ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’-এর প্রভাবে ২৪ থেকে ২৭ মে পর্যন্ত বাংলাদেশের বেশির ভাগ জেলায় বৃষ্টিপাতের প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। ২৫ মে সন্ধ্যার পর থেকে ২৬ মে সন্ধ্যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের অন্ধ্রপ্রদেশ ও উড়িষ্যা রাজ্য অথবা বাংলাদেশের উপকূলে আঘাত হানবে বলে আশঙ্কা করছেন আবহাওয়াবিদরা।
কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ুবিষয়ক পিএইচডি গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ বলেন, আমেরিকান ও ইউরোপিয়ান আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল বিশ্লেষণ করে আশঙ্কা করা হচ্ছে, রেমাল ২১ ও ২২ মের মধ্যে লঘুচাপের শক্তি অর্জন করতে পারে। ২২ ও ২৩ মের মধ্যে নিম্নচাপ ও গভীর নিম্নচাপের শক্তি অর্জন করতে পারে এবং ২৪ মে পূর্ণাঙ্গ ঘূর্ণিঝড়ের শক্তি অর্জন করতে পারে।
তিনি বলেন, ঘূর্ণিঝড়টি যদি ভারতের ওই দুই রাজ্যের মধ্যবর্তী উপকূলে আঘাত করে, তাহলে স্থলভাগে আঘাতের সম্ভাব্য সময় হবে ২৫ মে সন্ধ্যার পর থেকে ২৬ মে সন্ধ্যার মধ্যে। পক্ষান্তরে ঘূর্ণিঝড়টি যদি বাংলাদেশের বরিশাল ও খুলনা বিভাগ এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মধ্যবর্তী স্থানের উপকূল দিয়ে স্থলভাগে আঘাত করে, তবে সম্ভাব্য সময় হবে ২৬ মে দুপুর ১২টার পর থেকে ২৭ মে সন্ধ্যার মধ্যে। রেমালের প্রভাবে বাংলাদেশে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ২৪ মে থেকে ২৮ মে পর্যন্ত। বাংলাদেশের ওপর মাঝারি থেকে ভারি বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে ২৫, ২৬ ও ২৭ মে। অপেক্ষাকৃত হালকা বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে ২৪ ও ২৮ মে। ২৩ মে থেকেই সমুদ্র উত্তাল হয়ে উঠতে পারে।
বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের দিকে ঘূর্ণিঝড়টি ধেয়ে আসছে বলে খবর প্রকাশ করেছে ভারতীয় গণমাধ্যম। দেশটির আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, চলতি মাসের শেষের দিকে উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে ঘূর্ণিঝড়টি।
তবে বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড়টি সৃষ্টি হওয়ার আগ পর্যন্ত এর গতিবিধি ও প্রভাব সম্পর্কে এখনই কিছু জানাতে পারেনি বাংলাদেশের আবহাওয়া অধিদপ্তর। রাষ্ট্রীয় সংস্থাটির পক্ষ থেকে সার্বক্ষণিক নজর রাখা হচ্ছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মো. তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, সাধারণত মে ও জুন মাসে বঙ্গোপসাগরে সাইক্লোন বা ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়। এটা বর্ষাপূর্ব ও বর্ষা-পরবর্তী সময়ে হয়ে থাকে। এরই ধারাবাহিকতায় আমরা আশঙ্কা করছি, ২০ তারিখের পরবর্তী সময়ে বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ তৈরি হতে পারে। এটি আরও ঘনীভূত হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। লঘুচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত না হওয়া পর্যন্ত এর গতিবিধি ও প্রভাব সম্পর্কে কিছুই বলা যাবে না বলে জানিয়েছেন তিনি।
তরিফুল নেওয়াজ বলেন, যেসব প্যারামিটারের ওপর ভিত্তি করে এর গতিবিধি ও প্রভাব পরিমাপ করা যায়, আমরা সেসব বিষয়ে নজর রাখছি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ বিষয়ে হালনাগাদ জানানো হবে।
আবহাওয়াবিদ ওমর ফারুক বলেন, ২২ বা ২৩ মের দিকে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ তৈরির সম্ভাবনা আছে। এখন পর্যন্ত এটার মুভমেন্টটা ভারতের উড়িষ্যার দিকে। তৈরি না হওয়ার আগ পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না বাংলাদেশে আঘাত হানবে কিনা, তবে ২৭ তারিখের দিকে উপকূলে আসতে পারে।
খুলনা গেজেট/এইচ