কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে প্রতিপক্ষের হামলায় গুলিবিদ্ধ নৌকার সমর্থক জিয়ার হোসেন (৪৫) মারা গেছেন। সোমবার (১৫ জানুয়ারি) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। নিহত জিয়ার হোসেন কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বের কালোয়া গ্রামের কেঁদো শেখের ছেলে। নিহতের আরেক ভাই আলতাফ হোসেন একই হামলায় আহত হয়ে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৪ (কুমারখালী-খোকসা) আসনে নৌকা প্রার্থীর পক্ষে ভোট করায় গত ১২ জানুয়ারি সকালে সাবেক ইউপি সদস্য খালেক ও তার লোকজন জিয়ার ও তার ভাই আলতাফকে গুলি করে। এতে গুরুতর আহত হন তারা। এ ঘটনায় কুমারখালী থানায় মামলা হয়েছে। জিয়ার সোমবার বিকালের দিকে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এই আসনে নৌকা প্রতীকের প্রার্থী যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য সেলিম আলতাফ জর্জকে হারিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন ট্রাক প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য আব্দুর রউফ।
জানা গেছে, কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের বের কালোয়া গ্রামের সাবেক মেম্বর আব্দুল খালেকের সঙ্গে কেঁদো শেখের ছেলেদের বহু বছর ধরে আধিপত্য বিস্তার নিয়ে দ্বন্দ্ব চলে আসছে। পদ্মা নদীতে মাছ ধরা, যেকোনো নির্বাচনসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রায় দুই পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। গত শুক্রবার সকালে কালোয়ারা মোড়ে দুই পক্ষ আগ্নেয়াস্ত্রসহ সংঘর্ষে জড়ায়।
এতে দুই ভাই গুলিবিদ্ধ হয়। জিয়ার সোমবার বিকালের দিকে পঙ্গু হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
নিহতের ছোট ভাই ইয়ারুল বলেন, নৌকায় ভোট দেওয়ার অপরাধে খালেক ও তার লোকজন আমার দুই ভাইকে গুলি করে আহত করে। চিকিৎসাধীন অবস্থায় জিয়ার মারা গেছেন। অন্যজন চিকিৎসাধীন রয়েছেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) তাপস কুমার সরকার জানান, গত শুক্রবার গুলিতে আহত দুই ভাই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। দু’দিন আগে পরিবারের লোকজন জিয়ারকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নিয়ে যান।
এ বিষয়ে কয়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আলী হোসেন বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকার পক্ষে ভোট করায় জিয়ারকে প্রতিপক্ষ ট্রাক মার্কার লোকজন গুলি করে হত্যা করেছে। খুনিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম বলেন, গত শুক্রবার হামলার ঘটনা ঘটে। তখন আহত হন জিয়ার। চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়েছে। এ ঘটনায় ১৪ জনকে আসামি করে থানায় মামলা হয়েছে। আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
খুলনা গেজেট/কেডি