বোলিং যেমনই হোক, ব্যাটিংয়ে জ্বলে উঠতে পারছিলেন না সাকিব আল হাসান। তবে বিপিএল যতই শেষের দিকে যাচ্ছে, তার ব্যাট যেন চওড়া হয়ে উঠছে! চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে আজ মঙ্গলবার খুলনা টাইগার্সের বিপক্ষে এই আসরের দ্রুততম হাফ সেঞ্চুরি করে দলের স্কোরকে দুইশ পার করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন বাঁহাতি ব্যাটার। তার ব্যাটে চড়ে ২২০ রানের কঠিন লক্ষ্য দেওয়ার পর লেগস্পিনার ইমরান তাহির ঘূর্ণিজাদু দেখান, তাতে কুপোকাত খুলনা।
১৪১ রানে এনামুল হক বিজয়ের দলকে থামিয়ে রংপুর ৭৮ রানের দুর্দান্ত জয় পেয়েছে। এই জয়ে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে আছে তারা।
চট্টগ্রামে প্রথম দিনে দুটি ম্যাচই হাই স্কোরিং হয়েছে। প্রথম ইনিংসে দুটি দলই দুইশ ছাড়িয়েছে। রানের পাহাড়ে চড়তে গিয়ে দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিং করা দল খেই হারালেও রান করতে কোনও সমস্যাই হয়নি প্রতিপক্ষের ব্যাটারদেরও। সবকিছু মিলিয়ে বলাই যায় ঢাকা, সিলেট যা পারেনি, সেটাই চট্টগ্রামে সম্ভব হয়েছে। চার-ছক্কার ধুমধাড়াক্কা ক্রিকেটে চট্টগ্রামের দর্শকরা প্রাণভরেই উপভোগ করতে পারছেন।
লক্ষ্যে নেমে দ্রুত উইকেট হারালেও অ্যালেক্স হেলসের ব্যাটিং তাণ্ডবে রানের চাকা সচল ছিল খুলনার। যদিও এত বড় লক্ষ্যে খেলতে নামার পর টপ অর্ডারের তিন ব্যাটার এভিন লুইস (১১), বিজয় (৫) ও আফিফ হোসেন (১১) দ্রুত ফিরে যান। তবুও হেলস চেষ্টা করে যাচ্ছিলেন। কিন্তু ৩৩ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৬০ রানের ইনিংস খেলে আউট হওয়ার পরই মূলত ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় খুলনা। টপ অর্ডার আর মিডল অর্ডারের ব্যর্থতায় দেড়শর আগেই অলআউট হয় টানা চার ম্যাচ জিতে শুরুর দিকে শীর্ষে থাকা দলটি। এনিয়ে টানা চতুর্থ হার দেখলো খুলনা। তাদের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২০ রান আসে লুক উডের ব্যাট থেকে। প্লে-অফ খেলতে হলে খুলনার সামনে বাকি ম্যাচগুলোতে জয়ের বিকল্প নেই।
রংপুরের বোলারদের মধ্যে তাহির একাই নেন পাঁচটি উইকেট। ২৬ রান খরচ করেন তিনি। সাকিব ৩০ রান দিয়ে নেন দুটি উইকেট। এছাড়া শেখ মেহেদী, জিমি নিশাম ও হাসান মাহমুদ একটি করে উইকেট নিয়েছেন। খুলনাকে অল্প রানে বেঁধে ফেলে ম্যাচসেরার পুরস্কার উঠে তাহিরের হাতেই।
এর আগে টস জিতে রংপুরের অধিনায়ক ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু শুরুতেই অস্বস্তিতে পড়ে যায় রংপুর। প্রথম দুই ওভার শেষে তাদের রান ছিল ১ উইকেটে ৯। উডের বলে রনি তালুকদার বিদায় নেন। মূলত তৃতীয় ওভার থেকে হাত খোলেন সাকিব। শেষ দুই বলে দুটি ছক্কা হাঁকান তিনি। পরের ওভারে রিজা হেনড্রিকসকেও ফেরান উড।
২৪ রানে ২ উইকেট পড়লেও থামেননি সাকিব। ষষ্ঠ ওভারে নাসুমের ৬ বলে ৩ ছক্কা ও ২ চারে ২৬ রান তুলে নেন। এরপর নিজের খেলা ২০তম বলে চার মেরে ছোঁন বিপিএল অধ্যায়ের ১২তম ফিফটি। যা চলতি বিপিএলে দ্রুততম ও সাকিবের প্রথম হাফ সেঞ্চুরি। গত ২২ জানুয়ারি ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে লুইসের ২১ বলে হাফ সেঞ্চুরি ছিল এই আসরের দ্রুততম। মঙ্গলবার ওয়েস্ট ইন্ডিজ ব্যাটারের সামনেই এই রেকর্ড গড়েছেন সাকিব।
মেহেদীর সঙ্গে এদিন তৃতীয় উইকেটে ৪৮ বলে ১০৯ রানের জুটি গড়েন সাকিব। ৩.২ ওভারে ২৪ রানে ২ উইকেট পড়ার পর জুটি বাঁধেন তারা। সাকিবের দেখাদেখি মেহেদীও হাত খুলে খেলেছেন। ৩৬ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় লেখেন ৬০ রানের ইনিংস। শেষ দিকে নুরুল হাসান সোহানের ১৩ বলে ৩২ রানের ক্যামিও ইনিংসে রংপুর রাইডার্স ২১৯ রানের চ্যালেঞ্জিং সংগ্রহ গড়ে।
খুলনার বোলারদের মধ্যে উড ১৯ রানে নেন তিনটি উইকেট। এছাড়া নাহিদ রানা ও নাসুম আহমেদ নেন একটি করে উইকেট।
খুলনা গেজেট/কেডি