খুলনা, বাংলাদেশ | ৯ পৌষ, ১৪৩১ | ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

Breaking News

  বিজিবির সাবেক মহাপরিচালক মইনুল ইসলাম বিমানবন্দরে আটক; স্ত্রী সহ কানাডার উদ্দেশ্যে যাচ্ছিলেন তিনি
  ব্যক্তিগত আয়কর দেয়ার সময় বাড়লো ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত কোম্পানির ক্ষেত্রে ১৫ ফেব্রুয়ারি : এনবিআর

ভবিষ্যতের জন্য আর্থিক বিনিয়োগ দাবি তরুণদের

রামপাল প্রতিনিধি

‌‌‘‘ফান্ড আওয়ার ফিউচার” (আমাদের ভবিষ্যতের জন্য আর্থিক বিনিয়োগ কর) গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইক সমর্থনে বাগেরহাটে কর্মসূচি পালন করেছে। শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) সকালে বাগেরহাট প্রেসক্লাবের সামনে এই কর্মসূচি পালন করা হয়।

যুবরা সরকারি পর্যায়ের বিনিয়োগকারী ব্যাংকগুলো এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে জীবাশ্ম জ্বালানীর পরিবর্তে টেকসই প্রকল্প এবং নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ করার আহবান জানায়।

জলবায়ু সংকট নিরসন, ন্যায়বিচার দাবি ও জনগনকে সচেতন করতে একশনএইড বাংলাদেশের সহায়তায় ও এক্টিভিস্তা নেটওয়ার্ক এর ৩০ টিরও বেশি যুব সংগঠনের সহস্রাধিক তরুণ এই গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে অংশ নেয়। সংগঠণগুলোর মধ্যে অন্যতম ইয়ুথ একশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট, সূর্যোদয় যুব সোসাইটি, সিক্ত বাংলাদেশ, সোসাইটি ফর একশান এন্ড ডেভেলপমেন্ট অলটারনেটিভ-সাদা, চেঞ্জমেকার্স, ইয়ুথ একশন ফর ডেভেলপমেন্ট, নির্ভয় ফাউন্ডেশন, ওয়ার্ল্ড ইয়ুথ আর্মি, ভ্রমণকন্যা-ট্রাভেলেটস অব বাংলাদেশ, জনকল্যান সংস্থা, বিডি ফাউন্ডেশন, টিম ইনক্লুশন, ভলান্টিয়ার অপরচুনিটিস, উদ্ভাবন সমাজ কল্যাণ সংস্থা, শরুব ইয়ুথ টিম, এসএইচবিও, নোয়াখালী সাইবার ওয়ারিয়র্স, ব্রাইট ইয়ুথ অর্গানাইজেশন। একই সময়ে সাতক্ষীরা, বাগেরহাট, নোয়াখালী, কুড়িগ্রাম, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম, কুষ্টিয়া, সুনামগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা, সিলেট, নীলফামারি, জামালপুর ও বরগুনাসহ বাংলাদেশের ২৬টি জেলায় এবং ৭ টি লোকাল ইয়ুথ হাবে তরুণ এক্টিভিস্টা স্বেচ্ছাসেবকরাও এই গ্লোবাল ক্লাইমেট স্ট্রাইকে সংহতি প্রকাশ করেন।

এসময় তরুণরা দলমত নির্বিশেষে সমাজের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষদের সাথে নিয়ে জলবায়ু সংকট নিরসন, ন্যায়বিচার দাবিতে ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে অবস্থান নেয়। তাদের প্ল্যাকার্ডগুলোতে প্রকাশ পায় পৃথিবীকে জলবায়ু সংকট থেকে বাঁচিয়ে তুলার আকুতি। প্লেকার্ডে তাদের প্রতিবাদের অক্ষরে লিখা দাবি জীবাশ্ম জ্বালানীতে বিনিয়োগ বন্ধ কর; নবায়নযোগ্য জ্বালানীতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি কর, জলবায়ু সুবিচার চাই, ইত্যাদি প্রকাশ পায়।

তাছাড়াও যুবরা বলেন, উন্নত দেশগুলো জীবাশ্ম জ্বালানীতে অর্থায়নের মাধ্যমে জলবায়ু সংকট সৃষ্টি করছে, তাদের নব্য ঔপনিবেশিক শোষণ, যুদ্ধ এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের মাধ্যমে আমাদের এই পৃথিবীকে ধ্বংস করছে। পুঁজিবাদী মানসিকতা নিয়ে সর্বোচ্চ গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমনকারীরা জীবাশ্ম জ্বালানীতে অর্থায়নের মাধ্যমে পৃথিবীকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে যাচ্ছে যার প্রভাব পড়ছে মূলত দক্ষিণের জলবায়ু-সংরক্ষিত দেশগুলিতে। এটি অনুন্নত দেশগুলোর সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সম্প্রদায়ের কাছে তাদের পরিবেশগত ঋণ বহুগুন বাড়িয়ে তুলছে। আমরা বাংলাদেশের তরুণরা তাই সর্বোচ্চ কার্বণ নির্গমনকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও দেশগুলির কাছে অবিলম্বে জীবাশ্ম-তহবিল বন্ধ করাসহ জলবায়ু সংকটের কারণে ঝুঁকিতে থাকা সম্প্রদায়গুলির জন্য লস এন্ড ডেমেজ এ অর্থায়ন নিশ্চিত করার দাবি জানাচ্ছি। একই সাথে জিবাশ্ম জ্বালানির কোম্পানি ও বানিজ্যিক কৃষির মত ক্ষতিকারক এরিয়াগুলোতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি জানাচ্ছি।

জলবায়ু বিষয়ে জনগন ও নীতিনির্ধারকদের সুবিবেচনার জন্য স্ট্রাইকের বিকল্প নেই বলে জানান একশনএইড বাংলাদেশের একজন তরুণ এক্টিভিস্টা ও জলবায়ুকর্মীরা তারা বলেন, “প্রতি বছর উপকূলীয় অঞ্চলে পানি বাড়ছে এবং আমি যেখান থেকে এসেছি সেখানে আমাদের বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়ছে। ভবিষ্যত প্রজন্ম ও বাসযোগ্য পৃথিবীর জন্য টেকসই উন্নয়ন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানিতে বিনিয়োগ করা বাঞ্চনীয়। যত তাড়াতাড়ি আমাদের বৈশ্বিক নেতৃবৃন্দ এই কাজ করবে তত তাড়াতাড়ি এ পৃথিবী সুরক্ষিত হবে।”

একশনএইড বাংলাদেশ এর যুব প্রোগ্রামের ব্যবস্থাপক মোঃ নাজমুল আহসান জানান “সারা পৃথিবীতে যে হারে জীবাশ্ম জ্বালানিতে ও ব্যবসায়িক কৃষি পন্যে বিনিয়োগ বেড়ে চলছে তা ন্যায়ভিত্তিক ও টেকসই উন্নয়নমূলক পৃথিবী গড়ার ক্ষেত্রে একটি বিরাট অন্তরায়। ফলে বাংলাদেশের তরুণরা নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জলবায়ু সহিষ্ণু টেকসই কৃষিতে বিনিয়োগের গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে জ্বালানি নিরাপত্তা, খাদ্য নিরাপত্তা এবং জলবায়ু প্রশমন তহবিলের দাবি করছে।”

একশনএইড বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর ফারাহ্ কবির বলেন, ‘‘ফসিল-ফাইনান্স ও ক্ষতিকর ব্যাবসায়িক কৃষি পন্যতে বিনিয়োগ প্রবণতা ক্রমবর্ধমান পুঁজিবাদী মানসিকতার একটি প্রধান উদাহরণ যেখানে মানুষের চেয়ে মুনাফাই মুখ্য। এটি পৃথিবীতে বাস্তুতন্ত্র এবং জলবায়ুকে মারাত্মকভাবে ধ্বংস করছে। ফলে বিরুপ প্রভাব পড়ছে গ্লোবাল সাউথের দেশগুলোর উপর। এর ফলে অতি মাত্রায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে নারী ও যুবসহ বিপদাপন্ন গ্রুপগুলো। আমরা যদি এখনই সোচ্চার না হই তবে নিকট ভবিষ্যতে আমাদেরকে বড় দূর্যোগ ও বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হবে, বাস্তুচ্যুত হতে হবে আমাদের মত দেশগুলির লক্ষাধিক মানুষকে!

 

খুলনা গেজেট/এনএম




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!