খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গুতে ১০ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ৮৮৬

নারী ফুটবলারদের বাফুফের ‘শুভঙ্করের’ ফাঁকি!

ক্রীড়া প্রতিবেদক

২০২২ সালে সাবিনারা সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। চলতি বছর অক্টোবরে সেই ট্রফি ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ সাবিনাদের। অথচ নতুন বছরের প্রথম চার মাসের মধ্যে কোনো ম্যাচই খেলার সুযোগ নেই সিনিয়র নারী ফুটবল দলের।

এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহে মিয়ানমার সফরে যাওয়ার কথা ছিল সাবিনাদের। সেই সফর বাতিল হওয়ায় খেলোয়াড়রা ছুটি পেয়ে যার যার বাড়িতে। আজ নিজ জেলা সাতক্ষীরা থেকে জাতীয় দলের অধিনায়ক সাবিনা খাতুন বলেন, ‘মেয়েদের পক্ষ থেকে ফেডারেশনের কাছে চাওয়া সাফের আগে অন্তত ৫-৬ টা ম্যাচ খেলার সুযোগ। সাফের আগে ম্যাচগুলো না খেলতে পারলে আমাদের জন্য শিরোপা লড়াইটা দূরহই হবে।’ দূরহ হওয়ার কারণটা ব্যাখ্যাও দিয়েছেন জাতীয় দলের অধিনায়ক, ‘এমনিতেই দক্ষিণ এশিয়ায় ভারত ও নেপাল নারী ফুটবলে শক্তিশালী। শুনছি, এবার নাকি ছেলেদের মতো নারী সাফেও বাইরের দেশ আসতে পারে ফলে তখন প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরো বাড়তে পারে।’

অক্টোবরে সাফ টুর্নামেন্টের আগে নারী ফিফা উইন্ডো রয়েছে আর মাত্র দু’টি। ২৭ মে- ৪ জুন এবং ৮-১৬ জুলাই। সাফের প্রস্তুতির জন্য ফিফা উইন্ডোতে ম্যাচ খেলা প্রয়োজন। গত বছর আগস্ট-সেপ্টেম্বরে চীনের হাংজুতে এশিয়ান গেমস খেলার পর বাংলাদেশ শুধুমাত্র ডিসেম্বরে সিঙ্গাপুরের বিপক্ষে দুই ম্যাচের হোম সিরিজ খেলেছে। চলতি বছর জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি ও এপ্রিল তিনটি নারী ফিফা উইন্ডোর কোনোটাই কাজে লাগাতে পারেনি বাফুফে।

জানুয়ারিতে সৌদি, ফেব্রুয়ারিতে ফিলিস্তিন ঢাকায় এসে এবং এপ্রিলে বাংলাদেশ মিয়ানমারে গিয়ে খেলার কথা থাকলেও কোনোটিই হয়নি। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির উইন্ডোতে সফরকারী দল চূড়ান্ত কথা দিয়েও আসেনি। আর এপ্রিল উইন্ডোতে বাংলাদেশ-মিয়ানমার দুই ফেডারেশন সম্মত থাকলেও বাংলাদেশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এই মুহূর্তে সফরে যেতে নিরুৎসাহিত করেছে। গত বছর অক্টোবরে লেবানন সফর বাতিল হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের অস্থিরতায়।

গত কয়েক মাসে প্রতি উইন্ডোর আগে বাফুফের নারী উইংয়ের চেয়ারম্যান মাহফুজা আক্তার কিরণ প্রতিপক্ষ দলের নাম ঘোষণা করেন। কিছু দিন পর আবার তিনিই না আসার খবর নিশ্চিত করেন। এশিয়ার মধ্যে নারী ফুটবলে উন্নত ও উন্নয়নশীল অনেক দেশই রয়েছে। বাফুফে সেই সকল দেশকে আমন্ত্রণ বা যাওয়ার চেষ্টা সেভাবে না করে যুদ্ধ-বিধ্বস্ত, রাজনৈতিক সমস্যা প্রবণ দেশের সঙ্গেই সাবিনাদের খেলা ঠিক করেছে সাম্প্রতিক সময়ে।

প্রীতি ম্যাচ দেশের বাইরে খেলতে যাওয়া অথবা দেশে খেলা উভয় ক্ষেত্রেই কয়েক লাখ টাকা ব্যয়ের ব্যাপার। ফুটবলসংশ্লিষ্ট অনেকের অনুমান, ব্যয় বাচাতেই বাফুফে এমন দেশকে নিশ্চিত করে যাদের সঙ্গে খেলা হবে না আদৌতে। যা অনেকটা শুভঙ্করের ফাকির শামিল। তবে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক ইমরান হোসেন তুষার এমন মতের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে বলেন, ‘আমরা প্রতি উইন্ডোতেই চেষ্টা করেছি ম্যাচ খেলানোর। জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি উইন্ডাতে সফরকারী দল একেবারে শেষ মুহূর্তে না করেছে তখন অন্য দল পাওয়া সম্ভব ছিল না। প্রতি নারী উইন্ডোতে অনেক দেশ আবার খেলেও না। এপ্রিল উইন্ডো পড়েছে রমজানের মধ্যে। তাই মধ্যপ্রাচ্যের দেশে গিয়ে অথবা তাদের এনে খেলা সম্ভব ছিল না। আমাদের খেলার ইচ্ছে ছিল বিধায় মিয়ানমারের সঙ্গে আলোচনা করি। সরকারের নির্দেশনা মেনে পরবর্তীতে সফর বাতিলের সিদ্ধান্ত হয় এই মুহূর্তে।’

ম্যাচ খেলার মতো মাসিক সম্মানীর ক্ষেত্রেও সাবিনারা পড়েছেন আরেক বিড়ম্বনায়। গত বছর আগস্টে বাফুফে ৩১ জন নারী ফুটবলারের সঙ্গে চুক্তি করে। প্রতি মাসে নিয়মিত এই বেতন পাওয়ার কথা থাকলেও নারী ফুটবলাররা পেয়েছেন অনিয়মিতভাবেই। কখনো দুই মাসের বকেয়াও হয়েছে। সেপ্টেম্বর থেকে ছয় মাস মেয়াদী এই চুক্তি ফেব্রুয়ারি মাসেই সমাপ্ত। ফেব্রুয়ারি মাসের সম্মানী এখনো দিতে পারেনি ফেডারেশন। নতুন চুক্তি এখনো নবায়ন না হলেও নারী ফুটবলাররা ফেডারেশনকে অনুরোধ করেছে মার্চেও সম্মানী প্রদানের।

খুলনা গেজেট/ এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!