ভারতের পার্লামেন্টের দুই কক্ষ লোকসভা ও রাজ্যসভা থেকে নজিরবিহীনভাবে সোমবার ৭৮ জন এমপিকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে লোকসভায় নিরাপত্তা লঙ্ঘন করে দুই যুবকের ঢুকে পড়া নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর বিবৃতি দাবি করেছিলেন বিরোধী পার্লামেন্ট সদস্যরা। এ নিয়ে হট্টগোলের জেরে ওই পার্লামেন্ট সদস্যদের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হয়। একই ঘটনায় গত সপ্তাহে ১৪ জন এমপিকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে পার্লামেন্টের চলতি অধিবেশনে ৯২ জন এমপিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হলো।
সোমবার লোকসভার ৩৩ জন এবং রাজ্যসভার ৪৫ জন সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। তাঁদের মধ্যে ৭৭ জন এমপি পার্লামেন্টের চলতি শীতকালীন অধিবেশনের বাকি সময়ে আর যোগ দিতে পারবেন না। ২২ ডিসেম্বর পর্যন্ত এই অধিবেশন চলবে।
এ ঘটনার পর ভারতের বিরোধী দলগুলোর জোট ইন্ডিয়ার শক্তি রাজ্যসভায় কমে অর্ধেকে নেমেছে। আর লোকসভায় সদস্যদের এক–তৃতীয়াংশ হারিয়েছে তারা।
বরখাস্ত হওয়া এমপিদের মধ্যে লোকসভায় কংগ্রেসের নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী ও উপনেতা গৌরভ গোগোই রয়েছেন। রাজ্যসভা সচিবালয়ের সূত্রমতে, রাজ্যসভার ইতিহাসে এই প্রথম এত বেশিসংখ্যক সদস্যকে বরখাস্ত করা হয়েছে।
গত বুধবার দুই যুবক লোকসভা অধিবেশন চলাকালে সেখানে ঢুকে পড়েন। স্বৈরতন্ত্র চলবে না—স্লোগান দিয়ে তাঁরা এমপিদের এক ডেস্ক থেকে আরেক ডেস্ক যান এবং ক্যান থেকে রঙিন ধোঁয়া ছড়িয়ে দেন। তাঁদের সহযোগীরা লোকসভার বাইরেও একই ধরনের প্রতিবাদ জানান। পরে জিজ্ঞাসাবাদে তাঁরা বলেছেন, বেকারত্ব, কৃষকদের সমস্যা এবং মণিপুরে সহিংসতার প্রতি মনোযোগ আকর্ষণের জন্য এই প্রতিবাদ করেছেন।
ওই যুবকদের লোকসভায় ঢুকে পড়ার ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিবৃতি দাবি করেছিলেন বিরোধী পার্লামেন্ট সদস্যরা। এর জেরে এমপিদের বরখাস্ত করার ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বিরোধী নেতারা। এর মধ্য দিয়ে ‘গণতন্ত্রকে হত্যা’ করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন তাঁরা। কংগ্রেস নেতা অধীর রঞ্জন চৌধুরী বলেন, সরকার স্বৈরাচারের মতো আচরণ করছে। তারা পার্লামেন্টকে বিজেপির প্রধান কার্যালয়ের মতো ব্যবহার করছে।