৫০০ টাকা কেজি দরে কোরবানীর গরু বিক্রির ঘোষণা দিয়ে আগেই আলোচনায় এসেছিল নগরীর তেলিগাতী দক্ষিণপাড়ায় অবস্থিত ফাইজার নামে একটি গরুর খামার। বাজারে মাংসের দামের সঙ্গে সমন্বয় রাখতে গরুর দাম আরও ৫০ টাকা কমিয়েছেন তিনি। খামারের কোরবানীর গরু এখন বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা কেজিতে।
খামারের মালিক মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান খুলনা গেজেটকে বলেন, ৫০০ টাকা কেজি দরে গরু বিক্রি করলে গরুর ভুরি চামড়াসহ উচ্ছিষ্ট অংশ বাদ দিলে মাংসের দাম কেজি প্রতি ৮০০ টাকা পড়ে। বর্তমানে বাজারে গরুর মাংশ বিক্রি হচ্ছে ৭০০/৭৫০ টাকা কেজিতে। খামার থেকে ৪৫০ কেজিতে গরু বিক্রি করলে উচ্ছিষ্ট অংশ বাদ দিয়ে মাংসের দাম পড়ে কেজি প্রতি ৭০০ টাকা। যদিও কোরবানীর গরুর উদ্দেশ্যে মাংস বিক্রি থাকে না। তারপরও বাজারদরের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ করতে দাম কমালাম। দাম কমানোর ফলে বুকিংও বেড়ে গেছে। ইতিমধ্যে ১০ জন ক্রেতা তাদের পছন্দের কোরবানির গরু ক্রয়ের বুকিং দিয়েছেন।
এর আগে মধ্য এপ্রিল থেকে নগরীর আড়ংঘাটা থানাধীন তেলিগাতী দক্ষিণপাড়ায় অবস্থিত ফাইজার নামে একটি গরুর খামারে কেজি প্রতি ৫০০ টাকা দরে কোরবানির গরু বিক্রির কার্যক্রম শুরু হয়। এ পদ্ধতিতে ক্রেতাকে প্রথমে নগদ ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম দিয়ে তার পছন্দের কোরবানির গরু ক্রয়ের বুকিং দিতে হবে। বুকিংকৃত পশুর যাবতীয় দায়ভার খামারের মালিক বহন করবেন।
বুকিং দিয়ে একজন ক্রেতাকে গরু ক্রয় নিশ্চিত করতে হবে। বুকিং দেওয়ার পর কোরবানির ঈদের দিন সকাল পর্যন্ত খামারে গরু রাখার নিশ্চয়তা রয়েছে। ক্রেতার ইচ্ছানুযায়ী যে কোনো দিন ডিজিটাল ব্রিজ স্কেলে গরু ওজন দিয়ে সাড়ে ৪’শ টাকা কেজি দরে মূল্য পরিশোধ করার পর ক্রেতা কোরবানির উদ্দেশ্যে তার গরু নিয়ে যেতে পারবেন। বুকিংকৃত গরু ক্রেতা ঈদের ২/১ দিন পূর্বে অথবা ঈদের দিন সকালে কোরবানির উদ্দেশ্যে খামার থেকে নিয়ে যেতে পারবেন। এক্ষেত্রে তাকে কোন বাড়তি খরচ বহন করতে হবে না।
খুলনা মহানগরীর ভেতরে নিজস্ব পরিবহন ব্যবস্থার মাধ্যমে নিজ খরচে খামারের মালিক গরু ডেলিভারি করবেন। এছাড়াও কোন কারণে বুকিংকৃত গরুর কোন দুর্ঘটনা ঘটলে সেক্ষেত্রে ক্রেতা তার বুকিংকৃত সম্পূর্ণ টাকা ফেরত পাবেন। গত তিন বছর ধরে খামারটিতে এ পদ্ধতিতে কোরবানির গরু বিক্রি হচ্ছে। কোরবানির গরু বিক্রির এ পদ্ধতি ইতিমধ্যে বেশ সাড়া জাগিয়েছে।
খামারের মালিক মোস্তাফিজুর রহমান খুলনা গেজেটকে বলেন, মুনাফার আশায় নয় অনেকটা সেবার মানসিকতা নিয়ে গত ৩ বছর ধরে এ পদ্ধতিতে কোরবানির গরু বিক্রি করছি। আমার লাভ হচ্ছে সারা বছর অল্প অল্প বিনিয়োগ করে একসঙ্গে বিনিয়োগকৃত টাকাগুলো বের করতে পারি।
তিনি বলেন, প্রতিবছর কোরবানির ঈদের পর হাট থেকে গরুর বাচ্চা ক্রয় করে এনে সেগুলোর পরিচর্যা শুরু করি। গরু গুলোর খাওয়া দাওয়া এবং পরিচর্যার জন্য ১৬ জন লোক রয়েছে। সম্পূর্ণ অর্গানিক উপায়ে গরু গুলোকে খাওয়ানো হয়। বর্তমানে খামারে দেশীয় প্রজাতির ৯৩ টি গরু রয়েছে। সর্বনিম্ন ৪’শ কেজি থেকে সর্বোচ্চ ১ হাজার কেজি ওজনের গরু রয়েছে। আরো কিছু গরু খামারে উঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে। নিজস্ব জমিতে লাগানো ঘাস, গমের ভূষি ও কুড়া মিক্সিং করে বস্তায় ভরে রাখা হয়। এই মিক্সিং খাবারগুলো গরুগুলোকে সিডিউল অনুযায়ী খাওয়ানো হয়। খামারে গরু মোটাতাজাকরণের কোন কেমিক্যাল বা ঔষধ ব্যবহার করা হয় না।
খুলনা গেজেট/এইচ