ডুনেডিনে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে নূন্যতম লড়াইটাও করতে পারল না বাংলাদেশ। কিউইদের সামনে অসহায় আত্মসমর্পণ করেছে টাইগাররা। বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৩০ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে শুরুতে ব্যাট করতে নেমে ৭ উইকেট হারিয়ে ২৩৯ রান করে স্বাগতিকরা। ডিএলএস পদ্ধতিতে ৩০ ওভারে বাংলাদেশের লক্ষ্য ছিল ২৪৫ রান। ৯ উইকেটে বাংলাদেশ তুলতে পেরেছে ২০০ রান। এতে বাংলাদেশকে ৪৪ রানে হারিয়েছে নিউজিল্যান্ড। এই হারে নিউজিল্যান্ডকে তাদের মাটিতে সাদা বলে হারানোর অপেক্ষাও বাড়ল আরেকটু।
রান তাড়া করতে নেমে ইনিংসের চতুর্থ বলেই শূন্যরানে আউট হয়েছেন সৌম্য সরকার। ফিল্ডিংয়ে ক্যাচ ছেড়েছেন। বোলিংয়ে ৬ ওভার করে দিয়েছেন ৬৩ রান। বলা যায়, প্রথম ওয়ানডেতে পুরোপুরি ব্যর্থ এই টপঅর্ডার ব্যাটার। এরপর আনামুলকে নিয়ে একটা জুটি গড়ার চেষ্টায় ছিলেন নাজমুল। কিন্তু উচ্চাভিলাষী শটে নিজের উইকেট বিলিয়ে দেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। ইশ সোধিকে রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে বোল্ড হবার আগে ২ চারে ১৩ বলে করেন ১৫ রান।
আশা দেখাচ্ছিলেন একাদশে সুযোগ পাওয়া আনামুল। কিন্তু আশা দেখিয়ে হাল ছেড়ে দেন অল্পতেই। ক্লার্কসনের বাউন্সারে পরাস্থ হন এই ওপেনার। ৫ বাউন্ডারিতে ৩৯ বলে তার ইনিংস থামে ৪৩ রানে। এরপর লিটনের বিদায়ে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। অভিষিক্ত ক্লার্কসনের স্লো বাউন্সারে দ্বিধান্বিত হয়ে ফেরার আগে ২২ রান করেন তিনি। শান্তর মত রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে আত্নাহুতি দেন মুশফিকও। রাচিনের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়েন ফেরেন বাংলাদেশের মোস্ট ডিপেন্ডবল এই ব্যাটার। ১০ বলে মুশফিক করেন ৪ রান।
৫ উইকেট হারানো দলকে উদ্ধার করতে ঝড় তোলেন তাওহিদ-আফিফ জুটি। কিন্তু এই জুটিকে ভেঙে দেন কিউই স্পিনার সোধি। তাকে ছক্কা মারতে গিয়ে সীমানায় ধরে পড়েন তাওহিদ। এতে আফিফের সঙ্গে ভাঙে ৩৮ বল স্থায়ী ৫৬ রানের জুটি। ২৭ বলে এক ছক্কা ও দুই চারে ৩৩ রান করেন হৃদয়। বাংলাদেশের লড়াই করার আশা শেষ হয়ে যায় আফিফের বিদায়ে। ২৪তম ওভারে জ্যাকব ডাফির বলে সুইপ করতে গিয়ে থামেন এই ব্যাটার। ২৮ বলে ৫ চার ও ১ ছয়ে ৩৮ রান করেন আফিফ। টিকলেন না শরিফুলও। অ্যাডাম মিলনেকে ছক্কা হাঁকাতে গিয়ে ব্যক্তিগত ৫ রানে ফেরেন তিনি। ইনিংসের শেষ বলে উইলিয়াম ও’রুর্কের বলে ব্যক্তিগত ৪ রানে বোল্ড হন হাসান মাসুদ। এতে নির্ধারিত ৩০ ওভারে ২০০ রান তুলতেই ৯ উইকেট হারায় সফরকারীরা। ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন মিরাজ। প্রথম ওয়ানডেতে বাংলাদেশ হারে ৪৪ রানে।
কিউইদের হয়ে জশ ক্লার্কসন, অ্যাডাম মিলনে ও ইশ সোধি নেন দুটি করে উইকেট। একটি করে উইকেট শিকার করেন রাচিন রবীন্দ্র, জ্যাকব ডাফি ও উইলিয়াম ও’রুর্ক।
এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে বৃষ্টিবিঘ্নিত ম্যাচে ৩০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৩৯ রান করে নিউজিল্যান্ড। ডাকওয়ার্থ-লুইস-স্টার্ন পদ্ধতিতে বাংলাদেশ পায় ২৪৫ রানের লক্ষ্য। নিউজিল্যান্ডের হয়ে সেঞ্চুরি করেন উইল ইয়াং। ৮৪ বলে ১৪ চার ও ৪ ছক্কায় ১০৫ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলেন এই ওপেনার। এছাড়া ৯২ রান আসে ল্যাথামের ব্যাট থেকে। শেষ দিকে একাধিক রান আউটে নিউজিল্যান্ডের ব্যাটসম্যানরা আসা-যাওয়ার মিছিলে ছিলেন। কিন্তু তাতেও তাদের বড় রান পেতে সমস্যা হয়নি।
বাংলাদেশের হয়ে ৬ ওভারে ২৮ রানে ২ উইকেট শিকার করে ইনিংসের সেরা বোলার শরিফুল ইসলাম। তাছাড়া ৫ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে এক উইকেট পেয়েছেন মিরাজ।
বাংলাদেশ একাদশ: নাজমুল হোসেন (অধিনায়ক), লিটন দাস, এনামুল হক, তাওহিদ হৃদয়, আফিফ হোসেন, মুশফিকুর রহিম, মেহেদী হাসান মিরাজ, মুস্তাফিজুর রহমান, সৌম্য সরকার, হাসান মাহমুদ, শরিফুল ইসলাম।
নিউজিল্যান্ড একাদশ: উইল ইয়াং, রাচিন রবীন্দ্র, হেনরি নিকোলস, টম ল্যাথাম, টম ব্লান্ডেল, মার্ক চাপম্যান, জশ ক্লার্কসন, অ্যাডাম মিলনে, ইশ সোধি, জ্যাকব ডাফি, উইলিয়াম ও’রুর্ক।
খুলনা গেজেট/এনএম