আগেই বোঝা গিয়েছিল, প্রেসিডেন্টস কাপের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে থাকবেন মুশফিকুর রহীম। কেননা ফাইনাল ম্যাচের আগেই ২ ফিফটি ও আসরের একমাত্র সেঞ্চুরিতে করে ফেলেছিলেন ২০৭ রান। সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকের তালিকায় তার ধারেকাছেও ছিল না কেউ। শেষপর্যন্ত হয়েছেও তাই, ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট নির্বাচিত হয়েছেন মুশফিক। সব মিলিয়ে ব্যাট হাতে ২১৯ রান করেন তিনি। তবে টুর্নামেন্ট সেরা সর্বোচ্চ রান করে ম্যান অব দ্যা টুর্নামেন্টের পুরস্কার জিতলেও সেরা ব্যাটসম্যানের পুরস্কার জিতে নিয়েছেন তার থেকে ৫ রান কম করা ইরফান শুকুর। আর বল হাতে ১২ উইকেট নিয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হয়েছেন তিন পেসার রুবেল হোসেন, সাইফুদ্দিন ও রুবেল হোসেন। তবে সেরা বোলারের পুরস্কারটি জিতে নিয়েছেন রুবেল হোসেন।
কাঁধের ইনজুরির পরও ফাইনাল ম্যাচটি খেলেছেন মুশফিক। ইনিংসের শুরু থেকেই স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছিল তার অস্বস্তি। এভাবে বেশিদূর যেতে পারেননি তিনি, ৩৭ বলের ইনিংসে করেছেন ১২ রান। সবমিলিয়ে পাঁচ ম্যাচে ২১৯ রান করে আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকও তিনি। ফাইনাল ম্যাচে তেমন অবদান না রাখলেও, পুরো আসরে নাজমুল একাদশের যাত্রায় অগ্রণী সৈনিক ছিলেন মুশফিক।
যার ফলস্বরুপ ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্টের স্বীকৃতি ছাড়াও ২ লাখ টাকার অর্থ পুরস্কার পেয়েছেন মিস্টার ডিপেন্ডেবল খ্যাত এ ব্যাটসম্যান। তবু শেষপর্যন্ত আক্ষেপের জায়গা ঠিকই রয়ে গেছে মুশফিকের। কেননা টুর্নামেন্টে চ্যাম্পিয়ন হতে পারেনি তার দল। ফাইনাল ম্যাচে মুশফিক যেমন নিষ্প্রভ ছিলেন, তেমনি হতাশায় নিমজ্জিত ছিল নাজমুল একাদশের ইনিংস। ম্যাচটি তারা হেরে গেছে ৭ উইকেটের ব্যবধানে।
তবু প্রস্তুতির অংশ হিসেবে করা এ টুর্নামেন্টে মুশফিকের প্রস্তুতিটা হয়েছে দারুণ। প্রথম ম্যাচে মাত্র ১ রানে আউট হয়ে গেলেও, পরের তিন ম্যাচে খেলেছেন যথাক্রমে ১০৩, ৫২ ও ৫১ রানের ইনিংস। পুরো আসরে তার চেয়ে বেশি দূরে, তার সমান পঞ্চাশোর্ধ্ব রানের ইনিংসও খেলতে পারেননি আর কোনো ব্যাটসম্যান। যোগ্য খেলোয়াড় হিসেবে আসর সেরার পুরস্কার জিতেছেন মুশফিক।
টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় হওয়ার দৌড়ে মুশফিকের খুব কাছেই ছিলেন তার দলের উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান ইরফান শুক্কুর। আসরের প্রথম ও শেষ ম্যাচে ফিফটি হাঁকানোর পাশাপাশি আরেকটি ৪৮ রানের ইনিংসে ৭১ গড়ে ২১৪ রান করেছেন ইরফান। শেষ ম্যাচে আর মাত্র ৬ রান বেশি করতে পারলেই মুশফিককে টপকে তিনিই হতেন সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক।
এছাড়া বল হাতে আসরের সর্বোচ্চ ১২টি করে উইকেট নিয়েছেন দুই ডানহাতি পেসার মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন ও রুবেল হোসেন। ব্যাট হাতেও ৬৩ রান করেছিলেন সাইফ। ফাইনালে ৫ উইকেট নিয়ে সমান ১২ উইকেট সংগ্রহ হয়ে যায় আরেক পেসার সুমন খানেরও। ফাইনালে ম্যান অব দ্যা ম্যাচের পুরস্কার সুমন খান পেলেও সেরা বোলারের পুরস্কার পেয়েছেন সুমন হোসেন। অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে আলো ছড়িয়েছেন চ্যাম্পিয়ন দলের অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দলকে শিরোপা জেতানোর পথে আসরের তৃতীয় সর্বোচ্চ ১৬৭ রানের পাশাপাশি ২ উইকেট নিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ।
ফাইনাল ও টুর্নামেন্টর সেরা ফিল্ডার হয়েছেন উইকেটরক্ষক নুরুল হাসান সোহান। উদীয়মান খেলোয়াড়ের পুরস্কার পেয়েছেন লেগ স্পিনা রিশাদ হোসেন। প্রত্যার্বতন ক্যাটাগরিতে পুরস্কার পেয়েছেন তাসকিন আহমেদ।
খুলনা গেজেট/এএমআর