কানাডায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ডেভিড কোহেন বলেছেন, শিখ নেতা হরদিপ সিং নিজার হত্যাকাণ্ডে ভারত জড়িত ‘ফাইভ আইস’ গোয়েন্দা জোটের কাছ থেকে এমন তথ্য পেয়েছে কানাডা। এর ফলে ওই হত্যাকাণ্ডে ভারতের এজেন্টরা জড়িত বলে অভিযোগ করতে উৎসাহিত হয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। কানাডার ২৪ ঘন্টার নিউজভিত্তিক চ্যানেল সিটিভি নিউজ চ্যানেল যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ডেভিড কোহেনকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে।
‘ফাইভ আইস’ নেটওয়ার্ক হলো যুক্তরাষ্ট্র, বৃটেন, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা এবং নিউজিল্যান্ডের একটি গোয়েন্দা জোট। এটি নজরদারিভিত্তিক এবং সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্সও। জাস্টিন ট্রুডো গত ১৮ই সেপ্টেম্বর নিজার হত্যায় ভারতের সরাসরি জড়িত থাকার অভিযোগ করেন। তার পররাষ্ট্রমন্ত্রী মেলানি জোলি আর একটু এগিয়ে বলেন, এর সঙ্গে ভারতের গোয়েন্দা সংস্থা ‘র’ জড়িত। সঙ্গে সঙ্গে কানাডা থেকে ভারতীয় একজন সিনিয়র কূটনীতিককে তিনি বহিষ্কার করেন। এরপর ভারতও একই রকম পাল্টা ব্যবস্থা নেয়।
কানাডার এসব অভিযোগকে ভারত উদ্ভট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত আখ্যায়িত করে প্রত্যাখ্যান করেছে।
সিটিভি যে রিপোর্ট করেছে তা এর ‘কোয়েশ্চেন পিরিয়ড উইথ ভ্যাসি কাপেলোস’ প্রোগ্রামে কানাডায় নিযুক্ত যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত ডেভিড কোহেনের সঙ্গে একটি এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারের ওপর ভিত্তি করে। এই সাক্ষাৎকার আজ রোববার প্রচার হওয়ার কথা।
ডেভিড কোহেনকে উদ্ধৃত করে সিটিভি রিপোর্ট করেছে। সেখানে ডেভিড কোহেন বলেছেন, ফাইভ আইস অংশীদারদের মধ্যে অভিন্ন গোয়েন্দা তথ্য আছে। তার ফলে কানাডার প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করতে উদ্বুদ্ধ হয়েছেন। এরপর বাড়তে থাকে কূটনৈতিক উত্তেজনা। ভারতে তার কর্মীদের পুনর্মূল্যায়ন করতে শুরু করে কানাডা। কানাডিয়ানদের জন্য ভিসা স্থগিত করে ভারত। এর কেন্দ্রে যে কাহিনী তা হলো কোন গোয়েন্দা তথ্য রয়েছে কেন্দ্রীয় অবস্থান, এটা সম্পর্কে কে অবহিত হয়েছেন এবং কখন।
এই তদন্ত কি মানুষ বা নজরদারির ভিত্তিতে করা হয়েছে কিনা, অথবা এতে ভারতীয় কূটনীতিকদের সিগন্যাল ইন্টেলিজেন্স আছে কিনা সে সম্পর্কে ডেভিড কোহেন মন্তব্য করেননি। তিনি বলেছেন, ফাইভ আইস পার্টনারদের মধ্যে শেয়ার করা গোয়েন্দা তথ্য আছে। তাই ট্রুডোকে ওই মন্তব্য করতে উদ্বুদ্ধ করেছে।
উল্লেখ্য, এটাই এই হত্যাকাণ্ডে গোয়েন্দা তথ্যের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কোনো সরকারি কর্মকর্তার প্রথম তথ্য। একই বিষয়ে বিভিন্ন রকম রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। সিটিভি তার রিপোর্টে উল্লেখ করেছে যে, কানাডিয়ান ব্রডকাস্টিং করপোরেশন (সিবিসি) এবং বার্তা সংস্থা এপির রিপোর্ট ছিল এসব গোয়েন্দা বিষয়ে। এ জন্য ট্রুডো যে বক্তব্য দিয়েছেন তা শুধু কানাডা থেকে আসেনি। বাড়তি তথ্য দিয়েছে গোয়েন্দা তথ্য শেয়ার বিষয়ক এলায়েন্স বা জোট।
সিটিভি বলেছে, ওয়াশিংটন পোস্টের একটি রিপোর্ট প্রত্যাখ্যান করে এই মন্তব্য করেছেন তিনি (কোহেন)। ওয়াশিংটন পোস্ট একটি রিপোর্ট প্রকাশ করেছিল যে, ট্রুডোর ঘোষণার কয়েক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্রসহ ঘনিষ্ঠ মিত্রদেরকে এই হত্যার নিন্দা জানাতে অনুরোধ করেছিল অটোয়া। কিন্তু তারা তা প্রত্যাখ্যান করে। এই রিপোর্টকে ভুল বলে দাবি করেন কোহেন।
খুলনা গেজেট/এনএম