খুলনা, বাংলাদেশ | ১৫ বৈশাখ, ১৪৩১ | ২৮ এপ্রিল, ২০২৪

Breaking News

  ঢাকা, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, খুলনা ও রাজশাহী জেলার সকল মাধ্যমিক স্কুল, কলেজ, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সোমবার বন্ধ থাকবে
  যশোরে গরমে অসুস্থ হয়ে স্কুলশিক্ষকের মৃত্যু
  বান্দরবানের রুমা থানচি সীমান্তবর্তী এলাকায় দু’টি মরদেহ উদ্ধার
  দেশে আবারও ৭২ ঘন্টার হিট অ্যালার্ট জারি : আবহাওয়া অধিদপ্তর
  দুই আইনজীবির আদালত অবমাননার শুনানি পিছিয়ে ৩০ জুন : আপিল বিভাগ

আখেরি চাহার শোম্বার তাৎপর্য

কামাল মোস্তফা

মানবতার মহান শিক্ষক বিশ্বনবী হযরত মুহান্মদ (সাঃ) কে মহান আল্লাহ তায়ালা মানবজাতির ক্লান্তিলগ্নে পৃথিবীবাসীর জন্য রহমতস্বরুপ প্রেরণ করেছেন। তিনি শুধু মুসলিম উম্মাহর জন্য নয় বরং গোটা মানবজাতির জন্যই আদর্শ। মহান আল্লাহ কুরআনুল কারিমে ইরশাদ করেন, “নিশ্চই মুহাম্মদ (সাঃ) এর মাঝে রয়েছে উত্তম আদর্শ।”( সূরা আহযাব-২১)

তেষট্টি বছরের জীবন পরিক্রমায় তিনি মানব জাতিকে শুধু দিয়েই গেছেন, নেননি কিছুই। মাক্কী জীবন থেকে শুরু করে মাদানী জীবনের প্রতিটি স্তরে অতিক্রম করতে হয়েছে অসংখ্য ঘাত প্রতিঘাত। কুরাঈশদের শত নির্যাতন সহ্য করেও সত্য প্রচারে থেকেছেন অবিচল। শীআবে আবু তালিবে তিন বছর জেল খেটেছেন, তায়েফ ও ওহুদের ময়দানে রক্ত ঝরিয়েছেন, তবুও মানুষের কল্যাণে কাজ করে গেছেন জীবনের শেষ মুহুত্ব পর্যন্ত। হায়াতে জিন্দেগীর শেষের দিনগুলোতে অর্থাৎ ২৩ হিজরির শুরুতে মহানবী (সাঃ) গুরতর অসুস্থ হয়ে পড়েন। ক্রমেই তার শারিরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। তিনি এতটাই অসুস্থ হয়ে পড়েন যে, নামাজের ইমমাতি পর্যন্ত করতে পারছিলেন না। ২৮ সফর বুধবার মহানবী সুস্থ হয়ে ওঠেন। দিনটি ছিল সফর মাসের শেষ বুধবার। বলা হয় এ দিনই শেষবারের মতো গোসল করেন রাসূল (সাঃ)। শেষবারের মত নামাজে ইমামতি করেন এই দিন। যদিও তারিখের ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। কেই কেই বুধবার নয় বৃহস্পতিবার অসুস্থ হওয়ার কথা বলেছেন।এ ঘটনাকে কেন্দ্র করেই পালিত হয় আখেরি চাহার শোম্বা।

আখেরি চাহার শোম্বা মূলত ফার্সি পরিভাষা। ফার্সি শব্দ আখেরি অর্থ শেষ। চাহার অর্থ সফর মাস এবং শোম্বা অর্থ বুধবার। অর্থাৎ সফর মাসের শেষ বুধবারে মোহাম্মদ (সা.)-এর সাময়িক সুস্থতাকে স্মরণ করে মুসলমানরা যে ইবাদত করেন, তাই আখেরি চাহার শোম্বা। পৃথিবীর সব মুসলিম যথাযোগ্য ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যে এই দিনটি স্মরণ না করলেও বাংলাদেশসহ ভারত উপমহাদেশের মুসলিমরা এই দিন বিশেষভাবে পালন করেন।
বিভিন্ন সিরাত গ্রন্থ বা কিতাবে এসেছে, নবীজির (সাঃ) সুস্থতায় খুশি হয়ে আবু বকর (রাঃ) পাঁচ হাজার, ওমর (রাঃ) সাত হাজার, আলী (রাঃ) তিন হাজার দেরহাম এবং আবদুর রহমান বিন আওফ (রাঃ) একশ উট আল্লাহর ওয়াস্তে দান করেন।

নবীজির সুস্থতায় আনন্দিত হয়ে সাহাবীদের অকাতরে দান-সদকা এবং নফল ইবাদতের ধারা সে থেকে আজ পর্যন্ত নবীপ্রেমিক সুফিরা জারি রেখেছেন। তাই নবীজির সুস্থতার দিনে দান-খয়রাত এবং নফল ইবাদত এবং শুকরিয়া দিবস হিসেবে উদযাপন করে থাকেন।

যদিও রাসুল (সাঃ) জীবনের প্রতিটি অনুসঙ্গই আমাদের ইহকালিন শান্তি ও পরকালিন মুক্তির জন্য অনুকরণীয়। নির্দিষ্ট কোন দিবস বা সময়ের ভিতরই সীমাবদ্ধ নয়। মানবতার মুক্তির জন্য জীবনের প্রতিটি স্তরে তাঁকে অনুকরণ অনুসরণ করা মুসলিম তথা মানব জাতির জন্য আবশ্যকীয়।

খুলনা গেজেট/কেএম




খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!