জি-২০ সম্মেলন শুরুর আগের রাতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাসভবনে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বসলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। প্রেসিডেন্ট হিসেবে প্রথমবার ভারতে আসা বাইডেন দিল্লিতে পা রেখেছেন শুক্রবার সন্ধ্যায়। তার কিছুক্ষণ পরেই মোদির সঙ্গে বৈঠক। যার শেষে মোদি জানিয়েছেন, “অত্যন্ত গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে। এমন বহু বিষয় নিয়ে কথা বলা সম্ভব হয়েছে, যার দরুণ দু’দেশের অর্থনীতি এবং মানুষের মধ্যে সংযোগ বাড়বে। বিশ্বের কল্যাণের জন্য আমাদের দু’দেশের মধ্যে বন্ধুত্ব বড় ভূমিকা পালন করে চলবে।”
ভারতের উদ্দেশে রওনা দেওয়ার আগে বাইডেনও বলেন, “যতবার আমরা জি২০-তে বসি, আমাদের আরও ভাল হয়।”
বিদেশ মন্ত্রক সূত্রের খবর, জেট ইঞ্জিন, ঘাতক ড্রোন কেনা সংক্রান্ত চুক্তি, ৬জি-র মতো উচ্চস্তরের প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতার মতো বিষয়গুলি নিয়ে কথা হয়েছে দুই নেতার। বৈঠকের পরে ভারত-আমেরিকা যৌথ বিবৃতি প্রকাশিত হয়েছে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সেখানে বলা হয়েছে, “দুই দেশের নেতারা গণতন্ত্র, মানবাধিকার, স্বাধীনতা, বহুত্ববাদ, সবাইকে সঙ্গে নিয়ে চলা, সব নাগরিকের সমান অধিকারের মতো বিষয়গুলিতে জোর দিয়েছেন। তাঁদের মতে, দেশের সাফল্যের জন্য এগুলি জরুরি এবং ভারত-আমেরিকা সম্পর্ক পোক্ত করার জন্যও প্রয়োজনীয়।”
কূটনৈতিক মহলের মতে, বহুত্ববাদ অথবা মানবাধিকারের মতো বিষয়গুলি নিয়ে মোদি সরকারের দিকে প্রায়শই আঙুল তোলে পশ্চিমি দুনিয়া। প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক আমেরিকা সফরে মোদিকে বিপুল অভ্যর্থনা যেমন দেওয়া হয়েছিল, তেমনই এই বিষয়গুলি নিয়ে সমালোচনার স্বরও শোনা গিয়েছিল সে দেশের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার কণ্ঠে।
আজ জি২০ শুরুর আগের দিন বিষয়গুলিকে যৌথ বিবৃতিতে দাগিয়ে দেওয়া তাই যথেষ্ট অর্থবহ বলেই মনে করা হচ্ছে।
আধুনিকতম প্রযুক্তি, মহাকাশ এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর পাশাপাশি যৌথ বিবৃতিতে উঠে এসেছে অসামরিক পরমাণু ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রসঙ্গও। বলা হচ্ছে, ভারত-আমেরিকা পরমাণু সহযোগিতাকে আরও প্রসারিত করা নিয়ে কথা হয়েছে দুই নেতার মধ্যে। পরবর্তী ধাপে ‘স্মল মডিউলার’ পরমাণু চুল্লি বানাতে সমন্বয়ের কথাও উঠেছে। নিউক্লিয়ার সাপ্লায়ার্স গ্রুপ বা এনএসজি-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তি হোক, এমনও জানিয়েছে আমেরিকা।
এর পাশাপাশি, বাইডেন ভারতের চন্দ্রযানের সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন মোদিকে। ভারতের জি২০ সভাপতিত্বের প্রশংসা করে বলেছেন, এই মঞ্চ থেকে গুরুত্বপূর্ণ ফলাফল পাওয়া সম্ভব। উন্মুক্ত, উদার সবাইকে নিয়ে চলা সমৃদ্ধ ভারত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে তাঁর অভিমত। যৌথ বিবৃতিতে তুলে ধরা হয়েছে কোয়াড বা চতুর্দেশীয় অক্ষের কথাও। সূত্র- আনন্দবাজার।
খুলনা গেজেট/এনএম