এক স্থান থেকে ৩৭৫ বছরে একবার দেখার সুযোগ ঘটে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ। তাই ১৮ মাস পর পর হওয়া সূর্যগ্রহণ স্বাভাবিক হলেও বিরল এবং একই সঙ্গে মহাজাগতিক ঘটনা পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ। যা আর মাত্র কিছুক্ষণ পর দেখার সাক্ষী হতে চলেছে আমেরিকা, কানাডা ও মেক্সিকো, পশ্চিম ইউরোপ প্যাসিফিক, আটলান্টিক, আর্কটিক, আয়ারল্যান্ড এবং ইংল্যান্ডের উত্তর পশ্চিম অঞ্চলের জণগণ।
আসন্ন সূর্যগ্রহণকে কেন্দ্র করে তাই এরইমধ্যে তৈরি হয়েছে উত্তেজনা। এদিকে নাসা জানিয়েছে, এবারের বিরল পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ শুরু হবে প্রশান্ত মহাসাগরে আর শেষ হবে আটলান্টিকে।
জানা গেছে, এবারের পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণে সূর্যের লুকানো একটি অংশ প্রকাশ পাবে যা সৌরবলয়ের কাছাকাছি আসবে। চাঁদ স্বাভাবিকের চেয়ে আকারে বড় দেখাবে। কারণ পূর্ণগ্রাস সূর্য গ্রহণের সময় চাঁদ পৃথিবীর খুব কাছাকাছি অবস্থান করবে।
চমকে যাবার মতো তথ্য হলো, এবারের পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের আশেপাশে দুইটি গ্রহ এবং একটি ধুমকেতু দেখা যাবে বলে মনে করছেন নাসা বিশেষজ্ঞরা।
এরপরই হতে পারে ৩৬০ ডিগ্রিতে সূর্যাস্ত। তাই গ্রহণের চূড়ান্ত সময়ে সূর্য পুরোপুরি ঘূর্ণায়মান চাঁদের পেছনে ঢাকা পড়ে যাবে। এ কারণে দিনের বেলাতেই ঠাণ্ডা বাতাস আর রাতের অন্ধকার নামবে পৃথিবীতে। বিভ্রান্তে নিশাচর প্রাণিরা এ সময় সক্রিয় হয়ে উঠবে।
শুধু তাই নয়, ভিনগ্রহীরা এ পৃথিবীতে আসলে কী হয়, সিনেমায় সে দৃশ্য যারা দেখেছেন এবার তারা বাস্তবে সেই অনুভূতির সাক্ষী হবেন। নাসা বলছে, এবারের পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় পৃথিবীর একটি অংশ কিছু সময়ের জন্য পুরোপুরি অন্ধকারে ঢেকে যাবে।
সেই সঙ্গে মোবাইল নেটওয়ার্কের সংযোগও বন্ধ হতে পারে। এ সময় মোবাইলে শুরু হতে পারে এলার্ট টোন। তবে জরুরি ওই অবস্থা মোকাবিলা করতে পুরোপুরি প্রস্তুত রয়েছে মোবাইল নেটওয়ার্ক সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানও।
কেন এমনটা ঘটবে এ বিষয়ে আমেরিকান সংবাদমাধ্যম সিএনএন-এ প্রকাশিত এক প্রতিবেদন বলছে, যেসব স্থানে পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে সেখানে মানুষ মহাজাগতিক দৃশ্য মোবাইলে ক্যাপচার করতে শুরু করবে। এতে একইসঙ্গে এত মানুষের সোশ্যাল মিডিয়া, লাইভস্ট্রিম এবং ভিডিও কল ব্যবহার করার কারণে নেটওয়ার্ক অবকাঠামোতে বাড়তি চাপ সৃষ্টি করবে। এতে সাময়িকভাবে নেটওয়ার্কের সংযোগ বিচ্ছিন্ন হতে পারে।
তবে আমেরিকার মোবাইল নেটওয়ার্কের সংশ্লিষ্ট ভেরিজনের মুখপাত্র ক্রিস সেরিকো বলেন, পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় নেটওয়ার্ক ব্যবহারে মানুষ যত বেশি হবে, সেল সংযোগ খুঁজে পাওয়া ততই বেশি কঠিন হতে পারে। তবে আমাদের নেটওয়ার্কে বছরের প্রথম পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের কোনো প্রভাব পড়বে না আশা করি, প্রয়োজনীয় জনবল ও সিস্টেম নিয়ে আমরা মহাজাগতিক এ সময়ের সাক্ষী হতে এবং তা ছড়িয়ে দিতে সবার পাশে আছি।
প্রসঙ্গত, আগামী ৮ এপ্রিলের পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণের সময় রাত ০৯ টা ১২ মিনিট থেকে রাত ০১ টা ২৫ মিনিট মধ্যরাত পর্যন্ত চলবে। এই সূর্যগ্রহণের মোট সময়কাল ৪ ঘণ্টা ২৫ মিনিট স্থায়ী হবে। বাংলাদেশ থেকে এ পূর্ণগ্রাস সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে না। বিরল এ সূর্যগ্রহণ ১৯৭০ সালে ঘটেছিল। আবার ঘটবে ৫৪ বছর পর ২০৭৮ সালে।
খুলনা গেজেট/এএজে