খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ ফাল্গুন, ১৪৩১ | ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

Breaking News

  মানবতাবিরোধী অপরাধ : জামায়াত নেতা আজহারের রিভিউ শুনানি মঙ্গলবার
  খালেদা জিয়াকে খালাসের বিরুদ্ধে আবেদনের শুনানি ২ মার্চ
  প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করতে ঢাকার পথে কুয়েটের ৮০ শিক্ষার্থী

রাজধানীর তিন হাসপাতালে র‍্যাবের অভিযান, তিন পরিচালকসহ ছয়জনের কারাদণ্ড

গেজেট ডেস্ক

রাজধানীর মোহাম্মদপুর ও শ্যামলী এলাকায় সনদ ছাড়া চিকিৎসা প্রদান, সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে আনা এবং অপচিকিৎসা দেয়ার অভিযোগে তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছে র‍্যাব। বুধবার রাত ১০টা থেকে আজ বৃহস্পতিবার (২৯ অক্টোবর) ভোর পর্যন্ত চালানো এই অভিযানে হাসপাতালের মালিক ও পরিচালকসহ মোট ছয়জনকে কারাদণ্ডাদেশ দিয়েছেন র‍্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।

রাত ১০টা থেকে ক্রিসেন্ট হাসপাতাল, মক্কা-মদিনা হাসপাতাল ও নুরজাহান অর্থপেডিক্স হাসপাতালে পাঁচ ঘণ্টার অভিযান শেষে র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু একথা জানান। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর ও র‍্যাব-২ এর সহযোগিতায় অভিযানটি পরিচালিত হয়।

পলাশ কুমার বসু বলেন, ক্রিসেন্ট হাসপাতালের পরিচালক হাজি মোহাম্মদ আবুল হোসেন (৫০)। লেখাপড়া করেছেন এইচএসসি পর্যন্ত। একাধারে তিনি ক্রিসেন্ট হাসপাতালের পরিচালক ও চিকিৎসক। তিনি চিকিৎসাসেবা দিলেও তাঁর কাছে রোগী আসেন না। বরং তিনি দালাল নিয়োগ করেছেন সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে আনার জন্য। রোগীদের ভাঙা হাত-পায়ের এক্স-রে দেখে অপারেশনের সিদ্ধান্ত তিনি নিজেই দেন। এছাড়া ক্রিসেন্ট হাসপাতালের লাইসেন্সের মেয়াদ উত্তীর্ণ হয়েছে আরো চার মাস আগে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে আবুল হোসেনকে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ ও হাসপাতালটিকে সতর্ক করা হয়েছে।

পলাশ কুমার বসু জানান, মোহাম্মদপুর থানাধীন বাবর রোডে হাসপাতালে দালাল সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে থেকে রোগী ভাগিয়ে নিয়ে এসে কম খরচে উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়। তারা রোগী আনার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সরকারি হাসপাতাল সম্পর্কে ভুল তথ্য দেওয়া। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ঢাকায় সরকারি হাসপাতালে সাধারণ মানুষ আসে চিকিৎসা নিতে। তারা বেশিরভাগই অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল। তারাই এই সব দালাল চক্রের খপ্পরে পড়েন বেশি।

র‍্যাবের এই নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, অভিযানের শুরুতেই মক্কা-মদিনা হাসপাতালে অভিযান চালানো হয়। সেখানে পরিচালক ও মালিক নূর নবীর কোনো ধরনের চিকিৎসা প্রদানের সনদ বা অনুমোদন নেই। তিনি তাঁর রুমে বসে রোগী দেখছেন এবং তাদের ব্যবস্থাপত্র দিচ্ছেন। হাত ভাঙ্গাসহ বিভিন্ন গুরুতর আহত যে রোগীরা আসছেন তাদেরকে অপারেশন করার জন্য বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন। যা তিনি কোনোভাবেই দিতে পারেন না।

এ অপরাধে মক্কা-মদিনা হাসপাতালের পরিচালক নূর নবীকে এক বছরের কারাদণ্ডসহ আনোয়ার হোসেন কালু ও তাঁর সহযোগী আবদুর রশিদকে ছয় মাস করে সাজা দেন র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট। সেই সঙ্গে মক্কা-মদিনা হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়।

পলাশ কুমার বসু বলেন, নূরজাহান অর্থপেডিক্স হাসপাতালের একটি চক্র সরকারি হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে আনেন। উন্নত চিকিৎসা দেওয়ার কথা বললেও অপরিষ্কার ও ফ্লোরে রক্ত মাখা কাপড় ও ওয়ার্ড বয়কে দিয়ে অপারেশন করানো হতো। এই অভিযোগে হাসপাতালটির পরিচালক বাবুল হোসেনকে এক বছরের কারাদণ্ডাদেশ ও ওয়ার্ড বয় জাহাঙ্গীর হোসেনকে দুই বছরের কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়। জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে অপারেশনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। পাশাপাশি হাসপাতালটিকে সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে।

র‍্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বলেন, আমরা চাই মানুষের কষ্টার্জিত টাকা দিয়ে এমন এইচএসসি পাস ভুয়া চিকিৎসকের কাছ থেকে চিকিৎসার নামে প্রতারিত না হন। এমন অপচিকিৎসা মানুষের অর্থ ও জীবনের জন্য খুবই বিপজ্জনক। সেজন্য জনস্বার্থে দুটি হাসপাতাল সিলগালা করা হয়েছে। সিলগালা করে টোটাল রিপোর্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কর্মকর্তা আছেন, তাঁর মাধ্যমে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের পাঠানো হবে। যাতে করে তাদের লাইসেন্স বাতিল করা হয়।

 

খুলনা গেজেট/এআইএন




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!