পর পর দুটো ম্যাচে হারের ধাক্কা কাটিয়ে অবশেষে আইপিএলে জয়ে ফিরল ধোনির চেন্নাই সুপার কিংস। সানরাইজার্স হায়দরাবাদকে ২০ রানে হারিয়ে আইপিএলের প্লে-অফে যাওয়ার আশা জিইয়ে রাখল চেন্নাই।
জয়ের জন্য শেষ ওভারে প্রয়োজন ২২ রান, প্রথম চার বলে কোনো রানই করতে পারল সানরাইজার্স হায়দরাবাদ। এর মধ্যে আবার তৃতীয় বলে একটি উইকেট তুলে নেন বোলার ডোয়াইন ব্রাভো। শেষের দুই বল থেকে আসে মাত্র ১ রান। ব্রাভোদের জয় হয় ২০ রানের ব্যবধানে।
শেষ ছয় বলে অমন সমীকরণের পরেও অবশ্য উত্তেজনাপূর্ণ ফাইনাল ওভারের আশা ছিল না। কেননা আগেই যে ৭ উইকেট হারিয়ে বসেছিল হায়দরাবাদ, উইকেটে স্বীকৃত ব্যাটসম্যানও ছিলেন না কেউ। টেইলএন্ডারদের বিপক্ষে মাত্র এক রান খরচ করে চেন্নাই সুপার কিংসের সহজ জয়ের আনুষ্ঠানিকতাটা শুধু শেষ করেছেন ব্রাভো।
এ জয়ের মাধ্যমে আইপিএলের চলতি আসরের দ্বিতীয়ার্ধেও শুভ সূচনা করল চেন্নাই। অর্থাৎ প্রথম সাত ম্যাচ খেলার পর, শেষের সাত ম্যাচের প্রথমটিতেও জয় পেল তারা। এর আগে প্রথম সাত ম্যাচের শুরুর ম্যাচ অর্থাৎ আসরের উদ্বোধনী ম্যাচে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মুম্বাই ইন্ডিয়ানসকে হারিয়ে উড়ন্ত সূচনা করেছিল মহেন্দ্র সিং ধোনির দল।
তবে প্রথম সাত ম্যাচের বাকি পথটা আবার ঠিক নিজেদের মতো করে পাড়ি দেয়া হয়নি চেন্নাইয়ের। প্রথম ম্যাচে জেতার পর বাকি ছয় ম্যাচে মাত্র একবার হাসিমুখে মাঠ ছাড়তে পেরেছিল ধোনির দল। এবার দ্বিতীয়ার্ধেও শুভ সূচনার পর বাকি ছয় ম্যাচের ফল কেমন হবে সেটিই দেখার বিষয়।
মঙ্গলবার রাতে দুবাই ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে নিজেদের অষ্টম ম্যাচে মুখোমুখি হয়েছিল চেন্নাই ও হায়দরাবাদ। যেখানে আগে ব্যাট করে শেষদিকের ঝড়ে ১৬৭ রানের চ্যালেঞ্জিং পুঁজি দাঁড় করায় চেন্নাই। জবাবে হায়দরাবাদের ইনিংস থামে ৮ উইকেটে ১৪৭ রান করে।
চেন্নাইয়ে ছুড়ে দেয়া ১৬৮ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে কখনওই মনে হয়নি ম্যাচটি জিততে চলেছে হায়দরাবাদ। শুরু থেকেই তাদেরকে চেপে ধরেন চেন্নাই বোলাররা। অধিনায়ক ডেভিড ওয়ার্নার ১৩ বলে ৯ ও মনিশ পান্ডে ফিরে যান ৩ বলে ৪ রান করে। পাওয়ার প্লে’র মধ্যে ২ উইকেট হারিয়ে চাপেই পড়ে যায় হায়দরাবাদ।
কেন উইলিয়ামসনের সঙ্গে তৃতীয় উইকেট জুটিতে চাপ সামাল দিতে গিয়ে বল নষ্ট করতে থাকেন আরেক তারকা ওপেনার জনি বেয়ারস্টো। ইনিংসের দশম ওভারে দলীয় সংগ্রহকে ৫৯ রানে রেখে সাজঘরে ফিরে যান তিনি, আউট হওয়ার আগে ২৪ বল খেলে করেন মাত্র ২৩ রান।
বেয়ারস্টোর বিদায়ে একা হয়ে যান উইলিয়ামসন। সঙ্গ দিতে পারেননি উদীয়মান তারকা প্রিয়াম গার্গও, আউট হয়ে যান ১৮ বলে ১৬ রান করে। তবু চেষ্টা চালিয়ে যান কিউই অধিনায়ক, ১৮তম ওভারে আউট হওয়ার আগে ৭ চারের মারে ৩৯ বলে করেন ৫৭ রান। কিন্তু এতে কাজের কাজ হয়নি।
শেষদিকে বিজয় শংকর ৭ বলে ১২ কিংবা রশিদ খান ৮ বলে ১৪ রানের ছোট ক্যামিও খেললেও, এগুলো স্রেফ পরাজয়ের ব্যবধান কমানোর কাজেই লাগে। শেষপর্যন্ত ১৪৭ রানে থামে হায়দরাবাদের ইনিংস। চেন্নাই পায় ২০ রানের সহজ জয়।
এর আগে সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বোলাররা যেভাবে নিয়ন্ত্রণে রেখেছিলেন, তাতে শেষ ৪ ওভারে হাত খুলতে না পারলে আরও একবার বিপদে পড়তো চেন্নাই। তবে মহেন্দ্র সিং ধোনি আর রবীন্দ্র জাদেজা শেষের এই লড়াইয়ে এবার উৎড়ে গেছেন বলা যায়।
দুবাইয়ে তাদের ব্যাটে চড়ে শেষদিকে মোটামুটি ভালো একটা সংগ্রহই পেয়ে যায় চেন্নাই, ৬ উইকেটে করে ১৬৭ রান। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে চেন্নাই শুরুতে সন্দ্বীপ শর্মার বলে ফাফ ডু প্লেসিসকে (০) হারালেও স্যাম কুরান চালিয়ে খেলছিলেন, ২১ বলে ৩১ রান করে তিনিও সন্দ্বীপেরই শিকার হন। তাতে ৩৫ রানে ২ উইকেট হারায় ধোনির দল।
সেখান থেকে শেন ওয়াটসন আর আম্বাতি রাইডু টেনে তুলেন দলকে। রাইডু ৩৪ বলে ৪১ করে যখন ফিরেছেন, চেন্নাইয়ের সংগ্রহ তখন ১৫.২ ওভারে ৩ উইকেটে ১১৬ রান। পরের ওভারে ওয়াটসনও (৩৮ বলে ৪২) সাজঘরের পথ ধরেন।
তবে শেষদিকে নেমে ছোট্ট ঝড়ে কাজের কাজ করে দিয়েছেন ধোনি-জাদেজা। ১৩ বলে ২১ রান করে আউট হন ধোনি। আর ১০ বলে ২৫ রানে অপরাজিত থেকেই মাঠ ছাড়েন জাদেজা।
খুলনা গেজেট/এএমআর