খুলনা, বাংলাদেশ | ৬ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২১ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  ডেঙ্গুতে একদিনের ৯ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১ হাজার ২১৪

বিশ্বের প্রথম তৈরি হলো বায়োরোবোটিক হৃৎপিণ্ড

গেজেট ডেস্ক

বিশ্বের প্রথম বায়োরোবোটিক হৃৎপিণ্ড তৈরি করেছেন বিজ্ঞানীরা। এটি প্রায় মানুষের হৃৎপিণ্ডের মতোই দেখতে এবং একইভাবে কাজ করে। তবে এটি এখনো মানুষের দেহে প্রতিস্থাপনের উপযোগী নয়। মূলত মানুষের বিভিন্ন ধরনের হৃদ্‌রোগ গবেষণায় নতুন দিগন্ত উন্মোচন করবে এই বায়োরোবোটিক হৃৎপিণ্ড। বিজ্ঞান বিষয়ক সংবাদমাধ্যম সায়েন্স ডেইলির এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

মূলত একটি সক্রিয় হৃৎপিণ্ডে সিলিকনের তৈরি একটি কৃত্রিম পাম্প বসিয়ে এটি তৈরি করা হয়েছে। এই হৃৎপিণ্ড মানুষের হৃৎপিণ্ডের বাম নিলয় ও অলিন্দের ভালব বা কপাটিকার ওপর বেশি গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। বিজ্ঞানীরা শূকরের হৃৎপিণ্ডের টিস্যু ও সিলিকনের তৈরি পাম্পের (এক ধরনের রোবোটিক পেশি টিস্যু, যা নিজে নিজে সংকুচিত-প্রসারিত হতে পারে এবং একে বাইরে থেকেও নিয়ন্ত্রণ করা যায়) সমন্বয়ে এই বায়োরোবোটিক হার্ট তৈরি করেছেন।

এই বায়োরোবোটিক হার্টকে প্রয়োজন অনুসারে সুস্থ ও অসুস্থ দেহের হৃৎপিণ্ডের মতো করে স্পন্দিত করানো যায়। বিজ্ঞানীরা অনুমান করছেন, এর সাহায্যে হৃৎপিণ্ডে কী কী বাধা তৈরি হয়, জটিলতা তৈরি হয় সে বিষয়ক জানাশোনা সহজ হবে এবং একই সঙ্গে এ থেকে হৃৎপিণ্ডের সামগ্রিক অবস্থার বিষয়ে রিয়েল টাইম বা তাৎক্ষণিক সব তথ্য-উপাত্ত পাওয়া যাবে। এটিকে এখনই কোনো প্রাণীর দেহে ব্যবহার না করে আগে সিমুলেটর হিসেব ব্যবহার করে এর কার্যকারিতা ও অন্যান্য বিষয়গুলো খতিয়ে দেখা হবে।

গত ১০ জানুয়ারি বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল ডিভাইসে এই বিষয়ক একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়েছে। নতুন এই বায়োরোবোটিক হার্টের বিষয়ে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে গিয়ে এই গবেষণার সঙ্গে জড়িত ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বায়োমেডিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার অ্যালেন রোচে বলেছেন, ‘কল্পনা করুন, একটি গবেষণাগারে একটি হৃৎপিণ্ড স্পন্দিত হচ্ছে।’

অ্যালান রোচে আরও বলেন, ‘এই সিমুলেটরে রক্তের পরিবর্তে একটি পরিষ্কার তরল পাম্প করা হবে এবং রক্ত প্রবাহ, রক্তচাপ ও অন্যান্য অনেক বিষয় পরিমাপ করে এমন সব যন্ত্রের সঙ্গে সংযুক্ত এটি। এটিকে কাস্টমাইজ বা প্রয়োজন অনুসারে এটির কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করা যাবে। অর্থাৎ, ব্যবহারকারী চাইলে হৃৎস্পন্দন, রক্তচাপ ও অন্যান্য বিষয় পরিবর্তন করতে পারেন। তারপর এই পরিবর্তনগুলো কীভাবে একটি অভ্যন্তরীণ ক্যামেরার মাধ্যমে বাস্তব সময়ে হার্টের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করে তা দেখতে পাবেন।

নতুন আবিষ্কৃত এই বায়োরোবোটিক হার্ট মানুষের হৃৎপিণ্ডে যেভাবে রক্ত প্রবাহিত হয় ঠিক সেভাবেই রক্ত পাম্প করতে পারে। পুরো সিমুলেশনে কোনো প্রাণীর সতেজ হৃৎপিণ্ড ব্যবহার করা হলে সেটি যত দিন কার্যক্ষম থাকে তার চেয়ে অনেক বেশি কার্যক্ষম থাকে এই বায়োরোবোটিক হার্ট। যেমন এই সিমুলেটরে ব্যবহৃত শূকরের হৃৎপিণ্ড মাত্র কয়েক ঘণ্টা সতেজ ছিল। কিন্তু এই বায়োরোবোটিক হার্ট কয়েক মাস কাজ করেছে।

তবে গবেষকেরা এখনো এই বায়োরোবোটিক হার্ট প্রকৃতপক্ষে কত সময় টিকে থাকবে সে বিষয়ে স্থির নিশ্চিত কোনো তথ্য দিতে পারেননি রোচ ও তাঁর দলের সদস্যরা। রোচ বলেছেন, ‘এই বায়োরোবোটিক হার্টটি ঠিক কতটা সময় কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই কাজ চালিয়ে যেতে পারে ও কী পরিমাণ রক্ত প্রবাহের চক্র সে পূরণ করতে পারে সে বিষয়ে আমাদের এখনো পরীক্ষা (শেলফ-লাইফ ফ্যাটিগ টেস্ট) করা বাকি।’

খুলনা গেজেট/ এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!