দোয়া আল্লাহর পক্ষ থেকে আমাদের জন্য অনেক বড় উপহার। কারণ বান্দার সবচেয়ে বড় আশ্রয় আল্লাহ তাআলা। দোয়ার মাধ্যমে মূলত আমরা তাঁর কাছে সমর্পিত হই। সমগ্র সত্তা দিয়ে আমাদের নানান আরজি তুলে ধরি। কায়মনোবাক্যে উপস্থাপন করি বিচিত্র প্রয়োজনের কথা। আমরা বিশ্বাস করি, তিনি আমাদের প্রার্থনা শোনেন। তিনি আমাদের ডাকে সাড়া দেন। কেননা তিনিই বলেছেন, ‘তোমরা আমাকে ডাকো। আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব।’ (সুরা গাফির: ৬০)
বিশিষ্ট তাবিয়ি হাসান বসরি (রহ.) বলেন, সাহাবায়ে কেরাম নবীজিকে জিজ্ঞাসা করলেন, ‘আমাদের রব কোথায়?’ তখন আল্লাহ তাআলা আয়াত অবতীর্ণ করলেন, ‘আমার বান্দারা যখন আপনাকে আমার ব্যাপারে জিজ্ঞেস করে, তাদের বলুন, আমি তাদের খুব নিকটে। কোনো বান্দা যখন আমাকে ডাকে তথা আমার কাছে দোয়া করে, আমি তার ডাকে সাড়া দেই।’ (সুরা বাকারা)
বান্দার দোয়া কখনোই বৃথা যায় না। কখনো কখনো মনে হয়, আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল করেন না। আমি এত এত দোয়া করেছি অমুক জিনিসটি পেতে, কিন্তু এখনো পেলাম না। মাঝে মাঝে হতাশা জেঁকে বসে আমাদের মনে। কিন্তু যখন আমরা জানব, আমাদের প্রতিটি দোয়ার বিনিময়ে আল্লাহ কী কী রেখেছেন, তখন আর কোনো হতাশা কাজ করবে না।
হজরত আবু সায়িদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, নবীজি (সা.) বলেন, ‘কোনো মুসলমান যখনই কোনো দোয়া করে, যেখানে গুনাহ-সংক্রান্ত আবদার কিংবা আত্মীয়তার সম্পর্ক ছিন্ন করার কথা নেই—আল্লাহ তাআলা সেই দোয়ার বিনিময়ে তিনটি বিষয় থেকে যেকোনো একটি বিষয় অবশ্যই দান করেন। এক. তার কাঙ্ক্ষিত আবেদন তাড়াতাড়ি পূর্ণ করেন। দুই. তার সওয়াব আখিরাতের জন্য সংরক্ষণ করেন। তিন. দুনিয়াতে অনুরূপ কোনো অনিষ্ট থেকে রক্ষা করেন।’ (মুসনাদে আহমদ)
লেখক: শিক্ষক ও হাদিস গবেষক