ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষার্থীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ক্যাম্পাসের ভাড়ায় চালিত বাস ড্রাইভার ও হেলপারের বিরুদ্ধে। বাসে বহিরাগতদের তুলতে নিষেধ করায় অভিযুক্তরা ভুক্তভোগীকে অশ্লীল ভাষায় গালাগালি এবং জোর করে বাস থেকে নামিয়ে দেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় রোববার (৩ মার্চ) প্রক্টর, ছাত্র উপদেষ্টা ও পরিবহন প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছে ভুক্তভোগী।
ভুক্তভোগী সানি আহমেদ মিথুন বিশ্ববিদ্যালয়ের হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট বিভাগের ২০২২-২৩ শিক্ষাবর্ষের ছাত্র। লিখিত অভিযোগে ঘটনার তদন্ত করে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান তিনি। অভিযুক্ত রোকনুজ্জামান নিউ এসবি সুপার ডিলাক্স’ (যার নাম্বার প্লেট ঢাকা মেট্রো-ব ১৪৭৪৯৫) বাসের ড্রাইভার বলে জানা গেছে।
এদিকে অভিযোগ পাওয়ার পর অভিযুক্ত বাস ড্রাইভার ও হেলপারকে ক্যাম্পাসের বাস চালানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে বলে জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় পরিবহন অফিস।
ভুক্তভোগীর অভিযোগপত্র সূত্রে জানা যায়, গত ২ মার্চ আনুমানিক বিকাল ৩ টার সময় কুষ্টিয়া থেকে ক্যাম্পাসে আসার উদ্দেশ্যে মজমপুর থেকে বাসে উঠেন ভুক্তভোগী। এসময় অভিযুক্তরা বহিরাগত যাত্রীদের বাসে তুলতে থাকেন। পরে সে বহিরাগতদের তুলতে নিষেধ করে এবং দ্রুত গাড়ি ছেড়ে যাওয়ার কথা বললে বাসের হেলপার ভুক্তভোগীকে খুব অশ্লীল ভাষায় তার বাবা-মা তুলে গালাগালি শুরু করেন।
এক পর্যায়ে তাকে জোর করে বাস থেকে নামিয়ে দেয়া হয়। পরে অভিযুক্তদের কর্মকাণ্ডের প্রমাণ রাখার স্বার্থে ভুক্তভোগী তাদের ভিডিও করতে গেলে ক্যাম্পাসে আসলে তাকে দেখে নিবে এবং কুষ্টিয়া থেকে তুলে নিয়ে যাবেন বলে প্রাণনাশের হুমকি দিতে থাকেন অভিযুক্তরা। এসময় একপর্যায়ে ভুক্তভোগীর ফোন কেড়ে নিয়ে ভিডিও ডিলিট করার জন্য তার সাথে ধস্তাধস্তি করতে থাকেন অভিযুক্তরা। সে ফোন দিতে রাজি না হলে, অভিযুক্তরা তাকে আবারও অশ্লীল ভাষায় গালাগালি ও এলোপাতাড়ি কিল-ঘুষি মারতে থাকেন। পরে আশপাশ থেকে স্থানীয় লোকজন ছুটে এলে তাকে ছেড়ে দিয়ে গাড়ি নিয়ে উক্ত স্থান ত্যাগ করেন অভিযুক্তরা।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ড্রাইভার রোকনুজ্জামান বলেন, আমি আমার পরিচিত একজনকে গাড়িতে তুলেছিলাম। এসময় ওই ছেলে ভিডিও করে। তার পরিচয় জানার পর তার সাথে কোন ধরণের বাজে আচরণ করা হয়নি। আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা মিথ্যা।
ভুক্তভোগী সানি বলেন, বহিরাগত যাত্রীদের বাসে তুলতে নিষেধ করায় তারা আমাকে মারধর করেছে এবং অশ্লীল ভাষায় গালাগালি ও প্রাণনাশের হুমকি দিয়েছে। আমি এর বিচার চাই।
এ বিষয়ে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদ বলেন, আমার জানামতে এ বিষয়ে কোনো অভিযোগ আসেনি। আর যদি এসে থাকে তাহলে কালকে বিষয়টি দেখব।
পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, এ বিষয়ে অভিযোগ পাওয়ার পর আমরা আলোচনা করেছি। অভিযুক্ত বাস ড্রাইভার ও হেলপারকে ক্যাম্পাসের বাস চালানো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
খুলনা গেজেট/ এএজে