিতিতে ৩০ এপ্রিল রাতে জরুরি সিন্ডিকেট সভা ডেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় ও হলগুলো বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। একই সঙ্গে শিক্ষকদের দাবি দাওয়া ও ২৮ এপ্রিলের ঘটনা নিয়ে দুটি তদন্ত কমিটি গঠিত হয়।

খুলনা গেজেট/কেডি




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!