খানজাহান আলী থানার তেলিগাতী কুয়েট রোডে অবস্থিত খুলনা কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামকে নিয়ে অভিযোগের যেন শেষ নেই। ২০২১ সালের ১০ অক্টোবর প্রতিষ্ঠানটিতে অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদানের পর থেকেই নানানিধ বিতর্কিত কর্মকাণ্ডে নিজেকে জড়িয়ে ফেলেন। ক্ষমতার দম্ভ এবং ব্যক্তিগত অসদাচরণের কারণে প্রতিষ্ঠানের কর্মচারীরা শুরু থেকে তার উপর ছিলো নাখোশ। বিশেষ একটি জেলায় বাড়ি হওয়ার কারণে তার ভেতরে অহমিকা কাজ করে বলে এমন অভিযোগ তাকে নিয়ে। প্রতিষ্ঠানের গাড়ি চালককে মারধোর, প্রতিষ্ঠানের সাবেক এক প্রশিক্ষককে হত্যা করে লাশ গুমের হুমকি, প্রতিষ্ঠানের মালামাল যথাযথভাবে সংরক্ষণ না করা, প্রতিষ্ঠানটি সঠিকভাবে পরিচালনা না করারসহ নানাবিধ অভিযোগ উঠেছে তার বিরুদ্ধে।
অভিযোগ উঠেছে কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে রাতের আঁধারে প্রতিষ্ঠানের গাছ বিক্রির। প্রতিষ্ঠানের প্রশিক্ষনার্থীদের প্রশিক্ষণের কাঁচামাল সরবরাহ না করে সেই অর্থ আত্মসাৎ’র অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগগুলো নিয়ে প্রতিষ্ঠানটির প্রশিক্ষক, কর্মচারী এবং প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে দীর্ঘদিন থেকে অসন্তোষ বিরাজ করছিলো। যার বিস্ফোরণ ঘটে বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর)। এ দিন তার কাছে হেনস্থা হওয়া প্রশিক্ষক, কর্মচারী এবং শিক্ষার্থীরা তার বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ উত্থাপন করে তাকে প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষের পদ থেকে দ্রুত অপসারণসহ প্রতিষ্ঠান থেকে অপসারণের জোর দাবি জানান। এ নিয়ে দিনভর কারিগরি প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের অভ্যন্তরে উত্তেজনা বিরাজ করে।
অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো বরাবরই তিনি অসত্য, ভিত্তিহীন, গুজব, বানোয়াট, এ সব আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র বলে উড়িয়ে দেন।
সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির এক গাড়ী চালককে অকথ্য ভাষায় গালি গালাজসহ শারিরীকভাবে লাঞ্চিত করার অভিযোগ উঠে অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে। প্রতিষ্ঠানের গাড়ীর রক্ষণাবেক্ষণের কাজ না করিয়ে ভাউচার করে সমন্বয় করাসহ বিভিন্ন অভিযোগ এনে ২৩ নভেম্বর জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহা-পরিচালক বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে নির্মাণাধীন নতুন ভবনের কাজ শুরু হওয়ার পূর্বে প্রতিষ্ঠানের ১৯৫ টি গাছ ভেকু দিয়ে ফেলে কিছু গাছ বিক্রয়ের অভিযোগে খুলনা জেলা প্রশাসকের নিকট লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন স্থানীয় বাসিন্দা কাজী আরিফুল ইসলাম বকুলসহ স্থানীয়রা। অভিযোগ তদন্তের জন্য বুধবার (৬ ডিসেম্বর) দিঘলিয়া উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোঃ জাকির হোসেন সরজমিনে এসে অভিযোগকারী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ স্থানীয় লোকজন অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলেছেন।
গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে অধ্যক্ষ প্রতিষ্ঠানের সাবেক প্রশিক্ষক কাজী মঈনুল ইসলাম বাবলুকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ এবং হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি প্রদানের অভিযোগে এনে খুলনা বিজ্ঞ নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে কাজী মইনুল ইসলাম বাবলু ৩০ অক্টোবর অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
উপরোক্ত অভিযোগের বিষয়ে জানার জন্য প্রতিষ্ঠানদের অধ্যক্ষ কাজী বরকতুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।
সংশোধনী : সংবাদটি প্রথম প্রকাশকালে অসাবধনতা বশত : প্রথম প্যারায় ‘প্রতিষ্ঠানের সাবেক এক প্রশিক্ষককে হত্যা করে লাশ গুমের হুমকি’র লাইন থেকে ‘হুমকি’ শব্দটি বাদ পড়ায় আমরা আন্তরিকভাবে দু:খিত।
খুলনা গেজেট/লিপু/এইচ