ডলারের বাজারে বিশৃঙ্খলা দেখা দিয়েছে। নির্ধারিত দামে ব্যাংকগুলোয় ডলার মিলছে না। এরই মধ্যে দাম ৫০ পয়সা কমানো হলেও বেশির ভাগ ব্যাংকেই ওই দামে ডলার পাওয়া যাচ্ছে না।
গ্রাহকদের বেশি দামে ডলার কিনতে হচ্ছে। অনেক ব্যাংক এখনো বেশি দামে রেমিট্যান্স কিনছে। ফলে তারা ওইসব ডলার আরও বেশি দামে বিক্রি করছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমানোর সিদ্ধান্তটি সঠিক হয়েছে। কারণ, আগের চেয়ে ব্যাংকে ডলারের প্রবাহ বেড়েছে।
বুধবার ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন বাংলাদেশ ফরেন এক্সচেঞ্জ ডিলারস অ্যাসোসিয়েশন (বাফেদা) ও বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন অ্যাসোসিয়েশন অব ব্যাংকার্স, বাংলাদেশের (এবিবি) যৌথ বৈঠকে ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার থেকে এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়েছে। নতুন দর অনুযায়ী ব্যাংকগুলো বৃহস্পতিবার প্রতি ডলার ১১০ টাকা করে কিনেছে এবং বিক্রি করেছে ১১০ টাকা ৫০ পয়সা করে। তবে বড় ব্যাংকগুলো ছাড়া অন্য ব্যাংকগুলোয় ওই দামে ডলার মিলছে না।
বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মেজবাউল হক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ব্যাংকগুলো কেনা ও বেচার ক্ষেত্রে ডলারের দাম ৫০ পয়সা কমানোর যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটি সঠিক হয়েছে। কারণ, বর্তমানে চাহিদা ও জোগানের ওপর নির্ভর করে ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয়। বর্তমানে বাজারে ডলারের জোগান বেড়েছে। এখন ব্যাংকগুলো তাৎক্ষণিকভাবে ডলার দিয়ে এলসি খুলছে। কোনো বকেয়া এলসি খুলছে না। ফলে আগামী দিনে ডলারের সংকট আরও কমে যাবে।
তিনি আরও বলেন, ডলার খরচ হয় সেবা ও পণ্য ক্রয় এবং ঋণ ও বিদেশি দায় মেটাতে। এখন আমদানি মূল্য তদারকি করা হচ্ছে। ফলে সঠিক পরিমাণে ডলার খরচ হচ্ছে। এতে ডলারের চাহিদা কমেছে। অন্যদিকে বিদেশি দায়ও কমে এসেছে। ভবিষ্যতে বিদেশি ঋণ আসবে, যাতে রিজার্ভ বাড়বে। এ কারণে ডলারের দাম কমানোর সিদ্ধান্তটি সঠিক ও সময়োপযোগী।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র মেজবাউল হক আরও বলেন, গত বছরে স্বল্পমেয়াদি বিদেশি ঋণের দায় ছিল ১ হাজার ৬০০ কোটি ডলার, এখন যা কমে হচ্ছে ৬৯০ কোটি ডলার। পাশাপাশি চলতি হিসাবে ১০০ কোটি ডলার উদ্বৃত্ত রয়েছে। গত বছর এ খাতে বড় ঘাটতি ছিল। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পক্ষ থেকে এমন বক্তব্য দেওয়া হলেও ব্যাংকগুলোয় দেখা গেছে বিপরীত চিত্র। রেমিট্যান্স কেনার ক্ষেত্রে ডলারের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে ১১০ টাকা।
৫ শতাংশ প্রণোদনাসহ এর দাম সর্বোচ্চ ১১৫ টাকা ৫০ পয়সা হতে পারে। কিন্তু অনেক ব্যাংক বৃহস্পতিবার রেমিট্যান্স কিনেছে ১২১ টাকার বেশি দামে। ফলে ওইসব ডলার তারা বাজারে বিক্রি করছে ১২৩ থেকে ১২৪ টাকা দামে। বর্তমানে যেসব ব্যাংক অতিরিক্ত দামে রেমিট্যান্স কিনেছে, শুধু তারাই ডলার পাচ্ছে। ডলারের দাম বেশি না দেওয়ায় অনেক ব্যাংক এখন রেমিট্যান্স কিনতে পারছে না।
খুলনা গেজেট/ এএজে