আর্থ-সামাজিক ও রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশের সবচেয়ে উপেক্ষিত, বঞ্চিত ও অসহায় জনগোষ্ঠীর মধ্যে অন্যতম দলিত সম্প্রদায়। দলিত অর্থ “অস্পৃশ্য”,নিপীড়িত, বঞ্চিত, শোষিত উপেক্ষিত এবং পদদলিত জনগোষ্ঠী। যারা বাংলাদেশের দারিদ্র বা চরম দারিদ্র সীমার নিচে বসবাস করছে। এ সকল প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর সামাজিক ক্ষমতায়ন ও তাদের সাংবিধানিক অধিকারগুলো নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করছে ওয়ার্কিং গ্রুপ।
খুলনার ওয়ার্কিং গ্রুপ রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ইশতেহার ও অঙ্গীকারে অন্তর্ভুক্তির জন্য দলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর পক্ষ থেকে প্রস্তাবিত সুপারিশসমূহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দের কাছে প্রদান করছে। এরই ধারাবাহিকতায় মঙ্গলবার (২৮ নভেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টায় খুলনা সিপিবি’র কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে ওয়ার্কিং গ্রুপের আহবায়ক সিলভী হারুনের নেতৃত্বে প্রস্তাবিত সুপারিশসমূহ সিপিবি ও বাসদের নেতৃবৃন্দের কাছে প্রদান করা হয়।
প্রস্তাবিত সুপারিশ সমূহের মধ্যে রয়েছেঃ
১. বৈষম্য নিরোধ আইন কার্যকর করা এবং এতে দলিত জনগোষ্ঠীর কথা উল্লেখ করা।
২. আসন্ন দ্বাদশ সংসদের প্রতিশ্রুত সংখ্যালঘু কমিশন গঠন করা।
৩. জাতীয় সংসদে ও স্থানীয় সরকারে আসন সংরক্ষণের পাশাপাশি স্ট্যান্ডিং কমিটিতে দলিত’দের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা ও সংসদীয় ককাস গঠন করা।
৪. সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে পিছিয়ে পড়া / অনগ্রসর জনগোষ্ঠী কারা তা সুনির্দিষ্ট করা এবং পিছিয়ে পড়া অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর তালিকায় দলিত উল্লেখ করা।
৫. দলিত ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ঝরে পড়া রোধে, উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষা অব্যাহত রাখতে শিক্ষা ঋণ চালু করা।
৬. ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা তৈরি এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টির উদ্দেশ্যে দলিত এবং প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য বিনিয়োগ তহবিল( সহজ শর্তে ঋণ) গঠন করা।
৭. মেডিকেল ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে দলিত’দের জন্য কোটা বরাদ্দ করা।
৮. সিটি কর্পোরেশন ও পৌরসভায় হরিজন জনগোষ্ঠীর জন্য চাকরি নীতি যুগোপযোগী করাসহ সকল প্রতিষ্ঠানে চাকরি স্থায়ী করা এবং ঘোষিত প্রজ্ঞাপন অনুসারে ঝাড়ুদার, ক্লিনার, সুইপার পদে মোট নিয়োগের ৮০ শতাংশ হরিজন জনগোষ্ঠীর কোঠায় সঠিক বাস্তবায়ন করা এবং আউটসোর্সিং পদ্ধতি বাতিল করা।