খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সিটি মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব তালুকদার আব্দুল খালেক বলেছেন, পাকিস্তানের সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দলগুলো দেশের স্বাধীনতা চায়নি। তৎকালীন মুসলিম লীগ, নিজামী ইসলামসহ বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল বাঙালির স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব চায়নি। সে কারণে তারা বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া না দিয়ে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতা করেছিল এবং পাকবাহিনী সাথে হাত মিলিয়ে বাঙালিদের ওপর গণহত্যা চালিয়েছিলো। তবে বঙ্গবন্ধুর ডাকে বাংলার মুক্তিপাগল জনতা দীর্ঘ ৯ মাস সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে বিজয় অর্জনের মাধ্যমে বাংলাদেশ শত্রুমুক্ত হয়।
মঙ্গলবার সকালে দলীয় কার্যালয়ে স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে মহানগর আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, একাত্তর সালের পরে সকল সাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক দল নিশ্চিহ্ন হলেও তাদের প্রেতাত্মা নিশ্চিহ্ন হয়নি। ওই সময় পরাজিত সকল সাম্প্রদায়িক প্রেতাত্মারা এক হয়ে বিএনপি নামক সংগঠন তৈরি করেছে। যারা বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি ও সৌহর্দ্যতা চায় না। তারা শুধুই অগ্নি সন্ত্রাস ও সম্পদ বিনষ্ট করে বাঙালির উপর আধিপত্য বিস্তার করতে চায়।
তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু মুক্তি পেয়ে ১৯৭২ সালের ১০ জানুয়ারি দেশে ফিরে প্রথমেই যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাকে পুনর্গঠনে আত্মনিয়োগ করেন। অত:পর তিনি অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির কাজে হাত দেন। কিছুটা পথ এগুতে না এগুতেই ১৯৭৫-এর ১৫ আগস্ট তাঁকে সহপরিবারে হত্যা করা হয়। থেমে যায় গণতন্ত্র, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিকসহ সকল উন্নয়ন কর্মকান্ড। বঙ্গবন্ধুর সেই উদ্দেশ্য ও লক্ষ্যকে বাস্তবায়ন ঘটাতে দেশরত্ন জননেত্রী শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালে দেশে ফিরে এসে বাঙালিকে ঐক্যবদ্ধ করে কাজ শুরু করেন। শত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়েও তিনি বাংলাদেশকে বিশে^র দরবারে আত্মমর্যাদাশীল দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
সিটি মেয়র বলেন, বাংলাদেশে আর কোন সাম্প্রদায়িক শক্তিকে মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে দেয়া হবে না। আসুন সবাই দলমত নির্বিশেষে আগামী প্রজন্মকে জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবের স্বপ্নের উন্নত-সমৃদ্ধ অসাম্প্রদায়িক স্মার্ট ‘‘সোনার বাংলা’’ বিনির্মাণে স্বাধীনতার ৫৪ বছরে শপথ গ্রহণ করতে সকলের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
এসময়ে বক্তৃতা করেন মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এম ডি এ বাবুল রানা, সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন মিন্টু, বীর মুক্তিযোদ্ধা শ্যামল সিংহ রায়, বীর মুক্তিযোদ্ধা নুর ইসলাম বন্দ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক বীরেন্দ্র নাথ ঘোষ, সদর থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ্যাড. মো. সাইফুল ইসলাম, সোনাডাঙ্গা থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তসলিম আহমেদ আশা, মহানগর শ্রমিক লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. মোতালেব মহানগর যুবলীগের সভাপতি মো. সফিকুর রহমান পলাশ ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক এস এম আসাদুজ্জামান রাসেল।
মহানগর আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক মো. মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগের পরিচালনায় এসময়ে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা এ্যাড. রজব আলী সরদার, এ্যাড. আইয়ুব আলী শেখ, মো. শাহজাদা, কাউন্সিলর আলী আকবর টিপু, এ্যাড. হালিমা ইসলাম, মো. মফিদুল ইসলাম টুটুল, আজগর আলী মিন্টু, কাউন্সিলর ফকির মো. সাইফুল ইসলাম, মনিরুজ্জামান খান খোকন, বীর মুক্তিযোদ্ধা মুন্সি আইয়ুব আলী, শেখ জাহিদুল হক, বাবুল সরদার বাদল, আব্দুল হাই পলাশ, ফেরদৌস হোসেন লাবু, শেখ এশারুল হক, আতাউর রহমান শিকদার রাজু, সরদার আব্দুল হালিম, মো. আজম খান, এ্যাড. শামীম মোশাররফ, মুন্সি মো. সেলিম হোসেন, মো. শিহাব উদ্দিন, কুদরত এ এলাহী, এ্যাড. এ কে এম শাহজাহান কচি, এম এ নাসিম, অধ্যা. এ বি এম আদেল মুকুল, এ্যাড. শামীম আহমেদ পলাশ, নাছরিন আক্তার, কাউন্সিলর কণিকা সাহা, এস এম হাফিজুর রহমান হাফিজ, মল্লিক নওশের আলী, গোলাম হায়দার বুলবুল, গোলাম মোর্ত্তুজা, আব্দুর রহীম, আব্দুল ওহাব, ফারুক হাসান তুরান, জেসমিন সুলতানা শম্পা, আলেয়া সাঈদ, আঞ্জুমনোয়ারা, আফরোজা জেসমিন বিথী, কবির পাঠান, শরিফুল ইসলাম মুন্না, নাছরিন ইসলাম তন্দ্রা, রেখা খানম, মেহজাবিন খান, ফেরদৌস আলম রিতা, তাসলিমা আক্তার লিমা, দিপ্তী রায়, শিউলী সেরেনিয়াবাত, বিনু, মো. মাহমুদুর রহমান রাজেস, সংকর কুন্ডু ওমর কামাল সহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা সভার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ‘৭১ এ শাহাদাৎ বরণকারী সকল শহীদের প্রতি সম্মান জানিয়ে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়।
এর আগে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে সূর্যোদয়ের সাথে সাথে গল্লামারী স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। এছাড়া সকাল সাড়ে ৬টায় দলীয় কার্যালয়ে জাতীয় ও দলীয় পতাকা উত্তোলন ও বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান করা হয়।
খুলনা গেজেট/এমএম