সরকারের বেঁধে দেওয়া দামে আলু বিক্রি নিশ্চিত করতে বাজার নিয়ন্ত্রণে সারাদেশের ন্যায় ঝিনাইদহের হরিণাকুন্ডুতে চলছে প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান। করা হচ্ছে জরিমানাও। কিন্ত কোন কিছুতেই নিয়ন্ত্রণে আসছে আলুর বাজার। গত একসপ্তাহ ধরে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আলুর দাম। ফলে নাভিশ্বাস উঠছে ক্রেতা সাধারণের। গত এক সপ্তাহ আগে যেখানে প্রতি কেজি আলু খুচরা বাজারে বিক্রি হতো ২৫-৩০ টাকা দরে বর্তমনে তা বেড়ে দাড়িয়েছে ৫০-৬০ টাকায়।
এদিকে সরকার নির্ধারিত মূল্যে আলু বিক্রি নিশ্চিত করতে মাঠে নেমেছে উপজেলা প্রশাসন ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ভ্রাম্যমাণ আদালত। তারা গত শুক্র ও শনিবার উপজেলার রিশখালি, দখলপুর, পার্বতিপুর, উপজেলা মোড় দৈনিক বাজার, হরিনাকুন্ডু , কুলবাড়িয়া, ভবানিপুরসহ বেশকিছু বাজারে অভিযান পরিচালনা করেছেন। এসময় সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের অতিরিক্ত মূল্যে আলু বিক্রি করার অপরাধে অন্তত দশজন খুচরা ব্যবসায়িকে করেছেন জরিমানাও। তারপরও কমছে না আলুর দাম। ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযান শেষ হলে ফের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছেন ব্যবসায়িরা।
শনিবার উপজেলার হরিণাকুন্ডু বাজারে গিয়ে দেখা যায়, খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা দরে। ইউএনও আসছেন এমন খবরে সাথে সাথেই ৫০ টাকা থেকে ৩০ টাকায় নেমে আসে প্রতি কেজি আলুর দাম। ইউএনও চলে গেলে ফের ৫০ টাকা প্রতি কেজি দরে শুরু হয় বিক্রি। এ নিয়ে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে বাক-বিতন্ডাও লক্ষ করা যায়।
শনিবার সকালে হরিণাকুন্ডু উপজেলা মোড়ের দৈনিক বাজারে আহসান নামে এক ক্রেতাকে একজন খুচরা বিক্রেতার সাথে বাক-বিতন্ডায় জড়িয়ে পড়তে দেখা যায়, জানতে চাইলে তিনি জানান, তিনি মিডিয়ার মাধ্যমে জেনেছেন দেশে পর্যাপ্ত আলুর মজুদ রয়েছে। সরকার আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে দামও নির্ধারণ করে দিয়েছেন খুচরা প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে। কিন্ত ব্যবসায়িরা ৫০ টাকার নিচে আলু বিক্রি করছেন না। সরকার নির্ধারিত দামে আলু চাইলে তারা বিক্রি করবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিচ্ছেন।
এ বিষয়ে ওই খুচরা ব্যবসায়ি খাইরুল ইসলাম বলেন, তিনি পাইকার মহাজনের কাছ থেকে ৪৬ টাকা প্রতি কেজি দরে দুই মন আলু কিনে এনে বাজারে বিক্রি করছেন। তাহলে নিজে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তো আর ৩০ টাকা দরে বিক্রি করতে পারি না।
আব্দুল খালেক মুন্সি নামে হরিণাকুন্ডু বাজারের এক পাইকারি আলু ব্যবসায়ি বলেন, তিনি আড়তদার কাছ থেকে প্রতি কেজি আলু ৪৩ টাকা দরে কিনেছেন। এর সাথে পরিবহন খরচও রয়েছে। তাই ৪৫-৪৬ টাকার নিচে বিক্রি করলে লোকসান গুণতে হয়।
এ বিষয়ে ইউএনও সৈয়দা নাফিস সুলতানা বলেন, সরকারের নির্দেশনা অনুযায়ী নির্ধারিত মুল্যের বেশি যেন কোনক্রমেই ব্যবসায়িরা আলু বিক্রি করতে না পারে সেজন্য নিয়মিত বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বেশি দামে বিক্রির দায়ে তাদের জরিমানাও করা হচ্ছে। এ বিষয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কঠোর অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও তিনি জানান।
খুলনা গেজেট/এনএম