নাশকতার ছয় মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ১২২ নেতা-কর্মীকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। বুধবার (১৩ ডিসেম্বর) ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বিভিন্ন মেয়াদে এ কারাদণ্ড দেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে দু-একজন ছাড়া সবাই পলাতক রয়েছেন। তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে। তারা গ্রেপ্তার হওয়ার পর এই রায় কার্যকর হবে। আদালতের রায়ে বলা হয়েছে, আসামিদের মধ্যে ইতিপূর্বে কেউ মৃত্যুবরণ করে থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে এই রায় কার্যকর হবে না। উত্তরখানের এক মামলায় ৩৬ জন, বনানী থানার মামলায় ১০ জন, গুলশান থানার মামলায় ১৫ জন, ধানমন্ডি থানার মামলায় ২২ জন, কাফরুল থানার মামলায় ৮ জন।
উত্তরখানের মামলায় ৩৬ জনের দুই বছরের কারাদণ্ড: রাজধানীর উত্তরখান থানায় ২০১৮ সালে দায়ের করা এক মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ৩৬ নেতা-কর্মীকে দুই বছর এক মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশারফ হোসেন এই রায় দেন। সাজাপ্রাপ্ত আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন আনোয়ার হোসেন সরকার, রায়হানুল বাসেদ, মমতাজ উদ্দিন, হারুন অর রশিদ ও আতিকুল ইসলাম প্রমুখ। আনোয়ার হোসেন সরকার, রায়হানুল বাসেদকে রায় ঘোষণার সময় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়। রায় শেষে তাদের আবার কারাগারে পাঠানো হয়। অন্যরা পলাতক রয়েছেন।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীরা উত্তরখানের মূল রাস্তায় অবৈধ ও বেআইনি সমাবেশ করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করলে পুলিশ এগিয়ে যায়। তখন পুলিশের ওপর হামলা করেন এবং পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধা দেন সমাবেশে অংশগ্রহণকারীরা।
উত্তরখানের মামলায় ৩১ জনের দুই বছরের কারাদণ্ড: ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে উত্তরখান থানায় দায়ের করা আরেক মামলায় ৩১ জনকে দুই বছর এক মাস কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশারফ হোসেন এই রায় দেন। আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- রফিকুল ইসলাম মুকুল, জাহাঙ্গীর আলম বেপারী, হাবিবুর রহমান দুদু প্রমুখ। আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
ধানমন্ডি থানার মামলায় ২২ জনের কারাদণ্ড: ২০১৮ সালের ৮ জুলাই নাশকতার অভিযোগে ধানমন্ডি থানায় দায়ের করা এক মামলায় মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদী হাসান ২২ জনকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। এই মামলায় আসামিদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- আব্দুল আজিজ, সাবের হোসেন, রবিউল আলম রবি, ফারুক হোসেন ওরফে বোমা ফারুক, ইয়াসিন ওরফে বোমারু ইয়াসিন। এই মামলার আসামিরা পলাতক।
গুলশান থানার মামলায় ১৫ জনের কারাদণ্ড: ১০ বছর আগে গুলশান থানায় দায়ের করা মামলায় স্থানীয় নেতা আসাদুজ্জামান ও জাহিদুল ইসলাম জাহিদসহ ১৫ জন বিএনপি নেতা-কর্মীকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসান এই রায় দেন। ২০১৩ সালের এপ্রিলে বিএনপি ও জামায়াত জোটের ঢাকা হরতাল-অবরোধের সমর্থনে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বেআইনি মিছিল সমাবেশ করে এলাকায় ত্রাস সৃষ্টি করার অভিযোগে এই মামলা দায়ের করা হয়। এই মামলায় দুজনকে খালাস দেওয়া হয়েছে।
বনানী থানার মামলায় ১০ জনের কারাদণ্ড: বনানী থানায় দায়ের করা নাশকতার মামলায় বিএনপির ১০ নেতা-কর্মীকে আড়াই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ফারজানা শাকিলা সুমু চৌধুরী এই রায় দেন। স্থানীয় নেতা মিজানুর রহমান, মো. শাহজাহান, খোকনসহ ১০ জনই পলাতক রয়েছেন। ঘটনার বিবরণে জানা যায়, ২০১৮ সালের ৪ সেপ্টেম্বর মহাখালী ওয়াসা স্টাফ কোয়ার্টারের সামনে বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে নাশকতামূলক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। এ ঘটনায় পুলিশ ওই দিনই বিএনপি নেতা-কর্মীরদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করে এবং তদন্ত শেষে ২০১৯ সালের ৩০ মে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়।
কাফরুল থানার মামলায় ৮ জনের দুই বছরের কারাদণ্ড: ২০১৭ সালের ১৩ ডিসেম্বর বিএনপি ও জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে বেআইনি সমাবেশ করে পুলিশের ওপর হামলা ও পুলিশের কর্তব্য কাজে বাধার অভিযোগে কাফরুল থানায় মামলা হয়। ওই মামলায় আতাউর রহমান সুমন, মোয়াজ্জেম হোসেন মতি, জিল্লুর রহমান ওরফে রুপমসহ আটজনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোশারফ হোসেন। আসামিরা পলাতক রয়েছেন।
খুলনা গেজেট/কেডি