জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও বিরোধী দলের চূড়ান্ত আন্দোলন ঘিরে প্রবল বেগে চলছে বিএনপি নেতাদের মামলার বিচারকাজ। মামলার কার্যক্রমে এমনই গতি– দিনে তো বটেই, রাতেও চলছে মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ। গতি পাওয়া এমন মামলার সংখ্যা শতাধিক। এ পটভূমিতে সাজাভীতিতে আচ্ছন্ন হয়ে আছেন বিএনপির অনেক প্রভাবশালী কেন্দ্রীয় ও মাঠপর্যায়ের পোড়খাওয়া নেতা। এরই মধ্যে বিএনপি নেতাকর্মীর কেউ কেউ শুনছেন মামলার রায়ও। প্রিয় রাজনীতির মাঠকে আপাতত বিদায় বলে সাজা মাথায় নিয়ে তাদের কারও কারও গন্তব্য চৌদ্দ শিকে।
সারাদেশে বিএনপি নেতাকর্মীর নামে মামলা দেড় লক্ষাধিক। নতুন-পুরোনো মামলার মিশেলে আদালত আঙিনায় চক্কর দিতে দিতেই ঘাম ছুটছে তাদের। কাঠগড়া, হাজিরা, জামিন– এসবই আসামিদের এখনকার যাপিত জীবন। ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক আর কর্মজীবন হয়ে গেছে তছনছ। নতুন করে ভর করেছে মামলার সাজার শঙ্কা।
এর মধ্যেই গতকাল শনিবার আইনজীবীদের মহাসমাবেশে অগ্নিসন্ত্রাসীদের মামলাগুলোর বিচার দ্রুত সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আইনজীবী ও সরকারি কর্মকর্তাদের অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘২০১৩ সালে যারা অগ্নিসন্ত্রাসের সঙ্গে জড়িত, জেলায় জেলায় যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে– সেগুলো দ্রুত সম্পন্ন করতে হবে।’
অবশ্য বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আমাদের দীর্ঘদিনের অভিযোগ প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যেই প্রমাণ মিলেছে। সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ের এ ধরনের নির্দেশনায় এখন আরও দ্রুতগতিতে আদালত বিএনপি নেতাদের নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করতে ফরমায়েশি সাজা দিতে উৎসাহিত হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নির্বাচনের আগে বিরোধী দলের নেতাদের অতিদ্রুত সাজা দিতে সরকার সেল গঠন করেছে। এটা এখন সারাদেশেই চলছে। সরকার তালিকা ধরে বিভিন্ন জেলায় গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা দ্রুত শেষ করতেই ওই সেল করেছে। সরকার বিরোধী দল নির্মূলে পোড়ামাটি নীতি নিয়েছে।’ বিএনপি নেতারা অভিযোগ করে বলছেন, ঢাকা মহানগরে দলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে প্রায় ১৮ হাজার মামলা রয়েছে। এর মধ্যে শতাধিক মামলার সাক্ষ্য নেওয়া হচ্ছে। গত ছয় মাসে ঘোষিত এসব মামলার রায়ে ৯৬ নেতাকর্মীর সাজা হয়েছে। নজিরবিহীনভাবে এসব মামলার কার্যক্রমকে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। অস্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় এসব মামলার ঘন ঘন তারিখ দিয়ে নির্দিষ্ট এজেন্ডা বাস্তবায়নের দিকে এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে বলে নেতাকর্মী অভিযোগ করেন।
তারা আরও অভিযোগ করেন, নির্বাচনের আগে বিএনপির যোগ্য প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণা করতে চায় সরকার। চলমান আন্দোলন ব্যাহত করতেই টার্গেট করে মামলাগুলোকে সচল করা হয়েছে। যেভাবে এবং যে প্রক্রিয়ায় মামলাগুলোকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে, তা বিচারপ্রার্থীদের ওপর এক রকমের জুলুম।
যেসব নেতার মামলায় গতি
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর থেকে শুরু করে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু, মোহাম্মদ শাহজাহান, ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন, সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, হাবিব-উন-নবী খান সোহেল, বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, বিএনপির বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক সালাহউদ্দিন আহমেদ, সহ-প্রচার সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, আমিরুল ইসলাম আলিম, সহ-গ্রামবিষয়ক সম্পাদক বেলাল আহমেদ, সহ-স্বেচ্ছাসেবকবিষয়ক সম্পাদক আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েল, সহ-পল্লী উন্নয়নবিষয়ক সম্পাদক বজলুল করিম চৌধুরী আবেদ, নির্বাহী সদস্য শেখ রবিউল আলম রবি, যুবদলের সাবেক সভাপতি সাইফুল আলম নিরব, সভাপতি সুলতান সালাহউদ্দিন টুকু, ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর আহমেদ রবিন, যুবদলের সাধারণ সম্পাদক মোনায়েম মুন্না, সাবেক সহসভাপতি এস এম জাহাঙ্গীর, যুবদলের গোলাম মাওলা শাহীন, ইসহাক সরকার, ফেরদাউস মুন্না, কৃষক দলের সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রশিদ হাবীব, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাজীব আহসান, ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আকরামুল হাসানসহ স্বেচ্ছাসেবক দল, যুবদল ও ছাত্রদলের সাবেক নেতাদের বড় একটি অংশ এসব মামলার আসামি হিসেবে রয়েছে।
সবার বিরুদ্ধে চলমান মামলা শেষ পর্যায়ে। এর মধ্যে মির্জা ফখরুলের বিরুদ্ধে ২, বরকত উল্লাহ বুলুর ১০, আমান উল্লাহ আমানের ১৩, রুহুল কবির রিজভীর ২০, সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলালের ২৭, হাবিব-উন-নবী খান সোহেলের ৪৭, শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাসের ২৫, সাইফুল আলম নিরবের ৭৩, এস এম জাহাঙ্গীরের ৪০, সুলতান সালাহউদ্দিন টুকুর ৩২, আবদুল কাদির ভূঁইয়া জুয়েলের ২৪ ও ইসহাক সরকারের ৩১টি মামলার সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে।
বিএনপি নেতা ও আইনজীবীরা দীর্ঘদিন ধরে অভিযোগ করে আসছেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা সক্রিয় করতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে একটি সেল গঠন করা হয়েছে। সেই সেলের তত্ত্বাবধায়নে শুধু ঢাকা মহানগরে ৯৭ মামলার তালিকা করা হয়। তবে এখন মামলার সংখ্যা অনেক গুণ বেড়েছে। ওই সব মামলায় জ্যেষ্ঠ নেতা ছাড়াও মধ্যম সারি ও তৃণমূলের অনেক নেতাকর্মী আসামি। রাজধানী ঢাকা ছাড়াও অন্য জেলা ও নগরে বিএনপি নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে থাকা মামলাও সক্রিয় ও দ্রুত বিচারের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।
জানা গেছে, ২০১৩-১৪ সালের মামলা ছাড়াও ওয়ান-ইলেভেন এবং ২০১৮-১৯ সালের অনেক মামলা দ্রুত নিষ্পত্তির দিকে রয়েছে। এর মধ্যে ২০১৫ সালের ভাটারা থানার এক মামলার রায়ে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ শাহজাহানসহ ১৫ জনকে সাজা দিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এর আগে মেট্রোপলিটনের আরেক ম্যাজিস্ট্রেট আদালত বিএনপির ১০ নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে ২০১২ সালের একটি মামলায় রায় ঘোষণা করেন। এতেও প্রত্যেককে দুই বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়। ২০১৩ সালে গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে মামলায় গত ৭ আগস্ট যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক ইসহাক সরকারসহ ২১ জনকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
সাজা পাওয়া নেতাদের আইনজীবীরা অভিযোগ করেন, নিম্ন আদালতে এখন রাজনৈতিক মামলাগুলোকেই বেশি প্রাধান্য দেওয়া হচ্ছে। যেখানে পুরোনো সাধারণ মামলার ধার্য তারিখ তিন থেকে চার মাস পর পড়ছে, সেখানে রাজনৈতিক মামলার তারিখ পড়ছে ৭ থেকে ১০ দিনের মধ্যে। সাক্ষীদের সমন জারির স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এখানে মানা হচ্ছে না। ডিসি (পুলিশ) প্রসিকিউশন সবকিছু তদারকি করছে। এমনকি এ প্রক্রিয়ায় সরকারের কৌঁসুলিরাও (পিপি) থাকেন অন্ধকারে।
আইনজীবী সৈয়দ জয়নুল আবেদীন মেসবাহ বলেন, ২০১৩ সালের পুরোনো মামলা নিষ্পত্তি করার উদ্যোগ নিয়েছেন বলে জানিয়েছিলেন আইনমন্ত্রী। তবে সেখানে শুধু নতুন-পুরোনো রাজনৈতিক মামলাকেই টার্গেট করা হয়েছে। বর্তমানে যেভাবে বিচার প্রক্রিয়া চলছে তাতে মনে হচ্ছে, বিচারকরাও অনেকটা অসহায়। যতই যুক্তিতর্ক দিয়ে নির্দোষ প্রমাণ করা হোক, তাতে কিছু যায়-আসে না। আগে থেকেই রায় নির্ধারিত থাকে। বিএনপি নেতা ও তাদের আইনজীবীদের সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি আবদুল্লাহ আবু। তিনি বলেন, আদালত তার নিজস্ব গতিতে চলবে। স্বাভাবিক গতিতে সব মামলা চলছে। রাত অবধি সাক্ষী নেওয়ার ঘটনা আমার জানা নেই। তবে সাক্ষী এলে তা মামলার জন্য ভালো। এতে দোষের কিছু নেই। ঘন ঘন তারিখ পড়ার ঘটনাও ঠিক নয়। আর সমন ছাড়া সবার সাক্ষ্য গ্রহণ সম্ভব নয় বলে তিনি জানান।
ভুক্তভোগী অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস জানান, গত ৯ অক্টোবর রমনা থানার এক মামলার চার্জ শুনানি ছিল। ওই মামলার ঘটনার সময় তিনি পুলিশ হেফাজতে আটক ছিলেন এবং আরেকজন আসামি অ্যাডভোকেট আহসান হাবিব বিদেশে চিকিৎসাধীন ছিলেন। তবে সেসব আমলে না নিয়ে তাদের বিরুদ্ধে চার্জ গঠন করে গত বৃহস্পতিবার থেকে সাক্ষ্য শুরুর দিন ধার্য করেন আদালত।
যেভাবে চলছে দ্রুত বিচারকাজ
গত ৩ অক্টোবর বিশেষ ট্রাইব্যুনাল আদালতে ৪৩৫/১৯ মামলার ধার্য দিনে সকাল ৯টায় আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে বিএনপি নেতা শিমুল বিশ্বাস জানতে পারেন, বিচারক ছুটিতে থাকায় আদালত বসবে না। ওই আদালতের নির্ধারিত অন্যসব মামলার পরবর্তী তারিখ জানালেও তাদের অন্য আদালতে নেওয়া হয়। সেখানে সাক্ষীর সাক্ষ্য রেকর্ড করা হয়।
বিরোধী নেতাদের আইনজীবীরা বলেন, সরকার সাক্ষ্য শেষ করে দ্রুত রায় দিতে চায় বলে রাজনৈতিক মামলার হাজিরা ৫ থেকে ৭ দিন পরপর ধার্য করছে। আর রাত অবধি সাক্ষ্য নেওয়ার ঘটনা ঘটছে অহরহ। একই দিন একটি আদালত ১৯ মামলার সাক্ষীদের জবান রেকর্ড করার ঘটনা নজিরবিহীন। দক্ষিণখান থানার ২০১৩ সালের এক মামলার কার্যক্রম দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে। সাক্ষ্য কার্যক্রম প্রায় শেষ পর্যায়ে। এ মামলায় বরকতউল্লাহ বুলু, এসএম জাহাঙ্গীরসহ ৮৬ জন আসামি। গত ১৯ জুলাই রাত ৮টা পর্যন্ত এ মামলায় ৮ সাক্ষীর বয়ান নেওয়া হয়।
গত বুধবার পল্টন থানার এক মামলার ১১ সাক্ষীর বয়ান রেকর্ড করা হয় রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত। এ মামলায় ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনুসহ আরও অনেকে আসামি। তাদের আইনজীবী মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, আসামি পক্ষের আইনজীবী উপস্থিত না থাকলেও সাক্ষ্য নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। তাই বাধ্য হয়ে আদালতের কার্য সময়ের বাইরেও থাকতে হয়েছে। প্রথা অনুযায়ী মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সবার শেষে সাক্ষ্য দেন। তবে এসবের কিছু মানা হচ্ছে না। তাড়াহুড়ার কারণে অনেক ক্ষেত্রে পুলিশ হেফাজতে কিংবা কারাগারে থাকা নেতাদের পিডব্লিউ আইনও মানা হচ্ছে না। শাহবাগ থানার এক মামলায় বিএনপি নেতা শেখ রবিউল আলম রবি কারাবন্দি। তবে সেই মামলায় চার্জ গঠনকালে পিডব্লিউ অগ্রাহ্য করে তাঁর জামিন বাতিল করা হয়।
আইনজীবীদের অভিযোগ, এসব মামলায় সাধারণ সাক্ষীদের উপস্থিতি একেবারে নগণ্য। শুধু পুলিশের সাক্ষ্য গ্রহণ চলছে। তাদের ‘জানা কথা, শোনা কথা’র ওপর ভিত্তি করে সাজা দেওয়া হচ্ছে বা প্রক্রিয়া চলছে। ওইসব সাক্ষী প্রত্যক্ষদর্শী নন, তারা আসামিদের শনাক্ত করতেও পারেন না। শুধু মুখস্থ বয়ানের ওপর ভিত্তি করে মামলা চলছে। আইনের মাধ্যমে বিচার চললে এসব মামলার একটাও টিকত না। সবচেয়ে বড় অভিযোগ– অধিকাংশ ক্ষেত্রে সাক্ষীদের ঠিকমতো জেরা করার সুযোগ পাওয়া যাচ্ছে না।
রাতে সাক্ষ্য নেওয়া নিয়ে প্রশ্ন আইনজ্ঞদের
সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী মনজিল মোরসেদ বলেন, এই ডিজিটাল যুগে কোনো কিছুই গোপন থাকে না। বিএনপির পক্ষ থেকে আগে থেকেই অভিযোগ করা হয়েছে, দ্রুত মামলা নিষ্পত্তি করতে সেল গঠন করেছে সরকার। আইনমন্ত্রীও তা স্বীকার করেছেন। তবে কোন মামলা দ্রুত করা হবে সেটা তো বাস্তবেই দেখা যাবে। আর রাজনৈতিক মামলার উদ্দেশ্যই থাকে ভিন্ন। রাত পর্যন্ত কেন সাক্ষ্য নেওয়া হবে? এখন যেসব অভিযোগ আসছে তা একেবারে ফেলে দেওয়া যাবে না। আজকে বিচার বিভাগকে একটি পক্ষের সম্পৃক্ত করার চেষ্টা দেশ ও মানুষের জন্য মঙ্গলজনক হবে না। মানুষের শেষ ভরসাস্থলকে নিয়ে আস্থার সংকট তৈরি হলে দেশ ক্ষতিগ্রস্ত হবে, সরকারও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
পুলিশ কর্মকর্তারা নীরব
এ বিষয়ে পুলিশের কোনো পর্যায়ের কর্মকর্তা মন্তব্য দিতে রাজি হননি। বিচারিক বিষয়টি আদালতের এখতিয়ার বলে এড়িয়ে গেছেন তারা। অবশ্য সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ফৌজদারি মামলার কোনোটির তদন্ত আগে হবে, কোনোটির পরে– এটার কোনো ধরাবাধা নিয়ম নেই। যে কোনো মামলায় সাক্ষ্য-প্রমাণের ভিত্তিতেই পুলিশ অভিযোগপত্র দেয়। মামলার ব্যাপারে বিএনপির কোনো অভিযোগ থাকলে তারা আদালতের নজরে আনতে পারে। এমন কিছু মামলা আছে তিন দিনেই অভিযোগপত্র দেওয়া হয়েছে। আবার অনেক হত্যা মামলার তদন্ত বছরের পর বছর চলতে থাকে। সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক সমকালকে বলেন, বিএনপি এখন যেসব মামলার ব্যাপারে অভিযোগ করছে, এর অধিকাংশই অনেক আগে অভিযোগপত্র হয়েছে। অভিযোগপত্রের পর বিচারিক বিষয়ের পুরো এখতিয়ার আদালতের। এখানে পুলিশের করার কিছু থাকে না।
সূত্র : দৈনিক সমকাল
খুলনা গেজেট/এইচ