খুলনা, বাংলাদেশ | ১০ অগ্রহায়ণ, ১৪৩১ | ২৫ নভেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  সাবেক আইজিপি মামুনের ফের ৩ দিনের রিমান্ড
  অ্যান্টিগা টেস্ট: তৃতীয় দিন শেষে বাংলাদেশ ২৬৯/৯, পিছিয়ে ১৮১ রানে
স্বল্প দাম, মানও ভালো হওয়ায় প্রতিনিয়ত ভিড় বাড়ছে

গরীবের ফুডকোর্টে ধনীদের ভিড়

আয়শা আক্তার জ্যোতি

খুলনা নগরীর নিউ মার্কেটের পাশেই বায়তুন নূর জামে মসজিদ। মসজিদের পূর্ব গেট দিয়ে নিউ মার্কেটে যাওয়ার ছোট্ট করিডোর। গত দুই বছর ধরে ছোট এই করিডোরেই বসছে খুলনার সবচেয়ে বড় খাবারের পসরা। স্বল্প দামে বাহারী খাবারের স্বাদ নিয়ে প্রতিদিন সেখানে ভিড় করেন হাজারো মানুষ। অল্প দামের কারণে এতোদিন নিম্ন ও মধ্য আয়ের ক্রেতারা এখানে ভিড় করতো। কিন্তু স্বাদের কারণে উচ্চবিত্তে পরিবারের অনেক যুবকদের সেখানে দেখা যায়।

সরেজমিন নিউ মার্কেট এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, ভ্যানের (ফুড কার্ট) ওপর বিভিন্ন দোকান বসানো হয়েছে। বিকাল থেকেই একের পর দোকান খুলতে থাকে। ক্রেতাদের সামনেই খাবার তৈরি করে দেন বেশিরভাগ দোকানী। সন্ধ্যার পর সেখানে পা ফেলা কষ্ট হয়ে যায়।

এখানে যেমন রয়েছে বাহারি দোকান, তেমন বাহারি সব রংবেরঙের খাবার। যেমন, হালিম, নিহারি, টিকিয়া, কাবাব,চুইঝালের ননান পদ। তেমন আছে জনপ্রিয় নাগা ফুসকা, এবং খুলনার বিখ্যাত ডিম ঘুটা । আছে ঝালমুড়ি, বেগুনি, পুরি,আলুর চপ, ডিমের চপ, পেঁয়াজু। তেমনই স্থান করে নিয়েছে ১২০ টাকায় বাসমতীর চিকেন বিরিয়ানি।

শুধু যে দেশিও খাবারের মধ্যে আটকে আছে তা নয়। এখানে পাওয়া যাচ্ছে বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন স্বাদের ফাস্ট ফুড আইটেম যেমন, মাশরুম পিজ্জা, চিকেন পিজ্জা, চিকেন বার্গার, চিকেন শর্মা, চিকেন পাস্তা, সাব স্যাডুইচ , চিকেন সুপ, কর্ণ সুপ, অনথন, ফ্রেস্ন ফ্রাই, চিকেন ফ্রাই, ফ্রাইডরাইচ, নুডলস, দোসা, রোলার কস্ট ফ্রুটস আইসক্রিম।

করোনা মহামারী কাটিয়ে ২০২১ এর মার্চে যাত্রা শুরু করে গরীবের ফুড কোড খ্যাত খাবারের এই স্বর্গরাজ্য। ছোট্ট এই জায়গাটিতে রয়েছে পঞ্চাশ এর অধিক ফুড কার্ট। প্রতিটি কার্টে দৈনিক ৭ থেকে ৮ হাজার টাকার খাবার বিক্রি হয় বলে জানান বিক্রেতারা।

সম্প্রতি এক বিকালে খাবার খেতে আসা তিন শিক্ষার্থীর সাথে কথা হয় খুলনা গেজেটের। তারা জানান, সন্ধ্যার নাস্তা হিসেবে কােন রেস্তোরাঁ না গিয়ে তারা প্রায়ই এই ফুড কোর্টে আসেন।  রেস্তোরাঁয় না যাওয়ার কারণ জানতে চাইলে তারা বলে, এখানে অল্পদামে নানা রকম সুস্বাদু মজার আর বাহারি খাবার পাওয়া যায়। যা আমাদের পেট ও মন দু’টোই খুব সহজে ভরিয়ে দেয়।

দোকানে সামনে দাড়িয়ে খাবারের জন্য অপেক্ষা করতে থাকা এক দম্পতি জানান, খাবার আমাদের সামনেই তৈরি করে দিচ্ছে। কি দিয়ে, কিভাবে তৈরি করছে তা’ নিজেরাই দেখতে পাচ্ছে। তাই খাবার এর মান নিয়ে ভাবছেন না তারা।

পুরো ফুডকোর্ট ঘুরে দেখা গেছে, সেখানে খাবারের সঙ্গে বিভিন্ন স্বাদের পানিও পাওয়া যায়। এর মধ্যে আছে আখের রস, চা-কফি, বিভিন্ন ফ্লেভারের মিল্কসেক, লাচ্ছি, মাল্টা এবং কাঁচা-পাকা আমের জুস। এখানে জিরা পানি, লেবু পানি বা মহিতো এক অন্য রকম স্বাদ এনে দিয়েছে। তবে তেঁতুল চা বাড়তি আকর্ষণ তৈরি করেছে খাদ্যপ্রেমিদের মাঝে।

বিকালে মসজিদের পাশে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছিলেন ১৫/২০ শিক্ষার্থী।  ভার্সিটির ক্লাস শেষ করে কেউ আড্ডা দিচ্ছেন, কেউ গান গাইছেন।  এখানে আসার কারণ জানতে চাইলে তারা বলেন, বন্ধুরা মিলে একসঙ্গে খাওয়ার আনন্দ অন্য রকম। এখানে খাবারের দাম কম, স্বাদও ভালো। সারাদিন বোরিং ক্লাস শেষে খাওয়া এবং আড্ডা দেওয়া জন্য এ-ই জায়গাটাই বেস্ট।

অফিস থেকে ফেরার পথে পরিবারের জন্য খাবার নিতে হাজির হয়েছিলেন হক আহমেদ।  তিনি বলেন, কম দামে ভালো মানের খাবার পাওয়া যায়। পরিবারিক নাস্তার জন্য এদের খাবার সবদিক থেকেই সেরা।

 

খুলনা গেজেট/এইচ




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!